মরুতে উড়বে কার পতাকা– ভারত না নিউজিল্যান্ডের
Published: 9th, March 2025 GMT
ইতিহাস বলছে নিউজিল্যান্ডের কথা। দু’বার আইসিসি টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয়ে দু’বারই জিতেছে কিউইরা। কিন্তু ক্রিকেটীয় বিবেচনায় ভারত ফেভারিট। হোম ভেন্যু বানিয়ে ফেলা দুবাইয়ে অপরাজিত ভারত। তাই মরুর বুকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসরের ফাইনালে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর হবে বলেই ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশা। ভারতের কাছে আজকের ফাইনালে আবেগের উপলক্ষও আছে।
গুঞ্জন রয়েছে, এ ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডে থেকে বিদায় নিতে পারেন রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। ট্রফি জিতে হাসিমুখে দুই কিংবদন্তিকে বিদায় দিতে নিশ্চিতভাবেই সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপাবে ভারত। এই আবেগ চাপ হয়েও আসতে পারে তাদের ওপর। ভারতের আবেগে মাখামাখির সুযোগে ট্রফি ছিনিয়ে নিতে পারেন মিচেল স্যান্টনার-কেন উইলিয়ামসনরা।
আবেগে ভেসে ভারতীয় শিবির যে তালগোল পাকাতে পারে, সে ইঙ্গিত গতকালের সংবাদ সম্মেলনেই মিলেছে। রোহিত শর্মার ওয়ানডে ছাড়ার প্রশ্নে সহ-অধিনায়ক শুভমান গিল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ড্রেসিংরুমে কিংবা আমার সঙ্গে এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। আমার মনে হয় না, রোহিত ভাইও এটা নিয়ে খুব একটা ভাবছেন। আমাদের কালকের ম্যাচ শেষ হলে হয়তো তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।’ শেষ লাইন নিয়েই বাধে বিপত্তি। সংবাদ সম্মেলন শেষ করে শুভমানের মনে হয়, শেষ বাক্যটা বলা তাঁর উচিত হয়নি। সেটা গণমাধ্যমকর্মীদের বুঝিয়ে বলতে পরে আবার সংবাদ সম্মেলন কক্ষে ফিরে আসেন। এমনকি প্রেস বক্সে লোক পাঠিয়েও এই অনুরোধ জানানো হয়।
এসব বলে তো আর রোহিত-কোহলির অবসরের গুঞ্জন চাপা যাবে না। বিশেষ করে ফর্মে না থাকলেই রোহিতের অবসরের গুঞ্জন ওঠে। রান না পাওয়ায় অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচে প্রথম একাদশের বাইরে বসতে হয়েছিল তাঁকে। তখনও এমন গুঞ্জন উঠেছিল। কোহলির ব্যাপারটি অবশ্য ভিন্ন। দুরন্ত ছন্দে আছেন তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে রান তাড়ায় দারুণ এক সেঞ্চুরি করেছেন। সেমিতেও ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেছেন তিনি। আজকের ফাইনালেও ভারতের অন্যতম ভরসা তিনি। এ আসরে বড় রান পাওয়া রোহিত অবশ্য গতকাল স্পেশাল ব্যাটিং সেশন করেছেন। ভারত অবশ্য ব্যাটিং নিয়ে মোটেই চিন্তায় নেই। শুভমান গিল, শ্রেয়াস আয়ার, লোকেশ রাহুলরা দারুণ ফর্মে আছেন। তাই তো সংবাদ সম্মেলনে শুভমান বলে গেলেন, তাঁর দেখা এটাই ভারতের সেরা ব্যাটিং লাইন।
ব্যাটিংয়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই নিউজিল্যান্ডও। দেড় বছর পর ওয়ানডেতে ফেরা কেন উইলিয়ামসন দুর্দান্ত ফর্মে আছেন। উইলি ইয়াং, টম লাথামরাও দারুণ খেলছেন। শেষ দিকে গ্লেন ফিলিপস, মিচেল ব্রেসওয়েলরাও রান পাচ্ছেন। তবে ওপেনার রাচিন রবীন্দ্র স্বরূপে ফেরায় কিউই ব্যাটিং অন্য মাত্রায় চলে গেছে। ভারতীয়রা এগিয়ে থাকবেন স্পিন আক্রমণে। কুলদীপ, বরুণ, জাদেজা ও অক্ষর; এই স্পিন চতুষ্টয়ের সামনে দুবাইয়ের মন্থর উইকেটে টেকা কঠিন। কিউই স্পিনাররাও খুব একটা পিছিয়ে নেই। আসরে ভারতীয় স্পিনাররা যেখানে ২১ উইকেট শিকার করেছেন; সেখানে স্যান্টনার, ব্রেসওয়েলরা নিয়েছেন ১৭ উইকেট। স্পিনে কিঞ্চিৎ পিছিয়ে থাকাটা নিউজিল্যান্ড কাভার করে দিচ্ছে পেস দিয়ে। তবে যাঁর পেসে কাভার হয়েছে, সেই ম্যাট হেনরি ফাইনালে অনিশ্চিত।
আসরের সর্বোচ্চ শিকারি এ পেসার সেমিতে ক্যাচ ধরতে গিয়ে কাঁধে চোট পেয়েছেন। তাঁর জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করবে কিউইরা। শেষ পর্যন্ত তাঁকে না পাওয়া গেলে জ্যাকব ডাফি একাদশে আসবেন। একটা জায়গায় নিউজিল্যান্ড বিরাট ব্যবধানে এগিয়ে, সেটা হলো ফিল্ডিং। ভারতীয়দের হাত থেকে যখন অসংখ্য ক্যাচ পড়ছে; ফিলিপস-রাচিনরা সেখানে অবিশ্বাস্য সব ক্যাচ ধরছেন।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ যে পিচে হয়েছিল, সেই পিচেই ফাইনাল হবে। তবে দুবাইয়ের আকাশ আজ কিছুটা মেঘলা থাকবে। এই কন্ডিশনে পিচের আচরণ বদলাবে না বলে জোরের সঙ্গে বলেছেন শুভমান গিল। পিচ আগের ম্যাচের মতো মন্থর থাকবে। এখানে ৩০০ রান হবে না বলেও মনে করছেন শুভমান গিল।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করলো বিএসইসি
গত ৫ মার্চ চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে হেনস্তা করার অভিযোগে নিজ সংস্থার ২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইসঙ্গে এ ঘটনায় দুইজন কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বিএসইসির জরুরি কমিশন সভায় এ কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। আজ বুধবার সকালে কাজে যোগ দেওয়ার পর সাময়িক দরখাস্তের আদেশ হাতে পেয়েছেন তারা।
বিএসইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সাময়িক বরখাস্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন- বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্মপরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপপরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), উপপরিচালক আল ইসলাম (৩৮), উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম (৪২), উপপরিচালক তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), সহকারী পরিচালক রায়হান কবীর (৩০), সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন, সহকারী পরিচালক আবদুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী (৩১) এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফকে (২৯)।
মামলার আসামিদের বাইরে আরো যে ৬ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তারা হলেন- পরিচালক আবুল হাসান, পরিচালক ফখরুল ইসলাম মজুমদার, অতিরিক্ত পরিচালক মিরাজ উস সুন্নাহ, উপ-পরিচালক নানু ভূঁইয়া, সরকারি পরিচালক আমিনুর রহমান খান এবং সহকারী পরিচালক তরিকুল ইসলাম।
যে দুই কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে, তারা হলেন- মাকসুদা মিলা, সহকারী পরিচালক (রেজিস্ট্রেশন) এবং কাউসার পাশা বৃষ্টি, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা।
বরখাস্তের আদেশে হিসেবে গত ৫ মার্চ শেয়ারবাজার তদন্ত কমিটির চারটি প্রতিবেদনের বিষয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় বৈঠককালে কমিশনের অনুমতি ছাড়াই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জোরপূর্বক প্রবেশ করে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের হেনস্তা এবং ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
সাময়িক বরখাস্ত মিরাজ উস সুন্নাহর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক কমিশন সভায় ঢুকে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অভিযোগ আনা হলেও ওই সভায় চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের সঙ্গে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এ ঘটনায় আগেই (গত ৬ মার্চ) ১৬ জনের বিরুদ্ধে বিএসইসি চেয়ারম্যানের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান বাদী হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলাটি করেছিলেন। এ মামলায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে জামিনে আছেন তারা।
মামলার ১৬ আসামির মধ্যে নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে এরই মধ্যে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে। আরেকজন নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার আবেদন করেছেন।
ওই মামলার আসামিদের বাইরে আরো ছয়জনকে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ এনে বরখাস্ত করা হয়েছে।