১৩ জেলায় মৃদু তাপপ্রবাহ, ঢাকায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি
Published: 17th, March 2025 GMT
দেশের ১৩টি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে এবং পাঁচটি বিভাগের দু-একটি স্থানে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির ও বিক্ষিপ্ত শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার (১৭ মার্চ) আবহাওয়াবিদ ড. মো. ওমর ফারুকের সই করা ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এই পূর্বাভাসের মধ্যে দুপুরের পর থেকে ঢাকার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। কোথাও কোথাও গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রাঙামাটি, খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও পটুয়াখালীতে তাপপ্রবাহের প্রভাব দেখা যাচ্ছে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বিস্তৃত রয়েছে এবং মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
আরো পড়ুন:
ভরা ফাগুনের বৃষ্টিতে আমের মুকুলের ক্ষতির শঙ্কা
খুলনায় দিনভর বৃষ্টি, রবিশস্যের ক্ষতির শঙ্কা
সোমবার (১৭ মার্চ) রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেট বিভাগের দু-একটি স্থানে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের কিছু এলাকায় ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। তবে দেশের অন্যান্য স্থানে আংশিক মেঘলা আকাশের সঙ্গে আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে, তবে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
বুধবার (১৯ মার্চ) সিলেট বিভাগের কিছু এলাকায় ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। তবে দেশের অন্যত্র আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে এবং দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকা/হাসান/রাসেল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।