বগুড়া শহর যুবলীগের সাবেক নেতা ও পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মতিন সরকারের ১৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বগুড়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার দুটি ধারায় তাকে এই দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বগুড়ার স্পেশাল জজ মো.

শহিদুল্লাহ এই রায় দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট এস এম আবুল কালাম আজাদ।

রায়ের একটি ধারায় তিন বছর ও অপর ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং দুই কোটি ২৮ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এছাড়াও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত দুই কোটি ২৮ লাখ ৩১ হাজার ৩১৫ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়। 

মতিন সরকার পলাতক থাকায় তার অনুপস্থিতিতেই আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।

মতিন সরকার বগুড়ার চকসূত্রাপুর এলাকাল মজিবর রহমানের ছেলে এবং আলোচিত তুফান সরকারের ভাই।

জানা যায়, ২০১৯ সালে দুদক বগুড়া কার্যালয় থেকে মতিন সরকারকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য বলা হয়। সম্পদ বিবরণী দাখিল করলে তদন্ত শুরু করে দুদক। তদন্ত করতে গিয়ে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেলে দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মতিন সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট এস এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, মতিন সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় দুটি ধারার মধ্যে একটিতে ১০ বছর আরেকটিতে ৩ বছরের সাজা হয়েছে। এছাড়া ২ কোটি ২৮ লাখ ৩১ হাজার টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য বল গ ন ত ন সরক র র বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।

২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
  • অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা