শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি রিংশাইন টেক্সটাইলের ছয়টি প্লটের বরাদ্দ বাতিলের বিষয়টি সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ। ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় (ডিইপিজেড) অবস্থিত কোম্পানিটির প্লটের বিপরীতে পাওনা পরিশোধ না করায় সম্প্রতি ছয়টি প্লটের বরাদ্দ বাতিল করে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বা বেপজা।

বেপজার এই প্লট বরাদ্দ বাতিলের বিষয়ে জানতে চেয়ে সম্প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ কোম্পানিটির কাছে চিঠি দেয়। সেই চিঠির জবাবে কোম্পানিটি প্লটের বরাদ্দ বাতিলের সত্যতা স্বীকার করেছে। ডিএসইর চিঠির জবাবে কোম্পানিটি জানায়, বিষয়টি সমাধানে এরই মধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাই এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কোম্পানিটি। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, বেপজার বকেয়া পাওনা বাবদ ১০ লাখ মার্কিন ডলার কোম্পানির আইপিও (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) তহবিল থেকে পরিশোধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএমে শেয়ারধারীরা এ বিষয়ে সম্মতিও জ্ঞাপন করেছেন। এখন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির অনুমোদন পেলে এই অর্থ পরিশোধ করা হবে।

এদিকে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) রিংশাইনের লোকসান আরও বেড়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির লোকসান বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৩৫ কোটি টাকা। তাতে শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়ায় ৭১ পয়সায়। আগের অর্থবছর অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে কোম্পানিটির লোকসান ছিল সাড়ে ২৭ কোটি টাকা বা শেয়ারপ্রতি ৫৫ পয়সা।

চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে লোকসান বেড়ে যাওয়ায় অর্ধবার্ষিক শেষেও কোম্পানিটির লোকসান বেড়েছে। গত জুলাই-ডিসেম্বর শেষে রিংশাইনের লোকসান বেড়ে দাঁড়ায় ৭৫ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৭০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

২০১৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় রিংশাইন টেক্সটাইল। ওই সময় প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ১৫০ কোটি টাকা তুলেছিল। তবে তালিকাভুক্তির বছর না ঘুরতেই ২০২০ সালে রিংশাইনে সংকট দেখা দেয়। এ কারণে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে উৎপাদন বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ। এর পর থেকে কোম্পানিটির দেনা ও লোকসান কেবল বাড়ছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ

‎পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

আরো পড়ুন:

সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা

পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা

‎গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‎বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

‎সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি। 

এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

‎ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
  • সেপ্টেম্বরের ১৬ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ২০ হাজার কোটি টাকা
  • বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিনে ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ডলার কিনল কেন