লক্ষ্মীপুরে রোজা না রেখে দোকানে খাবার খাওয়ার সময় কয়েকজনকে ওঠবস করানোর ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন জেলা বণিক সমিতির নেতা আবদুল আজিজ। তবে এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা থানায় কোনো অভিযোগ করেননি।

গতকাল বুধবার রাতে জেলা পুলিশের হস্তক্ষেপে সদর থানা এলাকায় ভুক্তভোগীদের মধ্যে দুজনকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমা চান লক্ষ্মীপুর বণিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল আজিজ।

আরও পড়ুনলক্ষ্মীপুরে দিনের বেলায় পানাহার করায় লোকজনকে ‘শাস্তি’ দিলেন ব্যবসায়ী নেতা১৭ ঘণ্টা আগে

এর আগে রমজান মাসে পানাহার করায় গতকাল দুপুরে লাঠি হাতে ওই খাবার হোটেলে গিয়ে কয়েকজন ব্যক্তিকে কান ধরে ওঠবস করান আবদুল আজিজ। তাঁর নেতৃত্বে শহরের চকবাজার এলাকার দোকানগুলোতে এ অভিযান চালানো হয়।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মোন্নাফ বলেন, ‘কান ধরে ওঠবস করানোর ঘটনায় আজিজকে থানায় ডেকে আনা হয়েছিল। ভুক্তভোগী দুজনকেও এনেছিলাম। কেউ তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দেননি। এ ছাড়া আজিজ নিজেও ক্ষমা চেয়েছেন। এতে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’

আবদুল আজিজের ক্ষমা চাওয়ার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, আজিজ ভুক্তভোগী মুনছুরুল হক ও সাজুকে জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চাচ্ছেন। এ সময় আবদুল আজিজ বলেন, ‘আমি আসলে যে কাজটি করেছি, এটি অন্যায়, অপরাধ। এটা ধর্মীয় অনুভূতি, সে জন্য এটা আমার করা ঠিক হয়নি। এ জন্য আমি ওনাদের কাছে ক্ষমা চাই। ওনারা যেন আমাকে ক্ষমা করে দেন। আমি এ ধরনের কাজের পুনরাবৃত্তি করব না। এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত হব না।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ডাকাত–আতঙ্কে ঝালকাঠি পৌরসভায় মাইকিং, মব তৈরি করে শ্রমিকদের মারধরের অভিযোগ

‘এলাকায় ডাকাত পড়েছে’ বলে গতকাল সোমবার রাতে ঝালকাঠি শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে কয়েকটি মসজিদে মাইকিং করা হয়। পরে এলাকার লোকজন দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। পরে তাঁরা ৯ জন নির্মাণশ্রমিককে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেন। রাত একটার দিকে পৌরসভার বাসন্ডা ঝোড়াপোল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

তবে সদর থানা–পুলিশ জানিয়েছে, গুজব ছড়িয়ে পড়ায় মানুষের মধ্যে ডাকাত–আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। জেলার কোথাও ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। আটক ওই ৯ জন নিরীহ শ্রমিক। এ সম্পর্কে ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, আটক ব্যক্তিরা নিরীহ শ্রমিক। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঝোড়াপোল এলাকায় রাত একটার দিকে বাসন্ডা খালের তীরবর্তী জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য বনি আমিন বাকলাইয়ের বাংলো বাড়ির সামনের ঘাটলায় নির্মাণশ্রমিকদের মালামালবোঝাই একটি ট্রলার থামে। এ সময় আইনজীবী বনি আমিন সিসিটিভির ফুটেজে বিষয়টি দেখতে পেয়ে মুঠোফোনে এলাকার কয়েকজনকে জানান। তখন এলাকার মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে ৯ জন শ্রমিককে আটক করে পিটুনি দেন। পরে তাঁরা পুলিশকে বিষয়টি জানান। পুলিশ গিয়ে ওই শ্রমিকদের উদ্ধার করে থানায় আনে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

এদিকে শ্রমিকদের আটক করার খবর শুনে স্থানীয় ঠিকাদার ফাইজুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি এলাকার লোকজনকে জানান, ওই ৯ শ্রমিক তাঁর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। এরপরও তাঁকে লাঞ্ছিত করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

এ বিষয়ে ফাইজুল ইসলাম বলেন, ‘পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে আমার একটি সেতু নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। বিল বকেয়া থাকায় কাজ বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিকদের এলাকায় চলে আসতে বলেছিলাম। রাত গভীর হওয়ায় আইনজীবী বনি আমিনের বাড়ির সামনের ঘাটলায় শ্রমিকদের ট্রলার ভেড়াতে বলি। এ সময় নিরীহ শ্রমিকদের ডাকাত বানিয়ে মব জাস্টিস করা হয়েছে।’

বনি আমিন বাকলাই বলেন, তাঁদের (শ্রমিক) সন্দেহজনক আচরণ ও চলাচলের কারণে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে দিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে বন বিভাগের জমি দখলের অভিযোগ
  • ডাকাত–আতঙ্কে ঝালকাঠি পৌরসভায় মাইকিং, মব তৈরি করে শ্রমিকদের মারধরের অভিযোগ