বগুড়ায় যুবলীগ নেতা মতিনের ১৩ বছরের কারাদণ্ড
Published: 11th, March 2025 GMT
বগুড়া শহর যুবলীগের সাবেক নেতা ও পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মতিন সরকারের ১৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বগুড়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার দুটি ধারায় তাকে এই দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বগুড়ার স্পেশাল জজ মো.
বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট এস এম আবুল কালাম আজাদ।
রায়ের একটি ধারায় তিন বছর ও অপর ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং দুই কোটি ২৮ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এছাড়াও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত দুই কোটি ২৮ লাখ ৩১ হাজার ৩১৫ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়।
মতিন সরকার পলাতক থাকায় তার অনুপস্থিতিতেই আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
মতিন সরকার বগুড়ার চকসূত্রাপুর এলাকাল মজিবর রহমানের ছেলে এবং আলোচিত তুফান সরকারের ভাই।
জানা যায়, ২০১৯ সালে দুদক বগুড়া কার্যালয় থেকে মতিন সরকারকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য বলা হয়। সম্পদ বিবরণী দাখিল করলে তদন্ত শুরু করে দুদক। তদন্ত করতে গিয়ে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেলে দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মতিন সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট এস এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, মতিন সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় দুটি ধারার মধ্যে একটিতে ১০ বছর আরেকটিতে ৩ বছরের সাজা হয়েছে। এছাড়া ২ কোটি ২৮ লাখ ৩১ হাজার টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য বল গ ন ত ন সরক র র বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
আসাদুজ্জামান নূরের চারটি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দের আদেশ
সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর নামে থাকা ১৬টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, আসাদুজ্জামান নূরের অর্জিত সম্পদ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তদন্তকালে তাঁর নামে পাওয়া স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ যেন তিনি হস্তান্তর ও স্থানান্তর করতে না পারেন, সে জন্য তা জব্দ ও অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে বলা হয়েছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে গত ৩০ জুলাই মামলা করেছে দুদক। তাঁর নামে ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি রয়েছে। আরও রয়েছে তাঁর ১৬টি ব্যাংক হিসাব।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া তাঁর নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকায়। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুনআট মাসে ১৯২ একর জমি, ২৮ ভবন ও ৩৮ ফ্ল্যাট জব্দ ১৭ মে ২০২৫