উৎসবের কেনাকাটায় নগদ টাকার ঝামেলা এড়িয়ে কার্ড ব্যবহার এখন অনেকের কাছেই পছন্দের শীর্ষে। কারণ, কার্ডে লেনদেন বেশ সহজ। বিশেষ করে ব্যাংকগুলোর নানা অফার, ক্যাশব্যাক ও কিস্তির সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা ক্যাশলেস লেনদেনের দিকেই বেশি ঝুঁকছেন। ব্যাংকগুলোও তাদের গ্রাহকদের কেনাকাটাকে আরও সহজ করতে নানা রকম সুযোগ-সুবিধা ও ছাড় দেয়। এসব অফারের মধ্যে রয়েছে বিশেষ ডিসকাউন্ট, ক্যাশব্যাক, কিস্তির সুবিধা, রিওয়ার্ড পয়েন্ট ইত্যাদি।

ঈদকে সামনে রেখে ইস্টার্ণ ব্যাংক পিএলসি (ইবিএল) তাদের কার্ড ব্যবহারকারীদের দিচ্ছে আকর্ষণীয় সব ডিসকাউন্ট, ক্যাশব্যাক ও ইএমআইয়ের সুবিধা। ইবিএল গ্রাহকদের জন্য রয়েছে সিলেক্টেড লাইফস্টাইল ও জুতার ব্র্যান্ডে বিশেষ ছাড়, সিলেক্টেড গ্রোসারি মার্চেন্টে ক্যাশব্যাক অফার, উইকেন্ড গ্রোসারি শপিংয়ে রিওয়ার্ড পয়েন্ট এবং রমজানে নির্দিষ্ট হোটেল চেইনের ‘বাই ওয়ান গেট ওয়ান’ অফার। এ ছাড়া নির্দিষ্ট ইএমআই মার্চেন্টদের মাধ্যমে কেনাকাটায় থাকছে ক্যাশব্যাকের সুবিধা, অনলাইন স্টোর, রেস্টুরেন্ট, ট্রাভেল এজেন্সি ও হোটেল বুকিংয়ে বিশেষ ছাড়। বিস্তারিত ওয়েবসাইটে।

রমজান উপলক্ষে সাউথইস্ট ব্যাংক তাদের ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য দিয়েছে বুফে ইফতার ও ডিনারে ‘একটি কিনলে তিনটি ফ্রি’, ‘একটি কিনলে দুটি ফ্রি’ ও ‘একটি কিনলে একটি ফ্রি’ অফার। এ ছাড়া তাদের কার্ড ব্যবহার করে সাতটি জনপ্রিয় লাইফস্টাইল ব্র্যান্ডের দোকানে ও আটটি চেইন সুপারশপে পাওয়া যাবে বিশেষ ক্যাশব্যাকের সুবিধা, ১৪ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত সব ধরনের কেনাকাটার ওপর ১০ গুণ বেশি রিওয়ার্ড পয়েন্ট এবং বিভিন্ন লাইফস্টাইল শপ ও রেস্টুরেন্টে বিশেষ ডিসকাউন্টসহ আকর্ষণীয় সব সুবিধা। বিস্তারিত জানা যাবে ওয়েবসাইটে।

ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি)-এর কার্ড ব্যবহার করে নির্দিষ্ট রেস্টুরেন্ট, ই-কমার্স ও রিটেইল স্টোরে কেনাকাটায় মিলবে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাকের সুবিধা ও ছাড়। বিস্তারিত জানা যাবে ওয়েবসাইটে।

প্রাইম ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করে এই ঈদে বিভিন্ন লাইফস্টাইল ব্র্যান্ডে মিলবে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। ডাইনিংয়ে রয়েছে ১৫ শতাংশ ছাড়সহ ‘বাই ওয়ান গেট থ্রি’ অফার। হেলথ ও বিউটিতে পাবেন ২০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। এ ছাড়া ঈদের টিকিট বুকিংয়ে থাকছে ১০ শতাংশ ছাড় ও ক্যাশব্যাকের সুবিধা। বিস্তারিত জানা যাবে ওয়েবসাইটে।

ঈদ উপলক্ষে ঢাকা ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করে মিলবে বিভিন্ন লাইফস্টাইল, ডাইনিং, ইএমআই ও গ্রোসারি মার্চেন্টে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ছাড়। এ ছাড়া ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য রয়েছে এক হাজার টাকা ক্যাশব্যাকের সুবিধা। বিস্তারিত জানা যাবে ওয়েবসাইটে।

এমটিবি ক্রেডিট কার্ড একটি সম্পূর্ণ পেমেন্ট সমাধান হিসেবে বিবেচিত। এই কার্ডে অন্যান্য ব্যাংকের মতো বাই ওয়ান গেট ওয়ান অফার, ডিসকাউন্ট অফার ছাড়া এয়ারপোর্ট পিক অ্যান্ড ড্রপের সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া রিওয়ার্ড পয়েন্টের মূল্য অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় বেশি, যার জন্য মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিস্তারিত জানা যাবে ওয়েবসাইটে।

ক্যাশলেস লেনদেনের মাধ্যমে ক্রেতারা নগদ টাকা ব্যবহারের ঝামেলা এড়িয়ে সহজে কেনাকাটা করতে পারছেন। বিভিন্ন ব্যাংকের পক্ষ থেকে এসএমএস ও ই-মেইলের মাধ্যমে গ্রাহকদের অফারের তথ্য জানানো হয়। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোর ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন দোকানের ক্যাশ কাউন্টারে অফার-সংক্রান্ত প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যা গ্রাহকদের আরও বেশি আকৃষ্ট করছে। শুধু ছাড় ও অফারই নয়, লেনদেনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তাও এখন গ্রাহকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

ব্যাংকগুলো কার্ডনির্ভর লেনদেনকে নিরাপদ করতে আধুনিক ডিজিটাল সেবা চালু করেছে, যার মাধ্যমে গ্রাহকেরা নিজেদের কার্ড নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।

সংশ্লিষ্টদের মতে, ক্যাশলেস লেনদেনের এই প্রবণতা আগামী দিনের বাংলাদেশকে আরও আধুনিকতার পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ক র ড ব যবহ র কর গ র হকদ র ল নদ ন র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

রাতারাতি তারকা হলে দীর্ঘ সময় দর্শকের মনে থাকা কঠিন: রিচি

রিচি সোলায়মান। ছোটপর্দার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী এখন অনেকটাই আড়ালে। আজ বিশ্ব বাবা দিবস উপলক্ষে প্রকাশ হয়েছে বিশেষ গানচিত্র ‘বাবা শুনতে কী পাও’। এতে অভিনয় করেছেন রিচি সোলায়মান। এই গানচিত্র এবং সাম্প্রতিক নানা বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন মীর সামী

আপনার অভিনীত গানচিত্র ‘বাবা শুনতে কী পাও’ নিয়ে কিছু বলুন?
‘বাবা শুনতে কি পাও’ শিরোনামের এই বিশেষ গানটি তৈরি করেছেন প্রান্তিক সুর। তাতে কণ্ঠ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী গজল ঘরানার শিল্পী শিরিন চৌধুরী। গানটির কথাও লিখেছেন শিল্পী নিজে। গানচিত্রে একটি সুন্দর সামাজিক বার্তা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিয়ের পর একটা মেয়ের স্বপ্ন যেন মরে না যায় এবং শুধু মানুষটাকে নয়, তার স্বপ্নকেও ভালোবাসার সংবেদনশীল এবং হৃদয়স্পর্শী বাবার অনুরোধের বার্তা থাকছে এতে। গানের কথার সূত্র ধরে গল্পনির্ভর ভিডিওটিতে বাবার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত আর মেয়ের ভূমিকায় আমি। অনেকদিন পর হায়াত চাচার সঙ্গে কাজ করলাম। 

এই কাজটির সঙ্গে যুক্ত হলেন কীভাবে? 
কিছুদিন আগে নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী আমায় গানচিত্রটিতে অভিনয়ের জন্য বললেন। যখন শুনলাম এই গানে বাবার ভূমিকায় অভিনয় কবেন আবুল হায়াত চাচা; ঠিক তখনই রাজি হয়েছি। কারণ, আমি হায়াত চাচার পরিচালনায় অনেক নাটকে তাঁর মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছি। তাই ভাবলাম বাবা দিবসের এই কাজটি আমাদের আরও একটি ডকুমেন্টেশন হয়ে থাক। আমাদের এই কাজে একজন মেয়ের দৃষ্টিভঙ্গিতে বাবাকে ঘিরে তার স্মৃতি, ভালোবাসা আর না বলা কথাগুলো উঠে এসেছে। কাজটি করার সময় আমার বাবার কথা খুব মনে পড়ছিল। একজন বাবার অবদান যে কত বিশাল, সেটি অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না–এই গানচিত্রে সেটিই তুলে ধরা হয়েছে।

আপনাকে এখন টিভি নাটকে খুব কম দেখা যায়। ইচ্ছা করেই দূরে সরে আছেন?
আমি এখন পরিবার আর নিজের সময়কে প্রাধান্য দিচ্ছি। পাশাপাশি কাজের মানের প্রতিও সবসময় সংবেদনশীল ছিলাম। নাটকের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে কখনও বিশ্বাসী ছিলাম না। এখন তো অনেক সময় দেখা যায় গল্প বা চরিত্রের গভীরতা কম, কাজগুলো অনেকটাই ‘কনটেন্ট ভিউ’ নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। আমি চাই, যখন কাজ করি, সেটি যেন দর্শকের মনে থাকে। তাই শুরু থেকে এখনও বেছে বেছেই কাজ করছি। 

এখন নাটকে ‘ভিউ’ ও ‘ট্রেন্ড’ অনুসারে শিল্পী নির্বাচন হয় বলে অভিযোগ আছে... 
এটি ঠিক যে এখন ‘ভিউ’ একটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশ্ন হলো– দীর্ঘ মেয়াদে এই দর্শক আসলে কাদের মনে রাখে? আমার মনে হয়, একটি শিল্পমাধ্যমে যখন কেবল সংখ্যা দিয়ে শিল্পী বা কাজের মান বিচার হয়, তখন সেখানে অন্তর্নিহিত শিল্পবোধ অনেকটা হারিয়ে যায়। আমি বিশ্বাস করি অভিনেতা বা অভিনেত্রী হিসেবে আমাদের প্রথম দায় নিজের চরিত্রের প্রতি। ‘ভিউ’ দিয়ে নয়, শিল্পের গভীরতা দিয়ে একজন শিল্পীকে বিচার করা উচিত।

বর্তমান সময়ে ওটিটি মাধ্যমের প্রসারে নাটকের গুণগত মানে কী প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন?
ওটিটি একটা বড় প্ল্যাটফর্ম। নতুন গল্প আর নতুন নির্মাতাদের সুযোগ এনে দিয়েছে। এখানেও একটি সিন্ডিকেট তৈরি হচ্ছে। যারা আগে টিভিতে প্রভাবশালী ছিলেন, এখন তারা ওটিটিতেও আধিপত্য রাখছেন। এটি শিল্পের জন্য মোটেই ভালো নয়। প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও অনেক শিল্পী সুযোগ পাচ্ছেন না। আমি বলব, ওটিটি হোক কিংবা টিভি–প্রতিভা ও গল্পকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত, ‘চেনা মুখ’ বা ‘সেলিব্রেটি প্যাকেজ’কে নয়।

যে সিন্ডিকেটের কথা বললেন, তা কী ভাঙা যায় না?
অবশ্যই যায়। যারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করবেন, তারাই এখন সেই দলের হয়ে যাচ্ছে। ফলে বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? আমি যখন নিয়মিত কাজ করেছি, সেই সময় কিন্তু সবাই যার যার যোগ্যতা দিয়ে কাজ করেছেন। এখন পরিচয়ের ভিত্তিতে হচ্ছে। ফলে ধীরে ধীরে আমাদের নাট্যাঙ্গনের শিল্পটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ওটিটির কাজে আগ্রহ অনুভব করেন?
অবশ্যই। যদি ভালো গল্প আর শক্তিশালী চরিত্র পাই, আমি ওটিটিতেও কাজ করতে চাই। অশ্লীলতা বা অহেতুক সাহসী দৃশ্যের নামে যদি গল্পের গুরুত্ব হারিয়ে যায়, তাহলে সেটি আমাকে টানে না। শিল্পমান থাকলেই আমি আগ্রহী।

বর্তমান প্রজন্মের নতুন অভিনেত্রীদের সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
নতুনদের মধ্যে অনেকেই খুব ভালো করছেন। আমি তাদের একটা কথাই বলি, নিজেকে সময় দিন, নিজেকে গড়ুন। রাতারাতি তারকা হওয়া যায়। দীর্ঘ সময় দর্শকের মনে থাকা কঠিন। টিকে থাকার জন্য শুধু সৌন্দর্য নয়, কাজের প্রতি নিষ্ঠা, অধ্যবসায় ও আত্মসমালোচনাও জরুরি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ