কুড়িগ্রামের রাজীবপুরে ব্রহ্মপুত্রে অবৈধ ড্রেজার ও ভেকু দিয়ে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। এতে ভাঙনের ঝুঁকিতে নদী তীরের ঘরবাড়ি, কৃষিজমিসহ নানা স্থাপনা। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিন দেখা গেছে, কোদালকাটি ইউনিয়নের পাখিউড়া এলাকার ব্রহ্মপুত্র শাখা নদ থেকে ড্রেজার ও ভেকু বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র। এ কারণে হুমকিতে রয়েছে নদীর তীরবর্তী ঘরবাড়ি-ফসলি জমি ও বিভিন্ন স্থাপনা। এসব বালু ট্রাক্টর (কাঁকড়া গাড়ি) দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। এতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বালু উত্তোলন করা ব্যক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না কেউ।
নদী তীরের বাসিন্দারা জানান, যেভাবে ড্রেজার ও ভেকু দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন বালু খেকোরা; এতে বন্যার সময় নদী ভাঙনের মুখে পড়বেন তারা। বিলীন হয়ে যাবে ঘরবাড়ি, জমিজমা ও গাছপালা। পরে স্ত্রী-সন্তান, গরু, ছাগল নিয়ে অন্যের ভিটায় ঠাঁই নিতে হবে তাদের।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে পাখিউড়া এলাকা বাজারের এক ব্যক্তি বলেন, অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার ও ভেকু দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ট্রাক্টর দিয়ে পরিবহন করা হচ্ছে। এতে রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া কোমলমতি শিক্ষার্থী ও পথযাত্রীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। ধুলাবালু লেগে সর্দি-কাশির মতো রোগ হচ্ছে। আবার কাঁকড়া গাড়ি দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনাও ঘটছে।
বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত শফি আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমার একটা ভেকু চলমান রয়েছে। ট্রাক্টরের মাধ্যমে রৌমারীর সায়দাবাদ এলাকার ইটভাটায় মাটি দেওয়া হচ্ছে।’
ড্রেজার মালিক এমদাদুল হকের দাবি, তাঁর কাছ থেকে বাড়ির ভিটা উঁচু করার জন্য মাটি নিচ্ছেন অনেকে। এতে তো ক্ষতি হচ্ছে না, বরং উন্নয়ন হচ্ছে।
রাজীবপুরের ইউএনও তানভীর আহমেদের ভাষ্য, নদী থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানেন না তিনি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫