রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ইউসিবি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য রয়েছে আকর্ষণীয় অফার ও ডিসকাউন্ট সুবিধা। নির্দিষ্ট ক্যাটেগরিতে কেনাকাটায় গ্রাহকরা বিশেষ ক্যাশব্যাক সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও মার্চেন্ট বিশেষত ফ্যাশন, ইলেকট্রনিক্স, রেস্টুরেন্ট, ট্র্যাভেল এবং হসপিটাল সেক্টরে বিশেষ ছাড়।

নির্বাচিত মার্চেন্ট ও ব্র্যান্ড থেকে কেনাকাটার ক্ষেত্রে সহজ কিস্তিতে পেমেন্টের সুবিধা। ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পেমেন্ট করলে রয়েছে অতিরিক্ত ছাড় ও ক্যাশব্যাক। রমজানে সর্বোচ্চ ইউসিবি কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য রয়েছে ঢাকা-দুবাই-ঢাকা, ঢাকা-থাইল্যান্ড-ঢাকা, ঢাকা-নেপাল-ঢাকা কাপল বিমান টিকেট, চার গুণ রিওয়ার্ড পয়েন্টসহ আকর্ষণীয় সব পুরস্কার। 

কোন কার্ডে কী সুবিধা 

ইউসিবি বিভিন্ন ধরনের ক্রেডিট কার্ড অফার করে, যা গ্রাহকদের প্রয়োজন অনুযায়ী ডিজাইন করা হয়েছে। এসব কার্ডে সব সময়ের জন্যই কিছু সুবিধা রয়েছে।

মাস্টারকার্ড ও ওয়ার্ল্ড ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরা গ্র্যান্ড সিলেট হোটেলে একজন সঙ্গীসহ এক রাত বিনামূল্যে থাকার সুযোগ পান। পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা লেনদেনের বিপরীতে ২ হাজার  টাকার গিফট ভাউচার, আন্তর্জাতিক হোটেল ও ডাইনিং লেনদেনে ১ শতাংশ ক্যাশব্যাক এবং ৫ হাজার টাকার বিশেষ বার্ষিক গিফট ভাউচার উপভোগ করতে পারেন। এ ছাড়া প্রথমবারের ব্যবহারকারীদের জন্য স্বনামধন্য ডাইনিং পার্টনারদের কাছে ১০ শতাংশ ক্যাশব্যাক, ইউসিবি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে তিনজন অতিথিসহ সীমাহীন প্রবেশাধিকার এবং বিশ্বব্যাপী ১৪ শতাধিক এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে  বছরে ১০টি বিনামূল্যে প্রবেশ সুবিধা, বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং শীর্ষস্থানীয় পাঁচ তারকা হোটেলে ‘বাই ওয়ান গেট ওয়ান’ সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া, এইচএসআইএতে রয়েছে বিনামূল্যে মিট অ্যান্ড গ্রিট পরিষেবা।

ভিসা সিগনেচার কার্ড ব্যবহারকারীরা সুপারস্টোর ও ডাইনিংয়ে ১০ শতাংশ ক্যাশব্যাক, ৫ হাজার সাইনিং রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ইউসিবি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে তিনজন অতিথিসহ সীমাহীন প্রবেশাধিকার এবং ১৪ শতাধিক গ্লোবাল এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে বছরে ১২টি বিনামূল্যে প্রবেশ সুবিধা পান। এ ছাড়া এইচএসআইএতে বিনামূল্যে মিট অ্যান্ড গ্রিট পরিষেবা, শীর্ষস্থানীয় পাঁচ তারকা হোটেলে বাই ওয়ান গেট ওয়ান সুবিধা এবং প্রতি ৫০ টাকা বা ১ ডলার লেনদেনে ২ রিওয়ার্ড পয়েন্ট অর্জনের সুযোগ রয়েছে। 

প্লাটিনাম ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকরা ইএমভি প্রযুক্তিসম্পন্ন কন্ট্যাক্টলেস ডুয়েল কারেন্সি কার্ডের সুবিধা পান, ইউসিবি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে সীমাহীন প্রবেশাধিকার, শীর্ষ পাঁচ তারকা হোটেলগুলোতে বাই ওয়ান গেট ওয়ান সুবিধা, ফ্রি প্রায়োরিটি পাস সদস্যপদ এবং ২৪ মাস পর্যন্ত ০ শতাংশ সুদে ইএমআই সুবিধা উপভোগ করতে পারেন। এ ছাড়া নির্দিষ্ট সংখ্যক লেনদেনের মাধ্যমে বার্ষিক ফি মওকুফ করা যায় এবং উপায় মোবাইল ওয়ালেটে বিনামূল্যে অর্থ সংযোজনের সুবিধা রয়েছে।

ব্যবসায়িক লেনদেনের জন্য ভিসা বিজনেস ক্রেডিট কার্ড অফার করা হয়, যা কার্ড ইস্যুর ৩০ দিনের মধ্যে প্রথম দুটি কেনাকাটার লেনদেনে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ ক্যাশব্যাক প্রদান করে। এ ছাড়া নির্বাচিত ফুয়েল স্টেশনে প্রতি বছর সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত ৫ শতাংশ ক্যাশব্যাক, প্রথম বছরের জন্য বার্ষিক ফি ছাড়, ফ্রি প্রায়োরিটি পাস সদস্যপদ এবং পাঁচ তারকা হোটেলে বিশেষ অফারের সুবিধা রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল প্রিপেইড কার্ড ব্যবহারকারীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছাড়াই আন্তর্জাতিক লেনদেনের সুযোগ দেয়, যেখানে টাকা লোড করে বিদেশি মুদ্রার মতো ব্যবহার করা যায় এবং বিশ্বব্যাপী মার্চেন্ট আউটলেট, অনলাইন স্টোর ও এটিএম থেকে নগদ উত্তোলনের সুবিধা রয়েছে। ডিজিটাল সুবিধার জন্য ইউসিবি-উপায় প্রিপেইড কার্ড রয়েছে, যা উপায় অ্যাপ বা এজেন্টের মাধ্যমে টাকা সংযোজন করা যায় এবং আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য নির্দিষ্ট সীমার আওতায় ব্যবহার করা সম্ভব। ইমপেরিয়াল ডেবিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য রয়েছে শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা, ইউসিবি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশাধিকার, লাইনবিহীন ব্যাংকিং সুবিধা, উচ্চতর উত্তোলন ও পেমেন্ট সীমা এবং বিভিন্ন চার্জ ও ফিতে ছাড় সুবিধা। 

নারীদের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা আয়মা ডেবিট কার্ড ইস্যু ও নবায়নের ক্ষেত্রে কম ফি প্রদান করে এবং সারা বছর বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার নিশ্চিত করে। ব্যবসায়িক গ্রাহকদের জন্য ভিসা বিজনেস ডেবিট কার্ড প্রতিদিন ২ লাখ টাকা পর্যন্ত নগদ উত্তোলনের সুবিধা দেয় এবং ইস্যুর ৩০ দিনের মধ্যে প্রথম দুটি কেনাকাটায় ৩০০ টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ ক্যাশব্যাক প্রদান করে। ইউসিবির এসব কার্ড গ্রাহকদের দৈনন্দিন লেনদেন, ভ্রমণ, কেনাকাটা ও ব্যবসায়িক প্রয়োজনীয়তা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

ইউসিবির কার্ড ডিভিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, তাদের  ক্রেডিট কার্ড লেনদেন গড়ে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ হারে বাড়ছে, যা গ্রাহকদের ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি আগ্রহ নির্দেশ করে। ডিজিটাল লেনদেন উৎসাহিত করতে আরও কী কী করণীয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, লেনদেন চার্জ কমিয়ে আরও বেশি গ্রাহককে ক্যাশলেস পেমেন্টে আকৃষ্ট করা যেতে পারে। গ্রাহকদের মধ্যে ডিজিটাল লেনদেনের সুবিধা ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রচারণা চালানো উচিত। পজ  মেশিন, কিউআর (ছজ) কোড পেমেন্ট ও এনএফসি প্রযুক্তি আরও ব্যাপকভাবে চালু করা যেতে পারে। ডিজিটাল লেনদেনকে আকর্ষণীয় করতে আরও বেশি ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট ও ইএমআই সুবিধা দেওয়া দরকার। ডিজিটাল পেমেন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উন্নত প্রযুক্তি ও ফ্রড মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা উচিত। তিনি জানান, ইউসিবি সবসময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে নতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে আসছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ, নিরাপদ ও আকর্ষণীয় করবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউস ব ড জ ট ল ল নদ ন প রব শ ধ ক র ক ল নদ ন র র দ র জন য গ র হকদ র ইউস ব ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ