লাইসেন্স ও পরিবেশ ছাড়পত্রের মেয়াদ না থাকলে ইটভাটা উচ্ছেদে নির্দেশনা থাকবে: হাইকোর্ট
Published: 18th, March 2025 GMT
অবৈধ ইটভাটা বন্ধে হাইকোর্টের আদেশে লাইসেন্স ও পরিবেশগত ছাড়পত্রের মেয়াদ না থাকলে সেগুলো উচ্ছেদে প্রশাসনের ওপরে নির্দেশনা থাকবে বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট।
সারা দেশে লাইসেন্সবিহীন অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধে ২০২২ সালে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন এবং আদালত রুল জারি করে অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে নির্দেশ দেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত রোববার ইটভাটা মালিক সমিতির পক্ষে আদালতের আদেশ সংশোধন চেয়ে একটি আবেদন করা হয়।
মঙ্গলবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর আদালতে এই আবেদনের শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত পূর্ববর্তী আদেশ সংশোধন করে অবৈধ ইটভাটা শব্দের ব্যাখ্যা দিয়ে আদেশ সংশোধন করেন। আদেশ বলা হয়, ড্রাম চিমনি ও ফিক্সড চিমনি এবং ইটভাটার বর্তমান মেয়াদ পর্যন্ত লাইসেন্স এবং পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকলে তা অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে। আদালত আরো উল্লেখ করেন যে, যে পদ্ধতিতে ইটভাটা পরিচালনা করা হোক না কেন লাইসেন্স না থাকলেই সেটা অবৈধ। আদালত পূর্বের আদেশে দেওয়া অপসারণ/ ধ্বংস করার আদেশ বহাল রাখেন।
শুনানিতে ইটভাটা মালিক সমিতির পক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন এবং অ্যাডভোকেট কায়সার কামাল বলেন, মালিক সমিতির অনেকের জিগজ্যাগ ইটভাটা রয়েছে। সেগুলো এই আদেশের পরে ভাঙা হচ্ছে। যাতে জিগজ্যাগ পদ্ধতির ইটভাটা ভাঙা না হয় তারা সেরকম আদেশের সংশোধন চান।
বাদী পক্ষের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, আইন অনুযায়ী লাইসেন্স না থাকলেই ইটভাটাগুলো অবৈধ, সেটা যে পদ্ধতিতে পরিচালনা করা হোক না কেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইটভ ট
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস