Prothomalo:
2025-09-18@09:22:31 GMT

রমজানে নবীজির (সা.) সফর হলে

Published: 17th, March 2025 GMT

যুদ্ধাভিযান ছাড়াও রমজানে নানা কারণে নবীজির (সা.) সফর হতো। এ-সময় তিনি কখনো রোজা রাখতেন, কখনো রাখতেন না, বরং খাওয়া-দাওয়া করতেন এবং অন্যদেরও আদেশ দিতেন রোজা না-রাখার। ইবনে আব্বাস তরফ থেকে তাউস বর্ণনা করেন, ‘নবীজি (সা.) রমজানে রোজা রেখে সফরে বের হলেন, পথে উসফান এলাকায় পৌঁছে পানির পাত্র আনতে বললেন। সবাইকে দেখাতে প্রকাশ্যে পানি পান করলেন তিনি। মক্কায় পৌঁছা অবধি তিনি পানাহার স্বাভাবিক রাখলেন। ইবনে আব্বাস বলতেন, ‘নবীজি (সা.

) রমজানের সফরে রোজা রেখেছেনও, আবার ভেঙেছেনও। সুতরাং এ-সময় যার ইচ্ছা রাখবে, যার ইচ্ছা রাখবে না। (বুখারি, হাদিস: ৪২৮৯)

 আল্লাহ বলেছেন, ‘আর যে অসুখে পড়বে হবে বা সফরে থাকবে, সে অন্য দিনগুলোতে সে-সময়ের (রোজার) সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ চান, কঠিন না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)

 নবীজি (সা.) কখন রোজা রাখতেন

 আবু দারদা বলেন, ‘রমজানে আমরা প্রচণ্ড তাপের মধ্যে রাসুলের (সা.) সঙ্গে সফরে বের হলাম। খরতাপ এত বেশি ছিল যে, আমাদের কেউ কেউ মাথায় হাত দিচ্ছিল। রাসুল (সা.) ও আবদুল্লাহ বিন রাওয়াহা ছাড়া আমাদের কেউ সেদিন রোজাদার ছিলেন না। (মুসলিম, হাদিস: ১,১২২)

হাদিসটি প্রমাণ করে যে, যদি কষ্টের সম্ভাবনা না থাকে, রোজা না রাখার মতো কিছু না ঘটে, তবে রোজা রাখাই ভালো। (রদ্দুল মুহতার, ২/৪২১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া, ৩/৪০৩)

তবে রোজা না রাখার কারণ থাকলে না রাখাই ভালো। যেমন নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ পছন্দ করেন তার দেওয়া সহজটা যাপন করা হোক, পাপে লিপ্ত হওয়াকে পছন্দ করেন না। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ৫,৮৬৬)

আরও পড়ুনমহানবী (সা.)-কে ভালোবাসার ৭টি নিদর্শন০৬ মার্চ ২০২৫

কখন রোজা রাখা তিনি পছন্দ করতেন না

 মক্কা বিজয়কালে রমজান মাসে নবীজি (সা.) রোজা রাখেননি। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রোজা রেখে তিনি ‘কুদাইদ’ ও ‘উসফান’ এলাকার মধ্যবর্তী জলাধারে নেমে রোজা ভেঙে ফেললেন, এরপর মাস শেষ হওয়া অবধি তিনি খাবার-পানি স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করেছেন করেছেন। (বুখারি, হাদিস: ৪,২৭৫)

 আনাস (রা.) বলেন, ‘আমরা তখন নবীজির (সা.) সঙ্গে ছিলাম, আমাদের মধ্যকার অনেকে নিজের কাপড় দিয়ে ছায়া নিচ্ছিল। যারা রোজা ছিলেন তারা নিষ্ক্রিয় থাকলেন, আর যারা খাবার পানি গ্রহণ করলেন তারা বাহন হাঁকিয়ে কাজে আত্মনিয়োগ করলেন এবং প্রচুর শ্রম দিলেন তারা। নবীজি (সা.) বললেন, পানাহারকারীরা আজ সওয়াব নিয়ে গেছে।’ (বুখারি, হাদিস: ২৭৩৩)

 তাই জিহাদ বা ইসলামের জন্য শক্তি খরচ করতে হবে এমন সময়ে রোজা রাখা আলেমগণ মাকরুহ বলেছেন। কারণ, তাতে দুর্বল হয়ে মূল উদ্দেশ্য সিদ্ধিতে অসফল হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। (রদ্দুল মুহতার, ২/৪২১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া, ৩/৪০৩)

আরও পড়ুন  যেমন ছিল মহানবীর (সা.) সাহরি১১ মার্চ ২০২৫

কখন রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন

 যদি রোজা রাখা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে এবং পানাহার আবশ্যক হয়, তখন পানাহার করা বাধ্যতামূলক। আল্লাহ কারও ওপর বিধান চাপিয়ে দেন না, এমনকি নিজের ওপর তেমন বিধান বানিয়ে নেওয়াও বৈধ নয়। কঠিন অবস্থায় রোজা পালনকারীকে লক্ষ্য করে নবীজি (সা.) বললেন, ‘এরা পাপী, এরা পাপী।’ (মুসলিম, হাদিস: ১,১১৪)

 এক ব্যক্তি এমন কঠিন দুঃসাধ্য সময়ে রোজা রেখেছে এবং একদল তাকে ঘিরে ছায়া দিচ্ছে। নবীজি (সা.) তা দেখে বললেন, ‘(এভাবে) সফরে রোজা রাখা কোনো পুণ্যের কাজ নয়।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ২,৪০৭)

 আবু সাইদ খুদরি বলেন, রোজা রেখে আমরা নবীজির (সা.) সঙ্গে মক্কা সফরে বের হলাম। যাত্রা বিরতিকালে তিনি বললেন, ‘তোমরা শত্রুপক্ষের কাছাকাছি পৌঁছে গেছ, পানাহার তোমাদের শরীর সবল করবে।’ সুতরাং ‘অবকাশ’ দেখে আমাদের কেউ রোজা রেখেছেন, কেউ রাখেন নি। অন্য স্থানে গিয়ে তিনি আমাদের বললেন, ‘ভোরে তোমরা শত্রুর মুখোমুখি হবে, পানাহার তোমাদের জন্য বলদায়ক হবে, সুতরা, তোমরা পানাহার করো।’ এবার পানাহার ছিল বাধ্যতামূলক। আমরা সবাই খাবার-পানি গ্রহণ করলাম। (মুসলিম, হাদিস: ১,১২০)

 কঠিন শত্রুর মুখোমুখি হলে, শক্তিমত্তা প্রদর্শনের বিকল্প না থাকলে এবং রোজা রাখলে দুর্বল হয়ে পড়ার সমূহ আশঙ্কা থাকলে, রোজা রাখা সংগত নয়। একদল আলেম বলেছেন, এ-সময় রোজা রাখা নিষিদ্ধ। তবে ঐকমত্য বিধান যে, রোজা রাখলে তা শুদ্ধ হয়ে যাবে এবং পুনরায় কাজা আদায় করতে হবে না—তবে গুনাহগার হবে।

আরও পড়ুনযেমন ছিল মহানবীর (সা.) ইফতার১০ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আল ল হ আম দ র বল ছ ন বলল ন রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিনা মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সুযোগ, সারা দেশে ৮টি কেন্দ্রে

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ প্রশিক্ষণের মেয়াদ দুই মাস। প্রশিক্ষণটি আগামী ১২ অক্টোবর শুরু হবে, চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রশিক্ষণ শেষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সরকারি সনদ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের ৯ অক্টোবরের মধ্যে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে আবেদন করতে হবে।

প্রশিক্ষণের বিষয়

১. বেসিক কম্পিউটার,

২. অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও ইউনিকোড বাংলা,

৩. ইন্টারনেট,

৪. গ্রাফিক ডিজাইন,

৫. ফ্রিল্যান্সিং,

৬. মার্কেটপ্লেস ও কনসালটিং।

আরও পড়ুনহার্ভার্ড এনভায়রনমেন্টাল ফেলোশিপ, দুই বছরে ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলার১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আবেদনের যোগ্যতা

১. ন্যূনতম দাখিল বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে,

২. হাফেজদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হবে,

৩. উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে,

৪. প্রার্থীকে কম্পিউটার চালনায় বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে,

৫. যাঁদের নিজস্ব কম্পিউটার আছে, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে।যে ৮টি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

১. ঢাকা,

২. চট্টগ্রাম,

৩. রাজশাহী,

৪. খুলনা,

৫. বরিশাল,

৬. সিলেট,

৭. দিনাজপুর,

৮. গোপালগঞ্জ।

আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ২ লাখ টাকার প্রশিক্ষণ, নন-আইটি স্নাতক শিক্ষার্থীদের সুযোগ ৭ ঘণ্টা আগেদরকারি কাগজপত্র

১. শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদের সত্যায়িত ফটোকপি,

২. জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি,

৩. এক কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি জমা দিতে হবে,

৪. ইমামদের ক্ষেত্রে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা ওয়ার্ড কমিশনারের কাছ থেকে নেওয়া ইমামতির প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে,

৫. মাদ্রাসাছাত্রদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে ছাত্রত্ব প্রমাণের কপি জমা দিতে হবে।

নিবন্ধন ফি

মনোনীত প্রার্থীদের নিবন্ধন ফি হিসেবে ৫০০ টাকা দিতে হবে।

দেশের ৮টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

সম্পর্কিত নিবন্ধ