বাংলা ভাষায় চিকিৎসাবিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করেছিলেন শুভাগত চৌধুরী
Published: 28th, February 2025 GMT
বাংলা ভাষায় চিকিৎসাবিজ্ঞানকে যাঁরা জনপ্রিয় করেছেন, তাঁদের অন্যতম ছিলেন অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী। তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞান নিয়ে বাংলায় নিয়মিত লিখতেন। বাংলা ভাষায় চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষা জানার জন্য চিকিৎসকদের অনেকে তাঁর কাছে ছুটে যেতেন।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরীর এক স্মরণসভায় চিকিৎসক এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা এ কথাগুলো বলেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মিল্টন হলে এই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
শুভাগত চৌধুরীর ভাই ও চিকিৎসক অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্যের জটিল বিষয়গুলোকে মানুষের মধ্যে নিয়ে আসা একটা বিরাট শিল্প। সেই কাজ জোর দিয়ে করেছিলেন শুভাগত চৌধুরী। স্বাস্থ্য নিয়ে বাংলায় তাঁর লেখাগুলো একটা ভিন্নতা এনে দিয়েছিল।
এরপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম’ গানটি গেয়ে ভাইয়ের স্মৃতিচারণা শেষ করেন অরূপ রতন চৌধুরী। গানের সময় শুভাগত চৌধুরীর স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।
স্মরণসভায় সরকারের নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য হালিদা হানুম আখতার বলেন, শুভাগত চৌধুরীর সর্বদা হাসিমুখ থাকত। তিনি সবার সঙ্গে একটা ভালোবাসার জায়গা থেকে কথা বলতেন।
হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান লেলিন চৌধুরী বলেন, চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ে বাংলা ভাষায় যাঁরা লেখালেখি শুরু করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শুভাগত চৌধুরী। আমরা বাংলা ভাষায় চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষা জানার জন্য, নতুন শব্দ উদ্ভাবনের জন্য শুভাগতের কাছে যেতাম।
স্মরণসভায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে হারমনি ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা অমিতাভ ভট্টাচার্য বলেন, বাংলা ভাষায় স্বাস্থ্য বিষয়ে দুই বাংলায় প্রথম দিকে যাঁরা নিয়মিত লেখালেখি করতেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শুভাগত। উনি একজন দার্শনিকের প্রজ্ঞা নিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানকে দেখতেন।
শুভাগত চৌধুরী জটিল বিষয়কে সহজ, সরল ও প্রাণবন্ত ভাষায় উপস্থাপন করতে পারতেন বলে উল্লেখ করেন ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক মনীন্দ্র নাথ রায়।
শুভাগত চৌধুরীর স্ত্রী কামনা চৌধুরী বলেন, উনি চোখের অন্তরালে চলে গেছেন; কিন্তু আমার এবং অসংখ্য মানুষের হৃদয়ে আছেন ও থাকবেন।
মেয়ে সুস্মিতা চৌধুরী বলেন, আমার বাবা সত্যিকারভাবেই জীবনকে উদ্যাপন করতে শিখিয়েছেন। ভালোবাসাপূর্ণ হৃদয় নিয়ে বাবা কর্মজীবন ও সাংসারিক জীবনের জটিল বিষয় সহজে সমাধান করতেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জনস্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ আবু জামিল ফয়সাল। তিনি বলেন, ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পরও শুভাগত চৌধুরী সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। তারপর আকস্মিকভাবে তিনি পরপারে পাড়ি জমালেন। তিনি মানুষের জন্য কাজ করেছেন। পদ-পদবির চিন্তা করতেন না। শুভাগত বলতেন, তিনি যে কাজ করছেন, পদ-পদবি নিলে তা করতে পারবেন না।
স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক মাহফুজা খানম, শুভাগত চৌধুরীর সহকর্মী চিকিৎসক মারুফি খানম, অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ, সেন্টার ফর ক্যানসার কেয়ার ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহান ই গুলশান প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ভ গত চ ধ র র স ন শ ভ গত চ ধ র ছ ল ন শ ভ গত স মরণসভ য় র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটারজুটে যানজট
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমশার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান উল্টে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এ যানজট দেখা দেয়।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ফেনী থেকে রেকার এনে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ।
সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।
ঢাকাগামী রয়েল পরিবহনের চালক রমিজ উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করে বুড়িচংয়ের নিমশার বাজারে যানজটে এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। ৫ মিনিট গাড়ি চললে ২০ মিনিট বসে থাকতে হয়। এভাবে ১০টা ৪০ মিনিটে চান্দিনায় পৌঁছেছি। এ সময়ে ঢাকার কাছাকাছি থাকার কথা ছিল।
নিমশার বাজারে আটকে থাকা প্রাইভেট কারের যাত্রী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে যানজট অথচ সড়কে হাইওয়ে পুলিশ দেখছি না।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন বলেন, মহাসড়কের নূরীতলা এলাকায় উল্টে কাভার্ড ভ্যানটি আড়াআড়িভাবে পড়ে ছিল। পরে ঢাকামুখী লেনের বেশ কিছু গাড়ি উল্টো পথে ঢোকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফেনী থেকে ক্রেন এনে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণেই যানজট দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।