Samakal:
2025-07-31@22:48:14 GMT

অবসান হচ্ছে এক যুগের যন্ত্রণা

Published: 1st, March 2025 GMT

অবসান হচ্ছে এক যুগের যন্ত্রণা

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ডুমরিয়া ইউনিয়নবাসীর এক যুগের দুর্ভোগ অবসান হতে চলেছে। একটি সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় তাদের এ দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সেই সংযোগ সড়ক নির্মাণ শুরু হয়েছে।
নিম্ন জলাভূমি ও বিলবেষ্টিত ইউনিয়ন ডুমরিয়া। পশ্চাদপদ এ ইউনিয়নে সড়ক সংযোগ ছিল না। উপজেলা ও জেলা সদরের সঙ্গে ডুমরিয়া ইউনিয়নের যোগাযোগ ত্বরান্বিত করতে সড়ক সংযোগের আওতায় আনার পরিকল্পনা করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ডুমরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ অফিস থেকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা সদর সড়ক নির্মাণের আগেই শৈলদহ নদীর ডুমরিয়া বাজার পয়েন্টে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৩ সালে ১৩০ মিটার সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুর দুই মাথায় মাটি ফেলে মানুষের চলাচলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। এ সেতু দিয়ে মানুষ চলাচল করলেও পণ্য পরিবহন ও যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এর মধ্যে ডুমরিয়া ইউনিয়নে সড়ক সংযোগ গড়ে ওঠে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সড়ক সংযোগের সঙ্গে সেতুকে সংযুক্ত করতে ২০২৩ সালে প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে  ৩০০ মিটার আরসিসি স্লাব ভায়াডাক্ট নির্মাণ শুরু করে। ইতোমধ্যে ভায়াডাক্টের মূল কাজ শেষ হয়েছে। সাটারিংয়ের কাজ গত অক্টোবরে বন্ধ হয়ে যায়। এলাকাবাসী দ্রুত এ কাজ সম্পন্ন করে সেতুটি পুরোপুরি চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন।
ডুমরিয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাধনা মল্লিক জানায়, সেতুতে উঠতে নামতে তাদের খুব কষ্ট হয়। এ কষ্ট লাঘবের ব্যবস্থা দ্রুত করে দিতে হবে।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী দেবাংশু বিশ্বাস জানায়, সাইকেল ঘাড়ে করে তাকে সেতুতে উঠতে ও নামতে হয়। এ সময় একটু অমনোযোগী হলে ঘটে দুর্ঘটনা। এতে তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। তারা দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চায়।
ডুমরিয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোজ কুমার মণ্ডল বলেন, সেতুটির দু’পারেই রাস্তা হয়েছে। রাস্তার সঙ্গে সেতুর সংযোগ স্থাপনের কাজ শুরু হয় প্রায় ২ বছর আগে। গত অক্টোবরে এ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তিনি দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করে সেতুটি চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানান।
ডুমরিয়া ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সদস্য শ্যামলী গাইন বলেন, সেতু হয়েছে।  এতে তাদের দুর্ভোগের অবসান হয়নি। এ সেতু দিয়ে গ্রামের ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, শ্রমিকসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষ চলাচল করতে পারে। সংযোগ সড়কের অভাবে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এখানে উৎপাদিত ধান, পাট, সবজি, টমেটো, কৃষিপণ্য, খামরের মাছ, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ অন্যান্য পণ্য পরিবহন করা যায় না। এতে পণ্য বাজারজাতকরণ ও ন্যায্যমূল্য পাওয়া থেকে তাদের এলাকার কৃষক ও খামারিরা বঞ্চিত হচ্ছেন। সেতুর সংযোগ সড়ক স্থাপন করে এ সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে হবে।
গোপালগঞ্জ এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী এহসানুল হক বলেন, সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণে জমি অধিগ্রহণ, নকশা ও স্থানীয় আরও কিছু জটিলতার উদ্ভব হয়। তারা স্থানীয় লোকজন ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এসব জটিলতা নিরসন করেছেন। দ্রুতই কাজ শুরু হবে। আগামী জুলাই মাসের মধ্যে সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এরপর এ সেতু দিয়ে মানুষের পাশাপাশি যানবাহন ও পণ্য পরিবহন করা সম্ভব হবে। এতে প্রায় এক যুগের দুর্ভোগ অবসান হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ত র স য গ সড়ক সড়ক ন র ম ণ স য গ সড়ক ন সড়ক স য গ অবস ন

এছাড়াও পড়ুন:

সকালের সবচেয়ে বরকতময় সময় ব্যবহারের ৭ কৌশল

সকাল মানুষের জীবনের একটি মূল্যবান সময়, যা দিনের বাকি অংশের জন্য সুর নির্ধারণ করে। সকাল আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার, শরীর ও মনকে প্রস্তুত করার এবং দিনের লক্ষ্য অর্জনের একটি সুবর্ণ সুযোগ।

সামাজিক মাধ্যম, কাজের চাপ এবং পারিবারিক দায়িত্ব আমাদের অনেক সময় কেড়ে নেয়, তাই সকালকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে আমরা জীবনকে আরও উৎপাদনশীল করতে পারি।

১. আল্লাহর সঙ্গে দিনের শুরু

ফজরের নামাজের ১৫-২০ মিনিট আগে উঠে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া এবং দোয়া করা জীবনকে আমূল বদলে দিতে পারে। এই সময়টি শান্ত ও পবিত্র, যখন আল্লাহর সঙ্গে কোনো বাধা থাকে না।

কে আছে আমাকে ডাকার, আমি সাড়া দেব? কে আছে আমার কাছে চাওয়ার, আমি দান করব? কে আছে ক্ষমা প্রার্থনা করার, আমি ক্ষমা করব?সহিহ বুখারি, হাদিস: ১,১৪৫

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘প্রতি রাতে, যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ বাকি থাকে, তখন আমাদের রব নিকটতম আসমানে নেমে আসেন এবং বলেন, ‘কে আছে আমাকে ডাকার, আমি সাড়া দেব? কে আছে আমার কাছে চাওয়ার, আমি দান করব? কে আছে ক্ষমা প্রার্থনা করার, আমি ক্ষমা করব?”’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১,১৪৫)।

তাহাজ্জুদের সময় আপনার হৃদয়ের কথা আল্লাহর কাছে প্রকাশ করুন। এতে মানসিক শান্তি বাড়বে এবং দিনের জন্য ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। যদি আপনি নতুন হন, সপ্তাহে এক দিন থেকে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে এটি অভ্যাসে পরিণত করুন।

ফজরের আগে অবশিষ্ট সময়ে কোরআন তিলাওয়াত করুন, কারণ কোরআনে বলা হয়েছে, ‘ভোরে কোরআন পড়া (ফেরেশতাদের) দ্বারা প্রত্যক্ষ করা হয়।’ (সুরা ইসরা. আয়াত: ৭৮)।

আরও পড়ুনইশরাকের নামাজ: সকালের আলোয় আল্লাহর নৈকট্য ০৪ জুলাই ২০২৫২. ফজরের পর ঘুম থেকে দূরে থাকুন

ফজরের নামাজের পর ঘুমিয়ে পড়া অনেকের অভ্যাস, কিন্তু এটি সকালের বরকতময় সময় নষ্ট করে। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ আমার উম্মতের জন্য সকালের সময়কে বরকতময় করেছেন।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৬,৪৮১)।

এই সময়ে বড় বড় কাজ সহজে সম্পন্ন করা যায়, কারণ এতে আল্লাহর বিশেষ বরকত রয়েছে।

আল্লাহ আমার উম্মতের জন্য সকালের সময়কে বরকতময় করেছেন। মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৬,৪৮১

ফজরের পর ঘুমের প্রলোভন এড়াতে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। এই সময়ে পড়াশোনা, কোরআন মুখস্থ করা বা কোনো ব্যক্তিগত প্রকল্পে কাজ করা যায়। এটি দিনের বাকি সময়ে অবসরের জন্য সময় বাঁচায় এবং আগামী দিনে আরও তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তৈরি করে।

বিশ্বের সফল ব্যক্তিরাও ভোর চারটা বা পাঁচটায় উঠে কাজ শুরু করার কথা বলেন, যা তাদের সাফল্যের একটি রহস্য।

৩. করণীয় তালিকা তৈরি করুন

একটি করণীয় তালিকা তৈরি করা দিনের পরিকল্পনাকে সুসংগঠিত করে। আমরা প্রায়ই মনে মনে কাজের পরিকল্পনা করি, কিন্তু মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা সীমিত। একটি ডায়েরি বা ফোনের নোট অ্যাপে কাজের তালিকা লিখে রাখলে সময় ও শক্তি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়। সম্পন্ন হওয়া কাজগুলো তালিকা থেকে কেটে দেওয়ার একটা আলাদা আনন্দ আছে।

এই তালিকায় দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যও অন্তর্ভুক্ত করুন। যেমন কোরআনের একটি নির্দিষ্ট অংশ মুখস্থ করা বা একটি নতুন দক্ষতা শেখার পরিকল্পনা। এটি আপনাকে দিনের শুরুতে ফোকাসড রাখবে এবং উৎপাদনশীলতা বাড়াবে।

আরও পড়ুনযে ৪টি পরীক্ষা নবীজি (সা.)–এর জীবনকে দৃঢ়তা দিয়েছে২২ জুলাই ২০২৫বিশ্বের সফল ব্যক্তিরাও ভোর চারটা বা পাঁচটায় উঠে কাজ শুরু করার কথা বলেন, যা তাদের সাফল্যের একটি রহস্য।৪. সকালে স্ক্রিন থেকে দূরে থাকুন

সকালের মূল্যবান সময় সামাজিক মাধ্যমে বা ফোনে অযথা স্ক্রল করে নষ্ট করা উচিত নয়। অনেকে সকালে ফোন হাতে নিয়ে ‘শুধু একটু দেখে নিই’ ভেবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হারিয়ে ফেলেন। এটি মানসিক চাপ বাড়ায় এবং সকালের শান্তি নষ্ট করে।

নিয়ম করুন, সকালের নাশতা বা কিছু কাজ শুরু না করা পর্যন্ত ফোন বা সামাজিক মাধ্যমে যাবেন না। সকালে খবর পড়া এড়িয়ে চলুন। কারণ, এটি নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে পারে। যখন ফোন ব্যবহার করবেন, তখন ইতিবাচক ও প্রেরণাদায়ক কনটেন্ট দেখুন, যা আপনার দিনকে উজ্জ্বল করবে।

৫. শরীরচর্চা করুন

শরীরচর্চার উপকারিতা আমরা সবাই জানি। বিশেষ করে এই সময়ে, যখন অনেকে বাড়ি থেকে কাজ করছেন, শরীরচর্চা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। বাড়িতে কাজ করার ফলে ঘাড়ে ও পিঠে ব্যথা, পেশির সমস্যা বাড়ছে।

সকালে মাত্র ৩০ মিনিট শরীরচর্চা, যেমন যোগ, পাইলেটস, হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং বা ব্রিস্ক ওয়াক, আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াবে এবং মনকে সতেজ করবে।

ইউটিউবে হাজারো ধরনের ব্যায়ামের ভিডিও পাওয়া যায়, যা বাড়িতে সামান্য জায়গায় করা যায়। যদি বাইরে যাওয়ার সুযোগ থাকে, তবে সকালে ৩০ মিনিট হাঁটুন। লক্ষ্য হলো শরীরকে সচল রাখা এবং শক্তি বৃদ্ধি করা।

আরও পড়ুনসুস্থ জীবন যাপনে মহানবী (সা.)-এর ৯ অভ্যাস২৪ জুলাই ২০২৫সকালে মাত্র ৩০ মিনিট শরীরচর্চা, যেমন যোগ, পাইলেটস, হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং বা ব্রিস্ক ওয়াক, আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াবে এবং মনকে সতেজ করবে।৬. পুষ্টিকর নাশতা গ্রহণ

ব্যস্ততার কারণে অনেকে সকালের নাশতা বাদ দেন, কিন্তু গবেষণা বলছে, পুষ্টিকর নাশতা দিনভর মনোযোগ বাড়ায়, অপ্রয়োজনীয় চিনির লোভ কমায় এবং শক্তি জোগায়। নাশতায় উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার, যেমন ওটস বা মাল্টিগ্রেইন রুটি, স্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন অ্যাভোকাডো বা বাদাম, গ্রিক ইয়োগার্ট এবং ফল অন্তর্ভুক্ত করুন।

সময় কম থাকলে একটি স্মুদি তৈরি করুন—পালংশাক, আপেল এবং হিমায়িত কলা ব্লেন্ড করে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর নাশতা তৈরি করা যায়। এটি দিনের শুরুতে সবুজ শাকসবজি গ্রহণের একটি সহজ উপায়।

৭. নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন

বাড়ি থেকে কাজ করার সময় অনেকে ক্যাজুয়াল পোশাকে থাকেন। বরং সকালে সুন্দর পোশাক পরুন, যা আপনার মেজাজ উজ্জ্বল করবে। একটু পছন্দের সুগন্ধি ব্যবহার করলে আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

আল্লাহ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১

নবীজি (সা) বলেছেন, ‘আল্লাহ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১)। নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা শুধু বাহ্যিক নয়, বরং এটি আপনার মানসিক প্রস্তুতি ও দিনের জন্য উৎসাহ বাড়ায়।

সকাল আমাদের দিনের ভিত্তি। ইসলাম আমাদের শেখায় যে সকাল আল্লাহর বরকত নিয়ে আসে। তাহাজ্জুদ, ফজরের পর জাগ্রত থাকা, করণীয় তালিকা তৈরি, স্ক্রিন থেকে দূরে থাকা, শরীরচর্চা, পুষ্টিকর নাশতা এবং নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন—এই সাতটি অভ্যাস আমাদের সকালকে উৎপাদনশীল করবে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

সূত্র: দ্য মুসলিম ভাইব ডট কম

আরও পড়ুনরহমতের দুয়ারে হাজিরা১৫ জুন ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ