ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী আন্দোলনে পুলিশি হামলার বিচার, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে মশাল মিছিল করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট। 

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে এ মিছিল শুরু হয়ে ভিসি চত্বর, নীলক্ষেত, কাঁটাবন, শাহবাগ হয়ে টিএসসিতে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।

মিছিলে ‘হত্যাকারীদের বিচার করো, করতে হবে’, ‘খুন ধর্ষণ, নিপীড়ন, রুখে দাও বাংলাদেশ’, ‘খুন-ধর্ষণ হয়নি শেষ, গর্জে উঠো বাংলাদেশ’, ‘আমার বোন মরল কেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জবাব দাও’, ‘অবিলম্বে জাহাঙ্গীরকে অপসারণ করতে হবে’, ‘শিশুরা মরে কেন, প্রশাসন জবাব দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন:

শাস্তি পেতে যাচ্ছেন ঢাবির শতাধিক নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতা

কিউএস র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রথমবারের মতো ঢাবির ৯ বিভাগ

মিছিল পরবর্তী সমাবেশে শিক্ষার্থীরা তাদের তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো— ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী আন্দোলনসহ দেশব্যাপী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশি হামলার বিচার, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার; অব্যাহত ধর্ষণ-নিপীড়ন ও জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ; চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা।

এ সময় ধর্ষণের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করা মাগুরার শিশুটির মৃত্যুতে ক্ষোভ প্রকাশ করে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।

গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদ চৌধুরী বলেন, “আমাদের বোনের যন্ত্রণার আগুন আমরা এ মশালের মাধ্যমে প্রজ্বলিত করেছি। তার কি অধিকার ছিল না, নিরাপদে বেঁচে থাকার? রাষ্ট্রের কি দায়িত্ব ছিল না তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার?”

তিনি বলেন, “রাষ্ট্র শিশুটির নিরাপত্তা দেয়নি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। ব্যর্থতা শিকার করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে। পাশাপাশি ধর্ষণ-নিপীড়নের অবসান ঘটিয়ে নিরাপদ বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে হবে।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’

ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।

আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।

আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।

রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।

রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।

কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?

কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।

রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।

রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।

এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।

রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ