বিচারহীনতার কারণেই দেশে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটছে। এসব ধর্ষণ-হত্যা বন্ধের দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। পাশাপাশি এসব ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও নারীবিদ্বেষী প্রচারণা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

শনিবার রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) শোক দিবস উপলক্ষে কালো পতাকা মিছিল ও সমাবেশ থেকে এসব কথা বলা হয়।

মাগুরায় পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে শিশুর মৃত্যুসহ নারী ধর্ষণ, হত্যা, নির্যাতনের প্রতিবাদে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্তি ভবন থেকে শোকমিছিল শুরু হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শেষ হয় এবং সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশে জেলা ও উপজেলা কার্যালয়েও কালো পতাকা উত্তোলন ও সমাবেশ করে সিপিবি।

সমাবেশে সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের লড়াই শেষ হয়নি। যতক্ষণ পর্যন্ত নারী-শিশুসহ দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হবে, ততক্ষণ এ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

এ সময় তিনি মাগুরায় শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও নারীবিদ্বেষী প্রচারণা বন্ধ করার দাবি করেন।

শাহ আলম বলেন, দেশের সব গণতান্ত্রিক লড়াই-সংগ্রামে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও অতীতের সরকারের মতো বর্তমান সরকারের সময়েও নারী-শিশু ধর্ষণ, নির্যাতন অব্যাহত আছে।

সমাবেশে সিপিবি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, দ্রুত সব ধর্ষণ, হত্যার বিচারকাজ সম্পন্ন করতে হবে। বিচারহীনতার কারণেই এসব ঘটনা বেড়েই চলেছে। এসব ধর্ষণ-হত্যা বন্ধে দায়িত্ব নিতে হবে সরকারকেই।

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সহসাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী, সিপিবির সম্পাদক লুনা নূর, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জলি তালুকদার। সমাবেশ পরিচালনা করেন সিপিবির সম্পাদক সাজেদুল হক রুবেল।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা

রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।

এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।

এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।

সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।

রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ