রাজধানীর বাজারে আরেক দফা বাড়ল সরু মিনিকেট চালের দাম। এ চাল মধ্যম আয়ের ক্রেতাদের মধ্যে জনপ্রিয়।

দুই সপ্তাহে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে পাঁচ টাকার মতো বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, মিনিকেটের দাম অনেকটা বেড়ে যাওয়ায় আরেক সরু চাল নাজিরশাইলের দামও কেজিতে এক–দুই টাকা বাড়তি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিনিকেট চালের মজুত শেষের দিকে। বোরো মৌসুমে এ চালের উৎপাদন হবে। এখন বোরো ধান কৃষকের খেতে রয়েছে। বোরোতে ভালো ফলন হলে দাম কমতে পারে।

মাঝারি ও মোটা চালের দাম বাড়েনি। অবশ্য সব ধরনের চালের দাম আগে থেকেই চড়া। সরকার নিজে আমদানি করছে, বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করছে, কিন্তু চালের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমছে না।

বাজারে রশিদ, ডায়মন্ড, সাগর, মোজাম্মেল ইত্যাদি ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল জনপ্রিয়। রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল মার্কেট, আগারগাঁওয়ের তালতলা বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা দোকানে রশিদ, ডায়মন্ড, সাগর ইত্যাদি ব্র্যান্ডের প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম ৮৫ টাকা বা তার কিছুটা বেশি। সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয় মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল, কেজি ৯৮-১০০ টাকা।

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের খুচরা চাল বিক্রেতা তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোববার পাইকারি দোকান থেকে ৯৫ টাকা কেজি মোজাম্মেল চাল কিনেছি; বিক্রি করছি ১০০ টাকা। আর অন্যান্য মিনিকেটের দামও ৮৫ টাকার ওপরে। দাম বাড়ায় মিনিকেটের বিক্রি আগের তুলনায় কমে গেছে।’

ভালো মানের নাজিরশাইল চাল পাওয়া যাচ্ছে ৮৪-৮৫ টাকা কেজিতে। সাধারণ মানের নাজিরশাইল চাল ৭২–৭৫ টাকা এবং মাঝারি মানের নাজিরশাইল ৮০–৮২ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে দেখা যায়। ছোট বাজারে ও পাড়ার মুদিদোকানে দাম আরেকটু বেশি।

এদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয় গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছে, শুধু মিনিকেট চালের মূল্যবৃদ্ধি সমগ্র চালের বাজারদর প্রতিফলিত করে না। সরকার খাদ্যের পর্যাপ্ত মজুত গড়ে তুলেছে; বিদেশ থেকে চাল আমদানিও অব্যাহত রেখেছে। দেশে চালের কোনো সংকট হবে না।

সাধারণত নাজিরশাইল চালের দাম মিনিকেট চালের বেশি হয়। এবার দেখা যাচ্ছে, মিনিকেট নাজিরশাইলকে ছাড়িয়ে গেছে। মধ্যবিত্তের জনপ্রিয় দুটি চালের দাম চড়া থাকায় বিপাকে রয়েছে অনেক পরিবার।

রাজধানীর শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা সাবরিনা আলম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি আগে মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের চাল কিনতেন। তিন মাসে এ চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ১২ টাকার বেশি। তিনি বলেন, মোজাম্মেল বাদ দিয়ে এখন বিআর-২৮ জাতের চাল কিনছেন তিনি।

বাজারে ভালোমানের মোটা চালের কেজি এখন ৫৫-৫৬ টাকা। মাঝারি চাল কেনা যাচ্ছে ৫৮ থেকে ৬৫ টাকায়। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এক বছর আগের তুলনায় মাঝারি চালের দাম এখন কেজিতে ১৪ শতাংশ ও মোটা চালের দাম ১৫ শতাংশ বেশি।

দাম বেড়েছে কুষ্টিয়া ও নওগাঁয়

দেশে চালের অন্যতম বড় মোকাম (পাইকারি বিক্রির স্থান) নওগাঁ ও কুষ্টিয়ায় দাম বেড়েছে। কুষ্টিয়ায় গত ১৫ দিনে কেজিতে মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে সাত টাকা। মিলগেটে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৮৪ টাকা। অন্যদিকে নওগাঁয় এক সপ্তাহে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে তিন–চার টাকা বেড়েছে।

চালকলের মালিকেরা ধানের মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করছেন। বাংলাদেশ অটোর মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিলমালিক সমিতির কুষ্টিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন বলেন, বোরো ধান বাজারে না আসা পর্যন্ত এ সংকট থাকবে।

স্থিতিশীল রয়েছে মোটা চালের দাম। ভারত থেকে কিছু চাল আসছে। তা মূলত কাটারিভোগ জাতের। দাম প্রতি কেজি ৭০–৭২ টাকা।

কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আল ওয়াজিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দাম এখানে আপাতত থেমে আছে। তবে সামনে থামবে কি না, জানি না। কারণ, বাজারে ধানের দাম ঊর্ধ্বমুখী, সরবরাহ কম।’

[প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া ও প্রতিনিধি, নওগাঁ]

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিনা মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সুযোগ, সারা দেশে ৮টি কেন্দ্রে

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ প্রশিক্ষণের মেয়াদ দুই মাস। প্রশিক্ষণটি আগামী ১২ অক্টোবর শুরু হবে, চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রশিক্ষণ শেষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সরকারি সনদ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের ৯ অক্টোবরের মধ্যে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে আবেদন করতে হবে।

প্রশিক্ষণের বিষয়

১. বেসিক কম্পিউটার,

২. অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও ইউনিকোড বাংলা,

৩. ইন্টারনেট,

৪. গ্রাফিক ডিজাইন,

৫. ফ্রিল্যান্সিং,

৬. মার্কেটপ্লেস ও কনসালটিং।

আরও পড়ুনহার্ভার্ড এনভায়রনমেন্টাল ফেলোশিপ, দুই বছরে ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলার১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আবেদনের যোগ্যতা

১. ন্যূনতম দাখিল বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে,

২. হাফেজদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হবে,

৩. উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে,

৪. প্রার্থীকে কম্পিউটার চালনায় বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে,

৫. যাঁদের নিজস্ব কম্পিউটার আছে, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে।যে ৮টি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

১. ঢাকা,

২. চট্টগ্রাম,

৩. রাজশাহী,

৪. খুলনা,

৫. বরিশাল,

৬. সিলেট,

৭. দিনাজপুর,

৮. গোপালগঞ্জ।

আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ২ লাখ টাকার প্রশিক্ষণ, নন-আইটি স্নাতক শিক্ষার্থীদের সুযোগ ৭ ঘণ্টা আগেদরকারি কাগজপত্র

১. শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদের সত্যায়িত ফটোকপি,

২. জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি,

৩. এক কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি জমা দিতে হবে,

৪. ইমামদের ক্ষেত্রে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা ওয়ার্ড কমিশনারের কাছ থেকে নেওয়া ইমামতির প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে,

৫. মাদ্রাসাছাত্রদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে ছাত্রত্ব প্রমাণের কপি জমা দিতে হবে।

নিবন্ধন ফি

মনোনীত প্রার্থীদের নিবন্ধন ফি হিসেবে ৫০০ টাকা দিতে হবে।

দেশের ৮টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

সম্পর্কিত নিবন্ধ