সিরিয়ায় সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ কি ইসলামপন্থার নতুন উত্থানের ইঙ্গিত দিচ্ছে? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা যায় যে ইসলামপন্থা এখন আর আগের মতো নির্দিষ্ট মতাদর্শের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই; বরং তরুণদের ধর্মীয় অনুভূতি ও বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি নতুন করে বিভিন্ন আরব শাসককে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। কিন্তু এই নতুন আন্দোলনের কোনো সুস্পষ্ট কৌশল এখনো গড়ে ওঠেনি।

সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ইসলামপন্থী সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বললে বোঝা যায়, একদিকে সেখানে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে, আবার অন্যদিকে গভীর অনিশ্চয়তাও রয়েছে।

‘ইসলামপন্থা’ শব্দটি ইসলামের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না। ইসলামপন্থা একটি রাজনৈতিক মতাদর্শ, যা শরিয়াহর ভিত্তিতে রাজনৈতিক ও সামাজিক কাঠামো গড়ে তোলার কথা বলে এবং রাজনৈতিকভাবে ইসলামের নামে জনমত সংগঠিত করার চেষ্টা করে।

গত ১০ বছরে ইসলামপন্থীদের জনপ্রিয়তা কমেছে। দ্বিতীয় আরব বসন্তের (২০১৮-১৯) সময় তা স্পষ্টভাবে বোঝা গেছে। সুদান, ইরাক, লেবানন এবং কিছুটা হলেও আলজেরিয়ায় ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। এতে স্পষ্ট হয় যে তাদের রাজনৈতিক কার্যকলাপ ও ধর্মীয় বয়ানের মধ্যে ফারাক আছে। তবে সিরিয়ার সাম্প্রতিক পরিবর্তন নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যা ইসলামপন্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে।

আরও পড়ুনসিরিয়ার নতুন শাসক শারা শুরুতেই যে চমক দেখালেন১৭ ডিসেম্বর ২০২৪

তুরস্কে অবস্থানরত মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুডের এক নেতা বলেন, সিরিয়া নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে, বিশেষ করে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করেও কোনো আশার আলো দেখতে পাননি। একসময়ের কঠোর শাসক, যাঁর পেছনে ছিল শক্তিশালী সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, আঞ্চলিক মিত্র ও শিয়া মিলিশিয়ারা; সেই আসাদ এখন ক্ষমতাচ্যুত। যদিও সিরিয়ার বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ইরান থেকে পুরোপুরি দূরে সরে আসেনি, তথাপি তারা আরব দেশগুলোর কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে পুনরায় প্রবেশ করতে পেরেছে।

মরক্কোর জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির এক নেতা সিরিয়ার অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) প্রধান আহমেদ আল-শারার অবস্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, শারার এখনো তাঁর মতাদর্শগত অবস্থান পরিষ্কার করেননি। তাঁর অনুসারীরা যদি তাঁর রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক অবস্থানের পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে না পারেন, তাহলে ভবিষ্যতে কী হবে?

তাঁর মতে, সিরিয়ার ইসলামপন্থীরা এখনো গণতান্ত্রিক উপায়ে আধুনিক রাষ্ট্রগঠনের লক্ষ্যে কাজ করেননি। তাঁদের সংগ্রাম বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাঁর মতে, যেখানে সংঘাত ও দমন-পীড়ন চলছে, সেখানে আধুনিক রাষ্ট্রগঠনের বিকাশ হতে পারে না।

তুরস্কে থাকা সিরিয়রা আসাদের পতনের সংবাদে উল্লাস করছেন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল মপন থ র জন ত ক অবস থ ন ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।

উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।

ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।

এএএম//

সম্পর্কিত নিবন্ধ