রাশিয়ার ব্যাংক খাতে বড় নিষেধাজ্ঞা দিতে চান ট্রাম্প, ভাবছেন শুল্কারোপের কথা
Published: 7th, March 2025 GMT
রাশিয়ার ব্যাংক খাতের ওপর বড় পরিসরে নিষেধাজ্ঞা দিতে চান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশটির ওপর শুল্ক আরোপও করতে চান তিনি। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে কিয়েভের সঙ্গে একটি শান্তিচুক্তিতে পৌঁছানোর আগপর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা থাকবে। নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এসব কথা বলেছেন ট্রাম্প।
আজ শুক্রবার ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, ‘বর্তমানে যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়া যে পুরোদমে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, তার ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি এবং শান্তির বিষয়ে চূড়ান্ত সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত আমি রাশিয়ার ব্যাংক খাতের ওপর বড় পরিসরে নিষেধাজ্ঞা এবং শুল্কারোপের বিষয়টি দৃঢ়ভাবে বিবেচনা করছি।’
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর থেকেই ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে তৎপর হয়েছেন ট্রাম্প। এ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসেছে তাঁর প্রতিনিধিদল। তবে ইউক্রেনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো আলাপ করেননি তিনি। এরই মধ্যে গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার পর ইউক্রেনের মার্কিন অস্ত্র সহায়তা স্থগিত করেন ট্রাম্প।
একই সময়ে ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে এবং মস্কোর সঙ্গে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে রাশিয়ার ওপর আরোপ করা কিছু নিষেধাজ্ঞা হোয়াইট হাউস শিথিল করার পরিকল্পনা করছে বলে জানায় রয়টার্স। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরেই ওই নিষেধাজ্ঞাগুলো দিয়েছিল সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। এরপরই আজ রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার কথা বললেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুনসমুদ্র, আকাশপথে অস্ত্রবিরতি চান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট২ ঘণ্টা আগেবিশ্বের সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর একটি রাশিয়া। বাইডেনের আমলে রাশিয়ার তেল রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ দিয়েছিল ওয়াশিংটন। রুশ জ্বালানি প্রতিষ্ঠান এবং তেলবাহী জাহাজগুলোর ওপরেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ছিল রাশিয়ার জ্বালানি খাত-সংশ্লিষ্ট প্রায় ১০০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, যার মধ্যে ব্যাংক ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
আরও পড়ুনচীনকে কোণঠাসা করতেই কি পুতিনকে কাছে টানছেন ট্রাম্প০৬ মার্চ ২০২৫আরও পড়ুনট্রাম্পকে শান্তি-নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করেন পশ্চিম ইউরোপের বেশির ভাগ মানুষ১২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন য দ ধ ইউক র ন র র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্য কেন? আদিবাসী নারী শ্রমিকরা পাই না সমান মজুরি
‘‘সাম্যের গান গাই-
আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই।
বিশ্বের যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’’
কাজী নজরুল ইসলাম ‘নারী’ কবিতায় নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলেছেন। কিন্তু, এ বৈষম্য সমাজের সর্বস্তরে এখনো রয়ে গেছে। দিনাজপুরের হাকিমপুরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারী শ্রমিকেরা। পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেও সমান মজুরি পাচ্ছেন না তারা।
হাকিমপুর উপজেলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পাড়া ঘুরে জানা যায়, বছরে আমন এবং ইরি মৌসুমে ধানের চারা রোপণ, ক্ষেত নিড়ানিসহ ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ করেন নারী শ্রমিকেরা। পুরুষের পাশাপাশি সমান তালে এসব কাজ করেন তারা। এ কাজে পুরুষ শ্রমিকেরা ৫০০ টাকা দৈনিক মজুরি পেলেও নারী শ্রমিকেরা পান ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। শুধু ধানের মৌসুমেই নয়, অন্যান্য ফসলের ক্ষেতে কাজ করলেও তারা পুরুষের সমান মজুরি পান না। এই বৈষম্য দূর হলে আরেকটু স্বচ্ছল জীবনযাপন করা যেত বলে তারা মনে করেন।
হাকিমপুর পৌর এলাকা চন্ডিপুর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পাড়ার নারী শ্রমিক লক্ষ্মী হাসদা ও শান্তি সরেন বলেন, ‘‘আমরা বছরে দুই সিজন ধানের চারা রোপণসহ কাটা-মাড়াই করি। সকাল ৮ থেকে বিকেল ৫ পর্যন্ত কাজ করি। কিন্তু মজুরি কম পাই। পুরুষরা ৫০০ টাকা পেলে আমরা পাই সাড়ে ৩০০ টাকা। এটা কেমন নিয়ম?’’
অপর নারী শ্রমিক সুরুজ মনি হেম্ব্রন বলেন, ‘‘এখন তো হামরা তেমন কাম পাই না। আলু ও সরিষার মাঠে এখন মুসলমান বেটি ছোলরা কাম করে। আগে আমরাই করতাম, এখন অনেক কাম কমে গেছে। এরপর আবার পুরুষ মানুষের চেয়ে হামাক হাজিরাও কম দেয়। হারা (আমি) চলবো কি করে?’’
একই প্রশ্ন করেন হিলির তালতলার রানী হেম্ব্রন ও বিউটি হেম্ব্রন। শ্যামলী হাড্ডি বলেন, ‘‘এই বৈষম্যের কারণে আমরা স্বাবলম্বী হতে পারছি না। বৈষম্য দূর হলে আরেকটু ভালো করে চলতে পারতাম।’’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাকিমপুর উপজেলার ১ নাম্বার খট্রা-মাধবপাড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ছদরুল শামীম স্বপন বলেন, ‘‘আমরা জানি, নারী-পুরুষ সমান অধিকারী। কিন্তু, সমাজে নারী শ্রমিকেরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। তারা সঠিক মজুরি পায় না। আমি শ্রমিক ফেডারেশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলব- আপনারা এই বৈষম্য দূর করুন। নারীর ন্যায্য মজুরির ব্যবস্থা করুন।’’
খট্রা-মাধবপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি শাহানুর আলম শাহিন বলেন, ‘‘আমাদের এই অঞ্চলে অনেক আদিবাসী নারী শ্রমিক আছেন, যারা বৈষম্যের শিকার। আমি গৃহস্থ এবং কৃষকদের বলতে চাই, আপনারা বৈষম্য না করে নারী-পুরুষ শ্রমিকদের সমান মজুরি দেবেন।’’
ঢাকা/তারা