সংস্কার নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের কাছে মতামত দিয়েছে আরও ৪ দল
Published: 16th, March 2025 GMT
সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর বিষয়ে আরও চারটি রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে তাদের মতামত দিয়েছে। এ নিয়ে কমিশনের কাছে ১১টি দল তাদের মতামত দিল।
পাঁচটি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে মতামত চেয়ে ৬ মার্চ ৩৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে ‘স্প্রেড শিট’ (ছক আকারে) পাঠিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। ১৩ মার্চের মধ্যে তাদের মতামত জানাতে অনুরোধ করা হয়েছিল। সেই সময়ের মধ্যে সাতটি দল মতামত জানিয়েছিল।
আজ রোববার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে আরও চারটি দল তাদের মতামত জমা দিয়েছে। আজ পর্যন্ত মোট ১১টি রাজনৈতিক দলের মতামত পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১৮টি রাজনৈতিক দল পূর্ণাঙ্গ মতামতের জন্য অতিরিক্ত কয়েক দিন সময় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে কমিশন পুনরায় যোগাযোগ করছে।
ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, নতুন করে যে চারটি দল মতামত দিয়েছে সেগুলো হলো—রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, বাংলাদেশ জাসদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। এর আগে এলডিপি, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে ওলামা ইসলাম বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, এনডিএম ও আমজনতার দল মতামত জানিয়েছিল। যে দলগুলো ইতিমধ্যে মতামত দিয়েছে তাদের নিয়ে চলতি সপ্তাহ থেকে আলোচনা শুরু করার চিন্তা আছে। আগামীকাল সোমবার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের অন্যতম লক্ষ্য দেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনা। এ লক্ষ্যে সংস্কার প্রস্তাব তৈরির জন্য গত বছরের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গঠন করে সরকার।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে ছয়টি কমিশন তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এসব কমিশনের প্রধানদের নিয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে সরকার। ঐকমত্য কমিশন বলেছে, রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার কমিশনের যেসব সুপারিশে একমত হবে, সেগুলোর ভিত্তিতে তৈরি হবে ‘জুলাই চার্টার’ বা জুলাই সনদ।
পুলিশ সংস্কার কমিশন বাদে বাকি পাঁচটি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো ছক আকারে দলগুলোর কাছে পাঠিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছিল। প্রতিটি সুপারিশের ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছিল। প্রথমটি হলো সংশ্লিষ্ট সুপারিশের বিষয়ে দলগুলো একমত কি না। এতে তিনটি বিকল্প রাখা হয়েছে। সেগুলো হলো ‘একমত’, ‘একমত নই’ এবং ‘আংশিকভাবে একমত’। এ তিনটি বিকল্পের যেকোনো একটিতে টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত জানাতে বলা হয়েছে।
দ্বিতীয়টি হলো প্রতিটি সুপারিশের বিষয়ে সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। এই ক্ষেত্রে ছয়টি ঘর রয়েছে। সেগুলো হলো সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়ন ‘নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের সময় গণভোটের মাধ্যমে’, ‘গণপরিষদের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের পরে সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে’ এবং ‘গণপরিষদ ও আইনসভা হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে’। এসব ঘরের যেকোনো একটিতে টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত দিতে বলা হয়েছে। এর বাইরে প্রতিটি সুপারিশের পাশে দলগুলোর ‘মন্তব্য’ দেওয়ার একটি জায়গা রাখা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মত মত দ য় ছ ত দ র মত মত মত মত জ ন মত মত চ দলগ ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নিকে অভিনন্দন জানালেন ট্রাম্প
কানাডার সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই নেতা শিগগিরই বৈঠক করার বিষয়ে একমত হয়েছেন।
আশা করা হচ্ছে, নির্বাচন–পরবর্তী সময়ে দুই দেশ নতুন অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা শুরু করবে।
কানাডার সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম সিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডার ওপর ট্রাম্পের বাণিজ্য শুল্ক আরোপ এবং দেশটির সার্বভৌমত্ব নিয়ে তাঁর একের পর এক মন্তব্যের বিষয়টিই মূলত এবারের নির্বাচনী প্রচারণার প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল। শেষ পর্যন্ত কার্নির লিবারেল পার্টি সে নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। তবে তারা এককভাবে সরকার গঠন করার মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।
নির্বাচনের এ ফল কার্নির জন্য দুটো চ্যালেঞ্জ হাজির করেছে। তাঁকে যেমন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দর–কষাকষি করতে হবে, আবার সেই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ নানা সমস্যা মোকাবিলাও করতে হবে। কার্নির দলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। আর তাই সরকার গঠন করার জন্য কার্নিকে এখন অন্য রাজনৈতিক দলের সমর্থন আদায় করতে হবে।
নির্বাচনের পর প্রথম ফোনালাপে ট্রাম্প কার্নিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর আরও বলেছে, ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্ব’ সম্পর্কে দুই নেতা একমত হয়েছেন।
লিবারেলদের হাউস অব কমন্সে আইন পাস করাতে অন্যদের সমর্থনের ওপর নির্ভর করতে হবে। যেকোনো আস্থা ভোটে পরাজয়ের আশঙ্কাও আছে তাদের।
লিবারেলরা দুর্বল বামপন্থী দল নিউ ডেমোক্র্যাটদের কাছ থেকে সহযোগিতা পেতে পারে। অতীতেও দলটি তাদের সমর্থন দিয়েছে। এ ছাড়া ব্লক কেবেকোয়া দলের কাছ থেকেও সমর্থন পেতে পারে তারা।
কানাডার পার্লামেন্টে এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার জন্য একটি দলকে ১৭২টি আসনে জয়ী হতে হয়। লিবারেলরা ১৬৯টি আসনে এগিয়ে আছে।
এরপরও এ ফলকে দলটির জন্য ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, কয়েক মাস আগেও এ দল ধ্বংসের পথে বলে মনে হচ্ছিল।
কানাডা ও যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা কার্নি। গত মাসে দলের নেতা জাস্টিন ট্রুডো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করার পর তিনি তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। তিনিই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন। একটি বিষয়ে লিবারেলদের জন্য পার্লামেন্টে সমর্থন পাওয়া সহজ হতে পারে। তা হলো মার্কিন শুল্কের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া শ্রমিক ও শিল্প খাতকে সহায়তা দিতে আইন পাস করা। নির্বাচনী প্রচারণার সময় এ বিষয় নিয়ে সব দলই একমত ছিল।
সোমবারের নির্বাচনে চার বছর আগের তুলনায় লিবারেল ও কনজারভেটিভ দুই দলেরই ভোট বেড়েছে।
নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। দলটি ১৪৪টি আসনে এগিয়ে আছে। তারা পার্লামেন্টে আনুষ্ঠানিক বিরোধী দল হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।
কানাডার দুই বড় দলের প্রতি জনসমর্থন বাড়ার কারণে ছোট দলগুলো, বিশেষ করে এনডিপি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের ভোট প্রায় ১২ শতাংশ কমে গেছে।
এবারের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৬৭ শতাংশ।
কনজারভেটিভ নেতা পিয়েরে পলিয়েভ্রে এবং এনডিপি নেতা জগমিত সিং—দুজনই তাঁদের আসন হারিয়েছেন। সিং বলেছেন, তিনি বামপন্থী দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াবেন।