Samakal:
2025-05-01@00:17:25 GMT

নতুন আকর্ষণ ওরস বিরিয়ানি

Published: 8th, March 2025 GMT

নতুন আকর্ষণ ওরস বিরিয়ানি

খাবারে বৈচিত্র্য আর মানের কারণে চট্টগ্রামের ভোজনপ্রিয় মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে চট্টগ্রাম নগরের স্টেডিয়ামপাড়ার নান্দনিক রেস্টুরেন্ট ‘রোদেলা বিকেল’। খাবার তৈরিতে বাছাইকরা সেরা উপাদান ব্যবহার করায় গ্রাহকদের কাছে আস্থার ঠিকানায় পরিণত হয়েছে রেস্তোরাঁটি। প্রতিবারের মতো এবারের রমজানেও ‘রাজকীয়’ ইফতারের আয়োজন করেছে রোদেলা বিকেল। মানের দিক থেকে প্রতিষ্ঠানটি শতভাগ অন্যদের চেয়ে পুরোপুরি ব্যতিক্রম। এবারের ইফতারের নানা আইটেম তৈরিতে ব্যবহৃত বাছাইকৃত নানা উপাদান অন্যদের চেয়ে রোদেলা বিকেলকে দিয়েছে ভিন্নতা। 
রেস্তোরাঁটি ইফতার তৈরিতে ব্যবহার করছে ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ডের ‘অলিও অরলিও’ ব্র্যান্ডের সানফ্লাওয়ার ওয়েল, সিঙ্গাপুরের চিনি, কোরিয়ার ময়দা, কাশ্মীরের জাফরান, নিউজিল্যান্ডের বাটার অয়েল। দেশি খাঁটি গাওয়া ঘিয়ে তরজাতা উপকরণে এখানে প্রতিদিন ইফতারের নানা আইটেম তৈরি করা হয়। এবারের ইফতারে আকর্ষণের কেন্দ্রে রয়েছে ওরস বিরিয়ানি। স্পেশাল চিনি গুঁড়া সিদ্ধ চাল দিয়ে তৈরি করা হয় বিশেষ এই আইটেম। প্রতি বৃহস্পতিবার থাকে বিশেষ এই আয়োজন। রোজা শুরুর পর গত বৃহস্পতিবার প্রথম দিনই ওরস বিরিয়ানি খেতে ও বাসায় নিয়ে যেতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে ছুটে আসেন। প্রথম দিনেই অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় বড় পাতিলে রান্না করা আকর্ষণীয় ওরস বিরিয়ানির সবটুকুই। 
রোজাদারদের সুবিধার্থে এখানে সপ্তাহের একেকদিন রাখা হয়েছে ইফতারের একেক আকর্ষণীয় আইটেম। এরমধ্যে শনিবার থাকছে বিফ কাচ্চি বিরিয়ানি ও শুক্রবার মাটন কাচ্চি বিরিয়ানি। রোজাদারদের জন্য ৪০ পদের ইফতারের এলাহী আয়োজন রয়েছে এই রেস্তোঁরায়। রোজার প্রথম দিন থেকেই এখানকার রুচিশীল ইফতার গ্রাহকদের কাছে বেশ সাড়া ফেলেছে। ভোজনপ্রিয় মানুষদের সুবিধার্থে এখানে আছে প্রতিদিন দুই ধরনের প্যাকেজও। 
রোদেলা বিকেলের ৪০ পদের ইফতারে রয়েছে, দেশি চিকেন হালিম, মাটন হালিম, মেজবানের গরুর মাংস, মিহিদানা, জিলাপি, লাচ্ছা জিলাপি, পাটিসাপটা পিঠা, কিসমিস ফিরনি, স্পেশাল পরোটা, দেশি চিকেন তান্দুরি, চিকেন তান্দুরি, চিকেন চাপ, চিকেন ললিপপ, বিফ বটি কাবাব, প্রণ তন্দুরি, ফিশ ফিঙ্গার, বিফ কাচ্চি ও আকনি বিরিয়ানি, মাটন কাচ্চি বিরিয়ানি, মাটন পায়া, চিকেন মোমা, চিকেন শর্মা, বিফ এগ রোল, চিকেন এগ রোল, ফিশ টিক্কা কাবাব, টক দই, মিষ্টি দই, ম্যাংগো লাচ্ছি, গরুর নলা, চিকেন শামী কাবাব, সুজির হালুয়া, ঘিয়ে ভাজা লুচি, চিটা পিঠা, চিকেন আলুর চপ, চিকেন সাসলিক, ওরস বিরিয়ানি, মাটন চুইঝাল, মাটন লেগ কোরমা এবং দেশি মোরগ মাসাল্লাম।
৫২০ টাকার প্যাকেজে রয়েছে খেজুর, চনা, পেঁয়াজু, বেগুনি, জাফরান মিল্ক জিলাপি, আনারসের জুস, মেজবানের গরুর মাংস, তান্দুরি চিকেন পরোটা, কুমিল্লার মুড়ি, চিকেন আলুর চপ ও মিনারেল ওয়াটার। ৮২০ টাকার প্যাকেজে আছে, আবুধাবির খেজুর, চনা, পেঁয়াজু, বেগুনি, চিকেন মোমো, কিসমিস ফিরনি, জাফরানি মিল্ক জিলাপি, প্রিমিয়াম হালিম চিকেন অথবা মাটন, সুইট লাচ্ছি, কুমিল্লার মুড়ি, চিকেন এগ রোল, চিকেন আলুর চপ ও মিনারেল ওয়াটার।
রোদেলা বিকেলের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন, ‘আমরা কোয়ালিটির সঙ্গে কখনও কম্প্রোমাইজ করি না। একযুগেরও বেশি সময় ধরে খাবারের কোয়ালিটি ধরে রাখতে পারায় অনেক দূর-দূরান্ত থেকেও পছন্দের ও সুস্বাদু ইফতার কিনতে এখানে ছুটে আসেন মানুষ। আমাদের আরেকটি বৈশিষ্ট হচ্ছে প্রতিদিনের আইটেম প্রতিদিন বিক্রি করা। আমাদের কাছে গ্রাহকদের সন্তুষ্টি সবার আগে। যে কারণে আমরা দেশের বাছাই করা সেরা উপাদান গ্রাহকদের জন্য সংগ্রহ করি। এছাড়াও সিঙ্গাপুর, কোরিয়ার, কাশ্মির, নিউজিল্যান্ডসহ বিশ্বের নামকরা দেশের সেরা সেরা উপাদান ব্যবহার করা হয় নানা আইটেম তৈরিতে। আমরা রান্নার সময় তদারকিটাও খুব শক্তভাবে করি। আমাদের কাছে গ্রাহকের সন্তুষ্টিই সবার আগে।’ 
খুলশি থেকে ইফতার কিনতে আসা রোখসানা হক বলেন, ‘গ্রাহকদের সন্তুষ্টি আর বিশ্বাস বেশিরভাগ হোটেল, রেস্টুরেন্ট বা খাবার বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান অর্জন করতে পারে না। সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রোদেলা বিকেল। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বাস ও আস্থার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ায় অনেক দূর থেকে ইফতার কিনতে এসেছি।’ 
আরেক গ্রাহক ব্যবসায়ী লুৎফুর রহমান বলেন, ‘খাবার তৈরিতে ক্ষতিকর ক্যামিকেল, রং ইত্যাদি ব্যবহার করার ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এ কারণে মানুষের মধ্যে একটা ভয় বেশি কাজ করে কোন প্রতিষ্ঠানের ইফতার কেমন তা নিয়ে। পেট খারাপ হওয়া বা স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ কি না সেটা নিয়েও দুশ্চিন্তার শেষ নেই। তবে প্রায় ছয়বছর ধরে আমি প্রতিবছর পুরো রমজান মাসে পরিবারের জন্য এখান থেকেই ইফতার কিনে আসছি। এখানকার ইফতার যেমন রুচিশীল; তেমনি সুস্বাধুও। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো রোদেলা বিকেল মানের দিক দিয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইফত র ওরস ব র য় ন ব যবহ র কর গ র হকদ র ইফত র ক ন র ইফত র ইফত র র উপ দ ন র জন য আইট ম

এছাড়াও পড়ুন:

মিরাজে দুর্দান্ত জয় বাংলাদেশের

এমন পারফরম্যান্সই তো চাওয়ার থাকে ভালো দলের কাছে। মেহেদী হাসান মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্য, সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরি, তাইজুল ইসলামের ৯ উইকেট শিকারে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল জয় এনে দেয় বাংলাদেশকে। প্রথম টেস্ট হারের পর যে সমালোচনা হয়েছিল, তার জবাবটা বোধ হয় দ্বিতীয় টেস্ট তিন দিনে জিতে দিয়ে দিলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। ‘বাউন্স ব্যাক’ করে সিরিজ ড্র ১-১-এ।

চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে বীরোচিত পারফরম্যান্স ছিল টাইগারদের। এটি সম্ভব হয়েছে পছন্দের উইকেটে খেলা হওয়ায়। স্পিন ভুবনে উইকেট উৎসব করেছেন তাইজুল, মিরাজ গাঁটছড়া বেঁধে। সিরিজ নির্ধারণী টেস্টে দুটি সেঞ্চুরি দারুণ অর্জন অধারাবাহিক ব্যাটিং লাইনআপের। এই টেস্টে ওপেনিং জুটি ভালো করেছে। লম্বা সময় পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া এনামুল হক বিজয় ভালোই সঙ্গ দেন সাদমানকে। লোয়ার মিডলঅর্ডারে মিরাজের লড়াই ছিল দেখার মতো।

টেলএন্ডারদের নিয়ে রীতিমতো বাজিমাত করেছেন তিনি। শেষ ৩ উইকেটে তৃতীয় দিন ১৫৩ রান যোগ করেন। বাংলাদেশকে পৌঁছে দেন ৪৪৪ রানে। ২১৭ রানের লিড থাকায় ইনিংস ব্যবধানে জয়ের স্বপ্ন দেখায়। মিরাজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে সে স্বপ্ন পূরণ হয়। সাকিব আল হাসান ও সোহাগ গাজীর পর তৃতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার তাঁর। 

গত বছর দেশের মাটিতে টেস্টে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার পর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। ২০২৫ সালের শুরুটাও ভালো ছিল না। সিলেটে জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছে। সিরিজ বাঁচাতে চট্টগ্রামে জিততেই হতো। লক্ষ্যে পৌঁছাতে কন্ডিশনেও পরিবর্তন আনা হয়। চট্টগ্রামের উইকেটে খেলা হয় দ্বিতীয় টেস্ট। যেখানে শাসন ছিল স্পিনারদের। পছন্দের উইকেট পাওয়ায় তিন স্পিনার নিয়ে খেলে বাংলাদেশ। তিনজনই দারুণ বোলিং করেন প্রথম থেকে।

দীর্ঘ বিরতির পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া অফস্পিনার নাঈম হাসান চ্যালেঞ্জ নিয়ে বোলিং করে গেছেন। বেশি উইকেট না পেলেও এক প্রান্তে ব্যাটারদের চাপে ফেলেছেন। যার সুফল তাইজুল ও মিরাজ পেয়েছেন অন্য প্রান্তে। প্রথম দিন শেষ সেশনে ব্রেক থ্রু দেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনার পরে পিক করে ৬ উইকেট শিকার করেন। জিম্বাবুয়ে ৯ উইকেটে ২২৭ রানে প্রথম দিন শেষ করে। পরের দিন এক বল খেলে ওই রানেই অলআউট হয়। বাংলাদেশ ব্যাটিং শুরু করে বড় লক্ষ্য নিয়ে। সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয় ১১৮ রানের ওপেনিং জুটি করায় প্রতিপক্ষকে ছাড়িয়ে যাওয়া সহজ হয়। সাদমানের সেঞ্চুরি ও মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম কিছু রান করায় ৭ উইকেটে ২৯১ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করে বাংলাদেশ।

সেদিন সংবাদ সম্মেলনে সাদমান আশা প্রকাশ করেন, মিরাজ ও তাইজুল জুটি করবেন। অষ্টম উইকেটে ৬৪ রানের জুটি দু’জনের। বেশি ভালো করেছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। মিরাজের সঙ্গে ১৫৬ বলে ৯৬ রানের জুটি। অভিষেক টেস্টে সাকিবের ব্যাটিং দারুণ লেগেছে অধিনায়ক শান্তর কাছে। ৮০ বলে ৪১ রান করেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা, মাথায় বল লাগার পরও বিচলিত হননি তিনি। মিরাজ ছাড়া চট্টগ্রাম টেস্টের প্রাপ্তি হিসেবে ওপেনিং জুটির ভালো খেলা, সাদমানের সেঞ্চুরি, তাইজুলের ৫ উইকেট শিকার ও সাকিবের রান করাকে মনে করেন শান্ত। 

শেষের তিন উইকেটে তৃতীয় দিন প্রায় দুই সেশন ব্যাট করে বাংলাদেশ। তাইজুল, সাকিব ও হাসানকে নিয়ে ১৫৩ রান যোগ করে। মিরাজ ১০৪ রান করে ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে উইকেট দেন। নার্ভাস নাইটির ঘরে প্রবেশ করে কিছুটা ঝুঁকির মুখে ছিলেন মিরাজ। ৯৮ রানে পৌঁছানোর পর সেঞ্চুরি ছুঁতে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ফিল্ডারের কাছে বল চলে যাওয়ায় এক রানে থামতে হয়। তখন স্ট্রাইকে হাসান থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল সবাই। ড্রেসিংরুমে খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফের সবাই দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। কখন হাসান আউট হয়ে যায়, সে ভয় কাজ করছিল হয়তো। কিন্তু হাসান ছিলেন দৃঢ়চেতা। মাসাকাদজাকে ডিফেন্স করে স্বস্তি দেন।

মিরাজ স্ট্রাইকে এসে মেদেভেরের প্রথম দুই বলে ঝুঁকি নেননি। তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ নেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ ও দ্বিতীয় টেস্টের সেরা খেলোয়াড় মিরাজ। প্রথম ম্যাচের উভয় ইনিংসে ৫ উইকেট করে ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে অতীতের সব পারফরম্যান্স ছাড়িয়ে গেছেন। সেঞ্চুরির সঙ্গে ৫ উইকেটপ্রাপ্তি, দুই হাজার রানের মাইলফলক পেয়েছেন। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ২১৭ রানে পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ১১১ রানে। ফ্লাডলাইটের আলো জ্বেলে নির্ধারিত সময়ের বেশি খেলান আম্পায়াররা। প্রায় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খেলা হয়। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটাররা তাতে আপত্তি করেননি। তাইজুল ৩, নাঈম ১ ও মিরাজ ৫ উইকেট নিলে ম্যাচ শেষ হয়।  

সিলেটে প্রথম টেস্ট হারের পর চট্টগ্রামে প্রভাব বিস্তার করে খেলে ম্যাচ জেতার পরও খুশি নন অধিনায়ক শান্ত, ‘আমি টেস্ট সিরিজ ড্র করে খুশি না। কারণ, প্রথম টেস্টে আমরা একেবারেই ভালো খেলিনি। এই টেস্টে একপেশে খেলে জিতলেও সিরিজে আরও ভালো খেলা উচিত ছিল। সিরিজটি জিততে হতো।’ টাইগার দলপতি জানান, এই পারফরম্যান্স শ্রীলঙ্কা সফরে কাজে দেবে। দেশের মাটিতে স্পোর্টিং উইকেট বানিয়ে বিদেশে খেলার পরিবেশ তৈরি করছিল বিসিবি। ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হচ্ছে। কিউইদের বিপক্ষে সিলেটে ঐতিহাসিক জয় পেলেও মিরপুর থেকে হারতে শুরু করে। দেশের মাটিতে টানা ছয় হারের পর জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ