শিক্ষার উন্নয়নে বরাদ্দ কমল ১১ হাজার কোটি টাকা
Published: 5th, March 2025 GMT
শিক্ষা খাতের উন্নয়ন বরাদ্দে বড় ধরনের কাটছাঁট করা হয়েছে। সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) শিক্ষা খাতের বরাদ্দ কমেছে ১১ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শিক্ষা খাতের উন্নয়নে ২০ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা খরচ করা হবে। মূল এডিপিতে শিক্ষা খাতের উন্নয়নে ৩১ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল।
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সরকার সর্বশেষ এডিপি নিয়েছিল। সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় সংশোধিত এডিপি পাস হয়। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও প্রতিবছর বছরের মাঝখানে সংশোধিত এডিপিতে এই দুটি খাতের ওপর বেশি কোপ পড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
কিন্তু এবার ব্যতিক্রম পরিস্থিতি ছিল। গত আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। গণ-অভ্যুত্থানের সূত্রপাত হয়েছিল শিক্ষার্থীদের হাত ধরে কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে। মূলত সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথার বাতিলের দাবিতে এই আন্দোলন শুরু হয়। কারণ, বিশালসংখ্যক তরুণ-তরুণী মনমতো চাকরি বা কাজ পান না। শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বেকারত্ব হার সবচেয়ে বেশি। সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জনের পরও ভালো চাকরির জন্য দুই থেকে তিন বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় তাঁদের। কিন্তু সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ দেওয়ার সময় দেখা গেল, এবারও অন্য বছরের মতো বড় ধরনের কাটছাঁট করা হলো শিক্ষা খাতে।
কেন কমানো হলে শিক্ষা খাতের উন্নয়ন বরাদ্দ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে তার বেশ কয়েকটি কারণ জানা গেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, শিক্ষা খাতের বরাদ্দ খরচ করার মতো সক্ষমতা নেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের। তার সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে কয়েকটি নতুন কারণও। যেমন বিগত সরকারের সুবিধাভোগী ঠিকাদারেরা শিক্ষা খাতসহ অন্যান্য প্রকল্পে কাজ করছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেক ঠিকাদারকে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। এতে উন্নয়নকাজ ব্যাহত হচ্ছে। আবার অনেক প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়েছে। এসব কারণে শিক্ষা খাতের প্রকল্পের অগ্রগতি বেশ কম। তাই বছরের অর্ধেক পার হওয়ার পর বরাদ্দ কমানোর বিকল্প ছিল না।
এবারই প্রথম নয়, প্রতিবার শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমানো হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা কমানো হয়েছিল। ওই বছর সংশোধিত এডিপিতে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ রাখা হয় ১৭ হাজার ২২৩ কোটি টাকা।
তলানির ১০টি দেশের একটি বাংলাদেশ
শিক্ষা খাতের উন্নয়ন ছাড়া কোনো দেশের কাঙ্ক্ষিত বিকাশ সম্ভব নয়। শিক্ষা এমন একটি বিষয়, যা অন্য সব খাতকে স্পর্শ করে। তাই শিক্ষার উন্নয়নে অর্থ ব্যয়কে একধরনের বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় কোন দেশ শিক্ষা খাতে কত খরচ করে, তার একটি পরিসংখ্যান রয়েছে বিশ্বব্যাংকের তথ্যভান্ডারে। সেখানে দেখা যায়, বিশ্বব্যাংকের ১৮৯টি সদস্যদেশের মধ্যে জিডিপির অনুপাতে শিক্ষা খাতে সবচেয়ে কম খরচ করে, এমন ১০টি দেশের একটি বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, বাংলাদেশ শিক্ষা খাতে জিডিপির ২ শতাংশের কম খরচ করে। গত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) তা ১ দশমিক ৭৬ শতাংশে নেমে এসেছে।
বাংলাদেশের পেছনে আছে বারমুডা, হাইতি, মৌরিতানিয়া, কম্বোডিয়া, লাওস, মোনাকো, পাপুয়া নিউগিনি, সোমালিয়া ও দক্ষিণ সুদান। এসব দেশের বেশির ভাগই অতি দারিদ্র্য হিসেবে পরিচিত। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জিডিপির অনুপাতে শিক্ষায় বরাদ্দ অন্তত ৬ শতাংশে উন্নীত করা প্রয়োজন। সেটি করতে হলে বাজেটের ২০ শতাংশ শিক্ষায় বরাদ্দ দিতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদন আজ বিকেলে, ক্লাস ১৩ নভেম্বর
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (পাস) প্রোগ্রামে ভর্তি কার্যক্রম আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা থেকে শুরু হচ্ছে। আবেদন করা যাবে আগামী ১৫ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত। এ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে ১৩ নভেম্বর থেকে। গত রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন যেসব শিক্ষার্থী
২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালের এসএসসি বা সমমান এবং ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালের এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন ভর্তির জন্য। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি (ভোকেশনাল), এইচএসসি (বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি) ও ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরাও আবেদন করতে পারবেন। এ-লেভেল, ও-লেভেল ও বিদেশি সনদধারীদের ক্ষেত্রে নির্ধারিত নিয়মে সরাসরি ডিন অফিসে বা ই–মেইলে আবেদন করতে হবে শিক্ষার্থীদের।
যেসব শিক্ষার্থী গত দুই শিক্ষাবর্ষে (২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪) স্নাতক (সম্মান), স্নাতক (সম্মান) প্রফেশনাল বা স্নাতক (পাস) প্রোগ্রামে ভর্তি হয়ে রেজিস্ট্রেশন কার্ড পেয়েছেন, তাঁরা এই শিক্ষাবর্ষে নতুন করে ভর্তি হতে পারবেন না। তবে পূর্ববর্তী ভর্তি বাতিল করে নতুন শিক্ষাবর্ষে আবেদন করতে পারবেন। একই সঙ্গে কোনো শিক্ষার্থী দ্বৈত ভর্তি হলে তাঁর উভয় ভর্তি ও রেজিস্ট্রেশন বাতিল হবে।
আবেদন ফি ৪০০ টাকা
ভর্তি ফি হিসেবে প্রাথমিক আবেদন ফি ৪০০ টাকা, যার মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ ২৫০ টাকা এবং কলেজের অংশ ১৫০ টাকা। ভর্তি নিশ্চিত হওয়ার পর রেজিস্ট্রেশন ফি ৭২০ টাকা জমা দিতে হবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীর তথ্য যাচাই করে অনলাইনে নিশ্চয়ন করবে। তবে নিশ্চয়ন ছাড়া কোনো আবেদনকারীকে মেধাতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। আবেদন ফি ১৯ অক্টোবরের মধ্য জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুনবাংলাদেশ বিমানে ইন্টার্নশিপ, দৈনিক হাজিরায় সম্মানী ৬০০ টাকা৪ ঘণ্টা আগেআবেদনকারীদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে প্রতিটি কলেজের জন্য আলাদাভাবে কোর্সভিত্তিক মেধাতালিকা প্রণয়ন করা হবে। একই মেধা নম্বরপ্রাপ্ত হলে এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএ (৪০: ৬০ অনুপাতে) এবং প্রয়োজনে মোট নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে। এরপরও সমতা থাকলে বয়স কম শিক্ষার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। ভর্তি কার্যক্রম ধাপে ধাপে প্রথম মেধাতালিকা, দ্বিতীয় মেধাতালিকা, কোটার মেধাতালিকা এবং প্রথম ও দ্বিতীয় রিলিজ স্লিপের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। তবে এবারও তৃতীয় রিলিজ স্লিপে আবেদন করার সুযোগ থাকবে না।
বিস্তারিত দেখুন এখানে
আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ, সুযোগ পাবেন ৪৮ জেলার যুবরা১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আরও পড়ুন১২ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে সরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫