সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মাইকে ‘ডাকাত’ ঘোষণা দিয়ে গণপিটুনিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। নিহতরা হলেন- নেজাম উদ্দিন (৪৬) ও আবু ছালেক (৩৮)।

আহতরা হলেন- ওবায়দুল হক (২২), মামুনুর রশিদ (৪৫), নাসির উদ্দিন (৩৮) ও আব্বাস উদ্দিন (৩৮)। সোমবার দিবাগত রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, আটটি গুলির খোসা ও একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা জব্দ করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত দুইজন সাতকানিয়া থানার কাঞ্চনা ইউনিয়নের বাসিন্দা। এদিকে ঘটনার পর রাতে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার সকালে তাকে একাধিকার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সাতকানিয়া থানার ওসি জাহেদুল ইসলাম বলেন, এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা গ্রামে দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও চার–পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

মঙ্গলবার সকালে ওসি বলেন, ‘ঘটনায় হতাহতদের রাজনৈতিক পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে যারা ঘটনাস্থলে আসছিলেন, তাদের দুইজনই নিহত হয়েছেন। যারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তারা স্থানীয় এলাকার। কী কারণে এ ঘটনা, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ এ নিয়ে তদন্ত করছে বলে জানান ওসি জাহেদুল।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় একদল যুবক ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় গিয়ে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করতে থাকেন। এ সময় স্থানীয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা করা হয় ডাকাত পড়েছে। পরে গ্রামের লোকজন জড়ো হয়ে অটোরিকশায় আসা দুই যুবককে আটক করে পিটুনি দেন। এতে ঘটনাস্থলে দুই যুবক নিহত হন। পরে এক মরদেহের পাশ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

তবে এ ঘটনায় সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নজরুল ইসলাম মানিককে দায়ী করছেন স্থানীয় কয়েকজন। স্থানীয় বাসিন্দা কামাল উদ্দিন জানান, নজরুল ইসলাম মানিক এলাকায় অবস্থান করছে এমন সংবাদ পেয়ে কিছু লোক ওই এলাকায় যায়। এ সময় নজরুল ইসলাম মানিকের লোকজন এলাকায় মসজিদের মাইকে এমন ঘোষণা দিয়ে এলাকার লোকজনকে উত্তেজিত করে তাদের ওপর হামলা শুরু করে। এক পর্যায়ে নেজাম উদ্দিন ও আবু ছালেককে আটকে পিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজনের মৃত্যু হয়

.

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম হয় ছ ন এল ক য এ ঘটন ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ