কুমিল্লায় কথা–কাটাকাটি থেকে অটোরিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যা, মহাসড়ক অবরোধ
Published: 28th, February 2025 GMT
কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার গ্যাস নিতে যাওয়ার সময় যানবাহনে ধাক্কা লাগা নিয়ে কথা–কাটাকাটির জেরে এক অটোরিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার দুপুরে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের জেলার লালমাই উপজেলার পূর্ব পেরুল এলাকার এমআর সিএনজি ফিলিং স্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ওমর ফারুক মজুমদার (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার আদ্রা ইউনিয়নের লুধুয়া গ্রামের আবদুল বারেক মজুমদারের ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে শুক্রবার বিকেলে নাঙ্গলকোটের লুধুয়া এলাকায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন নিহতের স্বজন ও স্থানীয় অটোরিকশাচালকেরা।
ওমর ফারুকের খালাতো ভাই আবদুল বাকের মজুমদার বলেন, শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে লাকসাম বাইপাস এলাকা থেকে অটোরিকশার গ্যাস নেওয়ার জন্য ওমর ফারুক ওই ফিলিং স্টেশনে যাচ্ছিলেন। ফিলিং স্টেশন থেকে আনুমানিক ৫০ গজ দূরত্বে মুদাফফরগঞ্জ সড়কের মাথা এলাকায় ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশার সঙ্গে তাঁর অটোরিকশার সামান্য ধাক্কা লাগে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক ক্ষিপ্ত হয়ে গ্যাস নেওয়ার সময় ওমর ফারুককে আটকে রাখেন। এ সময় তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে অটোচালক মুঠোফোনে লোকজন ডেকে এনে ওমর ফারুককে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। ইট দিয়েও আঘাত করা হয়।
পরে স্থানীয় লোকজন ফারুককে উদ্ধার করে প্রথমে লাকসামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি দেখে দ্রুত তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানে হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
শুক্রবার রাত ৯টার দিকে লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
এদিকে শুক্রবার বিকেলে ওমর ফারুকের মরদেহ নিজ এলাকায় নিয়ে আসার পর স্বজন, স্থানীয় এলাকাবাসী ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকেরা কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লুধুয়া এলাকা অবরোধ করেন। এ সময় তাঁরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে প্রায় এক ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে সড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে লাকসাম ক্রসিং (লালমাই) হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন বলেন, আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধের কারণে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হলে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে লালমাই থানা–পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ওমর ফ র ক ক অবর ধ এল ক য় এ ঘটন সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি