গাজীপুরে এক রাতে দুই বাড়ি লুট ও পাঁচ গরু চুরি
Published: 11th, November 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের দুটি বাড়ি লুট করেছে চোররা। রবিবার (৯ নভেম্বর) রাতে মাওনা ইউনিয়নের শিরিশগুড়ি গ্রামের বাসিন্দা বিএনপি নেতা আলী আকবর এবং রাইসুলের বাড়ি থেকে স্বর্ণালঙ্কার ও বিভিন্ন মালামাল লুট করে তারা। একই রাতে ইউনিয়নটির বারতোপা গ্রামের কৃষক আব্দুল কাশেমের গোয়ালঘরের তালা কেটে পাঁচটি গরু নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
স্থানীয় সূত্রে জানায়, শিরিশগুড়ি গ্রামের বাসিন্দা এবং মাওনা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য আলী আকবরের বাড়িতে রবিবার মধ্যরাতে তালা কেটে প্রবেশ করে চোররা। তারা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। পরে তারা একই গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে রাইসুলের বাড়িতে গিয়ে একই কায়দায় চুরি হয়। দরজার তালা কেটে ঘরে ঢুকে নগদ টাকা ও কাপড়সহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে চোরেরা।
আরো পড়ুন:
গজারিয়ায় পরিবারকে জিম্মি করে অর্ধকোটি টাকার মালামাল লুট
ভাড়া নেওয়ার কথা বলে বাসায় ঢুকে গৃহবধূকে বেঁধে ডাকাতি
সোমবার (১০ নভেম্বর) বিএনপি নেতা আলী আকবর বলেন, “মধ্যরাতে চোরেরা তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। তারা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে গেছে।”
অপর ভুক্তভোগী রাইসুল জানান, তার বাড়ির দরজার তালা কেটে ঘরে ঢুকে নগদ টাকা ও কাপড়সহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে চোরেরা।
এদিকে, মাওনা ইউনিয়নের পাশের বারতোপা গ্রামের কৃষক আব্দুল কাশেমের গোয়ালঘরের তালা কেটে পাঁচটি গরু পিকআপে করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। চুরি হওয়া গরুগুলোর আনুমানিক মূল্য প্রায় ছয় লাখ টাকা।
কৃষক আব্দুল কাশেম জানান, ভোর ৪টার দিকে তিনি ঘুম থেকে উঠে গরুগুলোর খোঁজ নেন এবং কিছুক্ষণ পর আবার ঘুমিয়ে পড়েন। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে উঠে দেখেন গোয়ালঘরে একটি গরুও নেই। পরে ভাইকে নিয়ে মাওনা চৌরাস্তা গিয়ে খোঁজ নিলে স্থানীয়রা জানান, কিছুক্ষণ আগেই একটি পিকআপে গরুগুলো ঢাকার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চুরি হওয়া গরুগুলোর মধ্যে তিনটি গাভি ও দুটি ষাঁড় ছিল। যেগুলোর মোট মূল্য প্রায় ছয় লাখ টাকা।
আব্দুল কাশেম বলেন, “পাঁচটি গরুই ছিল আমার সব। এখন আমি একেবারে নিঃস্ব। আমি চাই, চোরদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হোক।”
মাওনা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রুহুল আমীন বলেন, “ভোররাতে কৃষক আব্দুল কাশেমের গোয়ালঘর থেকে পাঁচটি গরু চুরি হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। মাঝেমধ্যেই এমনভাবে পিকআপে করে গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। পুলিশ প্রশাসনের উচিত রাতে টহল ও নজরদারি বাড়ানো।”
শ্রীপুর থানার চকপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান বলেন, “পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভুক্তভোগী কৃষক লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চোরদের শনাক্তে আমরা ইতোমধ্যে অনুসন্ধান শুরু করেছি।”
ঢাকা/রফিক/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ নগদ ট ক গ য় লঘর ল ট কর ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরিবারের সদস্যরা গভীর ঘুমে, একই গ্রামের তিন বাড়িতে চুরি
দুপুরের পর দুই পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর গতকাল রোববার দুপুরে একটি বাড়িতে এবং রাতে দুটি বাড়িতে চুরি হয়েছে। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শিরিশগুড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিরিশগুড়ি গ্রামের রাইসুল ইসলাম, তাঁর বাড়ি থেকে প্রায় ৪০০ মিটার দূরে আলী আকবরের বাড়ি ও পার্শ্ববর্তী মো. ফরহাদের বাড়িতে চুরি হয়েছে। তিন বাড়ির মধ্যে দুই বাড়ির সদস্যরা ঘটনার আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং একপর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়েন।
আলী আকবর প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল তাঁর মা মোসা. সুফিয়া ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী মোসা. দোলন বাড়িতে ছিলেন। চোরেরা বাড়ির দুটি ঘর থেকে এক ভরি স্বর্ণালংকার ও সন্তানদের জমানো ৪০ হাজার টাকা চুরি করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে তাঁরা দেখেন, পাশের দুটি ঘরের দরজার তালা খোলা। এরপর ভেতরে গিয়ে সবকিছু এলোমেলো দেখতে পান। গতকাল সন্ধ্যায় তাঁর মা ও ভাবি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। রাতে তাঁরা শারীরিকভাবে দুর্বল অনুভব করায় একটানা ঘুমিয়েছেন। তাঁদের ধারণা, দিনের বেলা কেউ খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়েছিলেন।
মো. ফরহাদ জানান, তিনি গরুর ব্যবসা করেন। গতকাল সকালে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। দুপুরে গরু না কিনে টাকাসহ বাড়িতে এসে দেখেন, তাঁর পরিবারের চার সদস্য বিছানায় দুর্বল হয়ে পড়ে আছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েন। এর কিছুক্ষণ পর ফরহাদ নিজেও ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুম ভাঙলে জানতে পারেন, তিনি বাড়ি ফিরে আসার আগে বিছানার নিচ থেকে ৩৫ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, কেউ হয়তো খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে অথবা অন্য কোনোভাবে সবাইকে অসুস্থ করে চুরির ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন।
রাইসুল ইসলাম বলেন, তাঁর বাড়ির একটি ঘরে কেউ ছিল না। ওই ঘরটি রাতে তালা দিয়ে রাখা হয়। আজ সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলতে গিয়ে দেখেন, সেটি বাইরে থেকে আটকানো। এরপর পাশের বাড়ির চাচিকে ফোন করে দরজা খুলতে বলেন। দরজা খোলার পর দেখা যায়, তাঁদের ঘরের বিপরীত দিকের অপর ঘরটির দরজা খোলা। সেখানে জিনিসপত্র ছড়ানো–ছিটানো। মূল্যবান জিনিস চুরি করে নিয়ে গেছে চোরেরা।
উল্লেখ্য, পাঁচ মাস আগে ওই গ্রামের পাশের গ্রাম সিমলাপাড়ায় জামাল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে একই কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটেছিল। তখন জামাল উদ্দিনসহ পরিবারের পাঁচ সদস্য হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসাও দিতে হয়েছে। ওই রাতে তাঁদের বাড়িতেও চুরির ঘটনা ঘটে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহম্মদ আবদুল বারিক বলেন, খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।