প্রাপ্য শব্দটা অধিকারের মতো বুঝায়। যেখানে অর্জনের গৌরবের নেই। প্রাপ্তির আনন্দ নেই। তবে নিউ জিল্যান্ডের জন্য আইসিসির যে কোনো একটি ইভেন্টের (সাদা বলের ক্রিকেটে) শিরোপা নিশ্চিতভাবেই প্রাপ্য বলা যায়। অধিকার বললেও বাড়াবাড়ি হবে না।
কেননা শেষ কয়েক বছরে যে ধারাবাহিক ক্রিকেট তারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলেছে, যে মানসম্মত পারফর্মার তারা বের করেছে, যে পেশাদারিত্ব দেখিয়েছে…নিশ্চিতভাবেই বড় কিছুর প্রাপ্য । সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে শিরোপার যেই বর্ডার লাইন কেবল সেটাই ক্রস করতে পারছেন না।
অজুত-নিযুত ঘামবিন্দু ঝরিয়ে, সামর্থ্যের সবটুকু উজার করে দিয়ে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অন্যতম ফেভারিট হয়ে উঠেছেন কিউরা। কেন উইলিয়ামসন, রস টেলর, ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদি থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ে গ্লেন ফিলিপস, টম লাথাম, মিচেল স্ট্যানাররা একটি শিরোপার অপেক্ষায়। আজ-ই সেই শিরোপা নিশ্চিত হয় কিনা সেটাই দেখার। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে দুবাইয়ে আজ তারা ভারতের মুখোমুখি।
শিরোপা নিউ জিল্যান্ডের জন্য অরাধ্য এক নাম। ২০১৯ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে কাঁদিয়ে শিরোপা ছুঁয়ে ফেলতেন কেন উইলিয়ামসন। লর্ডসের ফাইনালে আইসিসির উদ্ভট নিয়মের বেড়াজালে সেবার কিউইদের স্বপ্নের শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি।
২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দারুণ পারফর্ম করেও শিরোপা ছোঁয়া হয়নি। সেবার অস্ট্রেলিয়ার কাছে ফাইনাল ম্যাচ হেরে যায় তারা। পরের বছর অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল পর্যন্ত যেতে পারে নিউ জিল্যান্ড। পাকিস্তান তাদেরকে হারিয়ে চলে যায় ফাইনালে। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে তাদের মিশন থেমে যায় সেমিফাইনালে। এবার স্বাগতিক ভারত তাদের বিদায় করে সেরা চার থেকে।
এবার তাদের আইসিসি চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা পাওয়ার লড়াই। প্রতিপক্ষ ভারত এই প্রতিযোগিতায় এখন পর্যন্ত অপরাজিত। নিউ জিল্যান্ড একটি ম্যাচ হেরেছে তাদের বিপক্ষেই। বাকিটা পথ নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব, দাপট দেখিয়েছে দারুণভাবে। নতুন অধিনায়ক স্ট্যান্সার দারুণ নেতৃত্ব দিয়ে দলকে শিরোপার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন।
নিউ জিল্যান্ডকে বড় ভরসা দেখাতে পারে ২০০০ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আসর। সেবার কেনিয়ার নাইরোবিতে ভারতকে হারিয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা জিতেছিল ক্রিস ক্রেইন্সের দল। ২০১৯ সালে ভারতকে হারিয়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতার আগে সেটিই ছিল তাদের একমাত্র বৈশ্বিক শিরোপা। ২৫ বছর পর ওয়ানডে ক্রিকেটে ভারতকে হারিয়ে ‘প্রাপ্য’ শিরোপা কি বুঝে নিতে পারবে তারা? সময়ের কাছে প্রশ্নটা তোলা থাক।
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ ইন ল আইস স
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিবন্ধী ছেলেকে সেতু থেকে ফেলে দেন মা: পুলিশ
মাদারীপুরের শিবচরে ১৫ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলেকে সেতু থেকে এক মা নদে ফেলে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নে আড়িয়াল খাঁ নদীর হাজী শরিয়তউল্লাহ সেতুতে এ ঘটনা ঘটে।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রতন শেখ প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ। ওই নারী ভিক্ষাবৃত্তি করেন এবং কিছুটা ভারসাম্যহীন। ১৫ বছর বয়সী ছেলেটি জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, নিজের ছেলেকে সেতু থেকে নদীতে ফেলে দেন ওই নারী। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। নিখোঁজ ছেলেটিকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
শিবচর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা লিয়াকত হোসেন আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা সকাল থেকে নদীতে অভিযান চালানো শুরু করেছেন। সঙ্গে ডুবুরি দলও আছে। ছেলেটির সন্ধানে আশপাশের এলাকায়ও খোঁজ করা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন সহায়তা করছেন। তবে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই নারীর নাম রিজিয়া বেগম। তিনি উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের শিকদার হাট এলাকার মৃত আজগর আলীর স্ত্রী। স্বামীর মৃত্যুর পর ভিক্ষাবৃত্তিতে তাঁর সংসার চলে। তাঁর তিন মেয়ে ও এক ছেলে আছে। ছেলে নাসিরউদ্দিন জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। সে চোখে দেখে না, চলাফেরাও করতে পারে না।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আরিফ বলেন, আসরের নামাজের পর থেকে ওই নারীকে সেতুর ওপর বসে থাকতে দেখেন। সঙ্গে ৮-৯ বছর বয়সী একটি মেয়ে ও একটি ছেলে ছিল। ছেলেটি কাঁদছিল। নারীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেছিলেন, ‘খিদার জন্য কাঁদছে।’
নূর আলম নামে সন্ন্যাসীর চর চৌরাস্তা এলাকার এক আইসক্রিম বিক্রেতা বলেন, তিনি আইসক্রিম বিক্রি করে বাড়িতে ফিরছিলেন। দূর থেকে দেখেন, এক নারী ছেলেটিকে ফেলে দিলেন। আরও অনেকে দেখেছেন দাবি করে তিনি বলেন, এক অটোরিকশাচালক দৌড়ে যেতে যেতে ওই নারী কাজটি করেন।
ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন নারীকে ঘিরে ধরে ছেলেটিকে ফেলে দেওয়ার কারণ জানতে চান। এ সময়ের দুটি ভিডিও প্রথম আলোর হাতে এসেছে। ভিডিওতে ভরণপোষণ করতে না পেরে প্রতিবন্ধী ছেলেকে নদীতে ফেলে দিয়েছেন বলে জানান ওই নারী। কিছুক্ষণ পর পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে হেফাজতে নেয়।