পুলিশের ওপর আক্রমণ না করতে দেশবাসীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের কাজ করতে দেন, অনুগ্রহ করে আমাদের ওপর আক্রমণ করবেন না। আমরা এই সমাজের, আমরা এই দেশেরই নাগরিক। কীভাবে সমাজে স্থিরতা আসবে, যদি আমরা কাজ না করতে পারি। আমরা কাজ করতে না পারলে সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে কীভাবে আগাব।’

গাজীপুরের ভোগরা বাইপাস মোগরখাল এলাকায় শিল্প পুলিশ-২–এর কার্যালয়ে বিশেষ কল্যাণ সভায় আজ বৃহস্পতিবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন শিল্প পুলিশের আইজি ছিবাগত উল্লাহ। শিল্প পুলিশ সদর দপ্তর আয়োজিত সভায় উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম আওলাদ হোসেন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান, শিল্প পুলিশের ডিআইজি ইসরাইল হাওলাদার, গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।

শিল্প কারখানার শ্রমিকদের কোনো প্রকার গুজবে কান দিতে নিষেধ করে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, গুজব ছড়িয়ে কারখানা ভাঙচুর কার্যক্রমে অংশ নিয়ে যাঁরা এসব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনোভাবেই রাস্তা অবরোধ করার মতো জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী কোনো কাজকর্ম করা যাবে না।

বাহারুল আলম জানান, শ্রমিকদের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন–ভাতা ও ঈদ বোনাস ২০ মার্চের মধ্যে দেওয়ার পূর্ববর্তী প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সংশ্লিষ্ট মালিকদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। ঈদের ছুটিতে শ্রমজীবী মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি যেতে পারেন, সে জন্য শিল্প, জেলা ও মহানগর পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দাবি আদায়ের জন্য শ্রমিকদের রাস্তা না আটকানো এবং জনগণের উৎসব আয়োজনে বিঘ্ন হয়ে না দাঁড়াতে অনুরোধ করেন। এসব কাজের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

জুলাই অভ্যুত্থানে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আইজিপি বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে আমাদের কিছু সিনিয়র অফিসার, মোস্টলি সিনিয়ার অফিসার অতি উৎসাহ দেখিয়েছেন। আমি আওয়ামী লীগ-বিএনপি কিছু বুঝি না। কিন্তু ওনাদের রাজনৈতিক আনুগত্যের জন্য পুরো পুলিশ কলঙ্কিত হয়েছে। সারা বিশ্বে এখন বলে যে বাংলাদেশ পুলিশ এত নির্মম কীভাবে হলো? আমিও তো পুলিশ। এই দায়ভারটা আমার ওপরও পড়ে। আমি অবসরে থাকলেও সেই দায়ভারটা আসে। আমার আত্মীয়স্বজন বলেন, “তোমরা কী করো? তোমরা এগুলি কী করছ?” আমাদের যা করার কথা ছিল, আমরা তার কিছুই করি নাই। আমরা মানুষের বিরুদ্ধে গেছি। এটা কিছু লোকের উচ্চ বিলাস, কিছু লোকের অন্ধ এবং অন্যায় আনুগত্যের জন্য এটা হয়েছে।’

আইজিপি বাহারুল আলম আরও বলেন, ‘পুলিশ কাজ করতে যাচ্ছে, আইন প্রয়োগ করতে যাচ্ছে। সেখানে আক্রমণের শিকার হচ্ছে; আসামি ছিনিয়ে নিচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশ যখন বলছে, “আপনি উল্টো দিক দিয়ে আসবেন না, আপনি আইন মেনে চলেন।’ সেখানে ট্রাফিক পুলিশের ওপরও চড়াও হচ্ছে। আইন না মানার একটা প্রবণতা চলে আসছে কেন? তারা মনে করছে, পুলিশ জনবিরোধী কাজ করেছে, এখন আমরা আমাদের মতো চলব। পুলিশ লাগবে না, এটা পুরো রং। একটা সভ্য দেশ পুলিশ ছাড়া চলতে পারে না। দেশের মানুষকে বুঝতে হবে, দেশের অপরাধ দমন যদি না করা হয়, শৃঙ্খলা যদি ফিরে না আসে, তাহলে কোনো নাগরিক শান্তিতে থাকতে পারবে না।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব হ র ল আলম ক জ করত আম দ র ক জ কর আইজ প

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রীবরদীতে ভারতীয় জিরা নিয়ে তুলকালাম

শেরপুরের শ্রীবরদী সীমান্তে ১৬ বস্তা ভারতীয় চোরাই জিরা ও কাপড় আটক করেছেন স্থানীয়রা। পরে স্থানীয় স্বার্থান্বেষী একটি মহল আত্মসাতের উদ্দেশ্যে সেসব জিরা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে অন্য একটি পক্ষ আবার সেই জিরা আটক করে। এ নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার ভায়াডাঙ্গা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। 

পরবর্তীতে হাসধরা এলাকায় দ্বিতীয়বার আটক হয়। এসময় স্থানীয়রা বেশকিছু বস্তা জিরা লুট করে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা পুলিশ ও বিজিবিকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে মালামাল উদ্ধার করে তাওয়াকুচা বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। 

স্থানীয়রা জানান, রাত ৯টার দিকে ভারতীয় চোরাই জিরা ও কাপড় বোঝাই একটি ট্রলি ঝিনাইগাতী থেকে ভায়াডাঙ্গা বাজার দিয়ে শ্রীবরদী হয়ে শেরপুরের দিকে যাচ্ছিলো। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে ট্রলিটি আটক করে। এসময় ট্রলি চালক কৌশলে পালিয়ে যায়।

সেসময় স্থানীয় অপর একটি পক্ষ সুকৌশলে আরেক চালককে দিয়ে ট্রলিটি সরিয়ে নিয়ে যায়। ঘটনা জানাজানি হওয়ার সাথে সাথে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে হাসধরা এলাকায় ট্রলিটি আবার আটক হয়। এসময় প্রায় অর্ধেক মালামাল লুট করে এক পক্ষ। 

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইমন আকন্দ বলেন, “আমরা ভায়াডাঙ্গা বাজারে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। পরবর্তীতে স্থানীয় কয়েকজন নেতা নতুন করে অন্য ড্রাইভার দিয়ে ট্রলি সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা অবৈধ পাচার হওয়া মালামাল জব্দ হোক এটাই চাই। এছাড়াও যারা মালামাল লুট করেছে এবং এই পাচারের সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি করছি।” 

এ ব্যাপারে শ্রীবরদী তাওয়াকুচা বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার আতিয়ার রহমান বলেন, “আমরা স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৬ বস্তা অবৈধ মালামাল জব্দ করেছি। এই ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা চলমান আছে।”

শ্রীবরদী থানার উপ-পরিদর্শক সুলতান আহমেদ বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার পূর্বেই বিজিবি মালামাল জব্দ করেছে। এই ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”

ঢাকা/তারিকুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যৌতুকের জন্য জখম: ভুক্তভোগী নারীর জন্য বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতা তুলে দিতে হবে
  • শ্রীবরদীতে ভারতীয় জিরা নিয়ে তুলকালাম
  • যুগপৎ কর্মসূচির বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি: জামায়াত নেতা তাহের
  • জামায়া‌তের তিন‌ দি‌নের কর্মসূচি ঘোষণা