সরকার ও উচ্চ আদালতের নির্দেশে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর। গত ৭ জানুয়ারি থেকে চলছে এ অভিযান। ওইদিন অভিযান শুরু করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সসেন্ট উইংয়ের নির্বার্হী ম্যাজিস্ট্রেট ও সিনিয়র সহকারী সচিব আবদুল্লাহ আল মামুন।

সেদিন নকলা উপজেলার ৮ ও শেরপুর সদর উপজেলার ৩ ইটভাটাকে ৬৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। সেই সঙ্গে ৫ ভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু কয়েক দিন পর থেকে ফের ভাটাগুলো চালু করেন মালিকরা। এরপর গত ৬ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর ফের অভিযান শুরু করে। এ সময় শেরপুর সদর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, যোগিনীমুরা ও পশ্চিম ঝিনিয়া এলাকার কৃষি জমিতে গড়ে ওঠা ৩টি অবৈধ ভাটাকে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। সেই সঙ্গে কাঁচা ইট নষ্ট ও কিলিং গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় ভাটার কার্যক্রমও বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। সবশেষ ২ মার্চ পৌর শহরের মোবারকপুর এলাকার দুই ভাটাকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় এবং ভাটার চিমনি ভেঙে দেওয়া হয়। এসব ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছিলেন ইটভাটা মালিকরা। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালতের গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, একেকটি ইট ভাটায় প্রতিদিন শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন। ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করায় মালিকদের ক্ষোভের পাশাপাশি কিছুদিন ধরে শ্রমিক অসন্তোষও তৈরি হয়। কারণ, দিনমজুরি করে যারা জীবিকা নির্বাহ করতেন তাদের আয় বন্ধ হয়ে গেছে। এ সুযোগ কাজে লাগায় কিছু ভাটা মালিক। তারা নিজেদের স্বার্থে শ্রমিক অসন্তোষকে উস্কে দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের তরফ থেকে ইটভাটায় অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এ খবর চাউর হলে কয়েকটি ভাটার শ্রমিকরা জড়ো হন শহরের খোয়ারপাড় শাপলা চত্বর এলাকায়। সেখান দিয়ে শেরপুরের তিন উপজেলা, রৌমারী, রাজিবপুর ও বকশীগঞ্জ উপজেলার লোকজন যাতায়াত করেন। সেখানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন ইটভাটার শ্রমিকরা। বিক্ষোভ চলাকালীন পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি গাড়ি খোয়ারপাড় মোড় দিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ এ গাড়িতে হামলা ভাঙচুর চালান উত্তেজিত শ্রমিকরা। এরপর মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেন তারা।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাটি নিয়ে জেলায় তোলপাড় শুরু হয়। গতকাল বুধবার সকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং সরকারি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে ১২ ইটভাটার মালিককে। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে ৭০০-৮০০ জনকে।

মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক সুশীল কুমার দাস জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের গাড়ি ভাঙচুর এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় এ মামলা হয়েছে।

তবে ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদ বলেন, ‘গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাটি দুঃখজনক। শ্রমিকরা কিছু না বুঝেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এর সঙ্গে মালিকরা জড়িত নন; বরং আমরা শ্রমিকদের শান্ত করতে তাদের সঙ্গে ছিলাম। এটা সবাই জানেন।’

পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, সরকারি কাজে বাধাদান এবং গাড়ি ভাঙচুরে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কেউ আইন অমান্য করলে তাকে শাস্তি পেতে হবে।

জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমানের ভাষ্য, ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর হামলা ন্যক্কারজনক ঘটনা। মামলার গতিতে মামলা চলবে। সেই সঙ্গে হাইকোর্টের নির্দেশনা পালনে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল র সরক র র ঘটন ইটভ ট

এছাড়াও পড়ুন:

যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা

রাজধানীতে হাত ও পা বেঁধে রড দিয়ে পিটিয়ে আনোয়ার হোসেন (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ীর কাউন্সিল শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির একটি কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বিদ্যুৎমিস্ত্রি ছিলেন আনোয়ার হোসেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল পুরান ঢাকার সদরঘাটে। পারিবারিক সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে রাজধানীর মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ি এলাকায় থাকতেন।

আনোয়ারের ভাই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ভোরে আনোয়ার বাসা থেকে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পরে খবর পান, তাঁর ভাইকে কাউন্সিল উত্তর শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির গ্যারেজে নিয়ে হাত–পা বেঁধে রাখা হয়েছে। এরপর সেখানে গিয়ে আনোয়ারের হাত–পা বাঁধা ও রক্তাক্ত মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান তাঁর মা।

লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে মৃত্যুর আগের তাঁর মাকে জানিয়েছিলেন আনোয়ার। তাঁর ভাই এ কথা জানিয়ে বলেন, এর কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলেই আনোয়ারের মৃত্যু হয়। এরপর যাত্রাবাড়ীর থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।

গতকাল সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোরে সঙ্গী সুমনকে নিয়ে আনোয়ার বাসের কাঠামো তৈরির কারখানায় চুরি করতে যান। এ সময় সেখানে থাকা লোকজন তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। তাঁর সঙ্গী সুমন পালিয়ে যান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত
  • শাহরুখকে ‘কুৎসিত’ বলেছিলেন হেমা মালিনী, এরপর...
  • প্রথম দেখায় প্রেম নাকি ঝগড়া? আসছে ইয়াশ–তটিনীর ‘তোমার জন্য মন’
  • জেমিনিতে যুক্ত হলো গুগল স্লাইডস তৈরির সুবিধা, করবেন যেভাবে
  • নড়াইলে ৩ দিন ধরে স্কুলছাত্রী নিখোঁজ
  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
  • নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক
  • বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
  • সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২
  • যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা