গত কয়েক দিনে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত ময়দানের চেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে ক্ষমতার কেন্দ্রগুলোতে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কি কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন। ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স তাঁকে আক্রমণ করেন। অনেকের চোখে এটি পরিকল্পিত ও সাজানো বলে মনে হয়েছে।

ট্রাম্প যেন ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ছুতা খুঁজছিলেন। ৪ মার্চ মার্কিন সামরিক সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। ৫ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ও বন্ধ করে দেয়। ফলে ইউক্রেনের সামরিক অভিযান সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

জেলেনস্কি অনমনীয় থাকার চেষ্টা করেছেন। ইউরোপীয় নেতারা দ্রুত এক বৈঠকে মিলিত হয়ে তাঁর প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন। তাঁরা সামরিক ও আর্থিক সহায়তা চালিয়ে যাওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন।

সবকিছু দেখে মনে হতে পারে, এসব যেন ট্রাম্পের খামখেয়ালি ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ। তবে বাস্তবতা আরও গভীর। পশ্চিমা দেশগুলোর জনগণকে ভাওতা দেওয়ার জন্য এটি একধরনের রাজনৈতিক নাটক। এত দিন তাদের বলা হচ্ছিল যে রাশিয়া দুর্বল এবং সহজেই পরাজিত হতে পারে। এখন সেই গল্প পাল্টাতে হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের কাছে এ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো যথেষ্ট সম্পদ ও ইচ্ছা আর নেই। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন একে ‘প্রক্সি যুদ্ধ’ বলেছেন। এখন আসলে ক্ষতি সামলানোর চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে দায় চাপানোর খেলাও চলছে, যাতে পশ্চিমা জনগণ আসন্ন পরাজয়ের জন্য প্রস্তুত থাকে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিপ্রধান কাইয়া কালাস ও প্রতিরক্ষা খাতের লবিস্টরা এখনো বলছেন, রাশিয়াকে হারানো সম্ভব। তাঁরা তিন বছর ধরেই বলছেন, এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহ বা দূরপাল্লার মিসাইল হামলা পরিস্থিতি বদলে দিতে পারে, কিন্তু বাস্তবে কিছুই বদলায়নি। ইউক্রেনে মানুষ মরছে, তারা ভূখণ্ড হারাচ্ছে, অবকাঠামো ধ্বংস হচ্ছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউক্রেন আগের চেয়ে ভালো কোনো সমাধান পাবে, এমন আশা নেই। ২০২২ সালের বসন্তে ইস্তাম্বুল আলোচনায় যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের চাপে ইউক্রেন যে চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছিল, সেটাও এখন আর সম্ভব নয়। ২০১৫-১৬ সালের মিনস্ক চুক্তিও কার্যকর হওয়ার সুযোগ হারিয়েছে। তখন অন্তত ইউক্রেন দনবাস অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী এলাকা নিয়ন্ত্রণের আশা করতে পারত। কিন্তু রাশিয়া এখন সেই অঞ্চল আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করেছে।

এ চুক্তিগুলোই ছিল ইউক্রেনের জন্য যুদ্ধের ফলাফল মূল্যায়নের ভিত্তি। যুদ্ধ শুরুর সময় জেলেনস্কির উপদেষ্টা ও মুখপাত্র ওলেক্সি আরেসতোভিচ বলেছিলেন, যুদ্ধ শুরুর আগের চেয়ে কম কিছু পাওয়া মানে পরাজয়। বাস্তবতা বলছে, ইউক্রেন সেই পরাজয়ের মুখোমুখি।

অন্যভাবে বললে, যদি যুদ্ধের ফলাফল মিনস্ক চুক্তির শর্তগুলোর চেয়ে খারাপ হয়, তাহলে এ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কোনো অর্থ নেই। গত তিন বছরে ইউক্রেন যে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে, তাতে মিনস্ক চুক্তির মতো সমাধান পাওয়ার সম্ভাবনা আরও দূরে সরে গেছে। তাই এখন দোষারোপের খেলা শুরু হয়েছে।

ইউক্রেনের মারিপোলে দুই রুশ সৈনিক, ১২ এপ্রিল, ২০২২.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতকে ‘স্বস্তি’ দিয়ে অস্ট্রেলিয়া দল ছাড়লেন ট্রাভিস হেড

৮, ২৮, ২৯, ২৮, ৬—ভারতের বিপক্ষে ট্রাভিস হেডের সর্বশেষ ৫ ইনিংস।

২০২৩ সাল থেকে ব্যাট হাতে ভারতকে যতটা ভুগিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ততটা ভোগাতে পারেননি হেড। তবু তিনি ভারতীয় বোলারদের জন্য এক আতঙ্কের নাম। যেকোনো সময় বাউন্ডারির বৃষ্টি বইয়ে দিতে পারেন।

তবে হেডকে নিয়ে ভারতীয় দলকে আপাতত মাথা ঘামানোর দরকার পড়বে না। যশপ্রীত বুমরা, অর্শদীপ সিং, হর্ষিত রানা, অক্ষর প্যাটেলদের জন্য সুখবর হলো ভারতের বিপক্ষে চলমান টি–টোয়েন্টি সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে খেলবে না হেড।

ভারতের বিপক্ষে সম্প্রতি ভালো করতে পারেনি ট্রাভিস হেড

সম্পর্কিত নিবন্ধ