রো কে য়া খা তু ন রু বী
আমি
ঘাস নিয়েছে শিশির কণা ফুল নিয়েছে জল
রোদ দিয়েছে সোনালি ভোর মুক্তো টলোমল।
আকাশখানি মায়ের মাথায় আঁচলঘেরা মুখ
তাকেই আমি আপন ভাবি তাকেই বলি সুখ।
সুখের তো নেই কূলকিনারা অথই জলের ঢেউ
সবুজ পাতায় দুপুর ঘুমায় তাকিয়ে দেখে কেউ?
আমার দেখা বিকেল শেষে সন্ধ্যা তারার বুটি
ঝিঁঝিঁপোকা জোনাক থোকা মিলে মিশে জুটি।
কোথায় জোনাক কোথায় ঝিঁঝিঁ খোঁজেই দিশেহারা
মন ছুটে কি তেপান্তরে নূপুর বাজায় কারা?
কিসের নূপুর স্বপ্নপুকুর দিঘির জলের গান
সে জলেতে উঠলো ভেসে আমার ছবিখান।
ফা রু ক ন ও য়া জ
বইয়ের পাতায় আলো
শহরের এই শকটশব্দ এত মেকি হইচই
এত চিৎকারে নিরিবিলি বসে পড়তে পারি না বই
ভুলভাল এই জীবনের থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে
নগর ছাড়িয়ে বহু বহু দূরে আমাকে হয়েছে যেতে
আমি হেঁটে গেছি ধুলোমাখা পথে
গেঁয়ো নদীটার ধারে
বাঁধা নাও খুলে হাল বেয়ে গেছি
পার হয়ে ওই পারে।
গাঙের ওপারে থিরনিরিবিলি নির্জন বনবীথি
যেখানে গড়েছে বিহগে বিহগে অনাবিল সম্প্রীতি
কাঠবেড়ালিরা নির্ভাবনায় করে ছুটোছুটি খেলা
ঝিনিঝিনি সুরে ঝিঁঝিপোকাগুলো ডেকে যায় সারাবেলা
দূরবাঁশিয়ার সুরে সারাবন মাঝে মাঝে ওঠে দুলে
মহুয়ার তলে বসে একা আমি পড়ে যাই বই খুলে
মৃদু বাতাসের ছোঁয়া পেয়ে পেয়ে
পৃষ্ঠারা ওঠে নেচে
মনে হয় এই বই পড়ি বলে
আমি আছি আজো বেঁচে।
বইয়ে লেখা থাকে শান্তির কথা, জীবনের মধুবাণী
বইয়ে পড়ে বুঝি পৃথিবীটা মায়া, জীবন একটুখানি
ছোট্টো জীবনও বড়ো হয়ে যায় মানুষের ভালো কাজে
সেসব সত্য খুঁজে খুঁজে পাই বইয়ের প্রতিটি ভাঁজে।
দয়া-মায়া, স্নেহ, মানবিকতার শাশ্বত চিরকথা
বই ছাড়া আর কার কাছে পাই এমন নির্ভরতা।
শহরে নিত্য স্বার্থচিত্ত মেতে ওঠে হইচইয়ে
এসব বৃত্তি নিরোধে উপায়- আত্মমগ্ন বইয়ে।
বই সাথে নিয়ে চলে যাও দূরে
নিরিবিলি প্রান্তরে-
বইয়ের পাতায় খুঁজে নাও আলো
ম্লেচ্ছতা যাক সরে।
আ হ মে দ সা ব্বি র
বাঘ এসেছে
বইমেলাতে বাঘ এসেছে
বিরাট বড় বাঘ!
বাঘটা ভীষণ শান্ত স্বভাব
একটুও নেই রাগ।
বাঘ দেখতে দুপুর থেকে
জটলা মেলার গেটে
নাদুস নুদুস বাঘটা বেড়ায়
দুই পা দিয়ে হেঁটে।
বাঘের কাঁধে পাটের ঝোলা
চশমা গোঁজা কানে
বাঘ জানাল- এসেছে সে
নতুন বইয়ের টানে।
মজার পড়া, গল্প, ছড়া
কিনতে সে চায় সবই
বাচ্চারা সব সেলফি তোলে
বাঘটা নাকি কবি।
কবি বাঘের সাক্ষাৎকার
টিভিতে ফেসবুকে
বাঘ বলল- ‘বইয়ের হাসি
ফুটুক সবার মুখে।’
‘এবার মেলায় টুকটুকি নাই
নাই তো শিকু হালুম
তাই তোমাদের বন্ধু হতে
নিজেই চলে আলুম!’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বইয় র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা
রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।
এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।
রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।
এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।
সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।
এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।
রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫