চিহ্নিত হামলাকারীরা তালিকায় নেই, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
Published: 18th, March 2025 GMT
কোটা সংস্কার আন্দোলনে গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ১২৮ নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে প্রশাসন। তবে হামলায় জড়িত থাকা চিহ্নিত অনেক ছাত্রলীগ নেতা, নারীদের হলগুলোর ছাত্রলীগের নেত্রীদের নাম নেই প্রতিবেদনে। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জনের নাম উল্লেখ করে বহিষ্কার করা হয়েছে। এমন ‘ত্রুটিপূর্ণ’ প্রতিবেদনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
গতকাল সোমবার সিন্ডিকেট সভায় ১২৮ জনকে তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদন অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। আজ মঙ্গলবার বহিষ্কৃতদের নামের তালিকা জানা যায়। এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অধিকতর তদন্তে কমিটি গঠন করেছে।
১৫ জুলাই ও ১৭ জুলাই শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে হামলা করে বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ইউনূস, তিনি বর্তমানে পলাতক। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আল-আমিন রহমান, কারাগারে থাকা ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ও জহুরুল হক হলের সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা, ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক আকিব মুহাম্মদ ফুয়াদ কারও নাম প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই।
প্রতিবেদনে ৮২ নম্বরে ইব্রাহিম সানিম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ছাত্র এবং জবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি, ১২১ নম্বরে মাহমুদুল হাসান আকাশ জবি ছাত্রলীগের মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি। তাদেরসহ ৭৭ নম্বরে থাকা রিজভী আহমেদ খোকাকে ‘বহিরাগত’ উল্লেখ করে বহিষ্কার দেখানো হয়েছে।
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে ইনান এবং শয়নের ছাত্রত্ব নেই। এক্ষেত্রে তাদের সনদ বাতিল হবে কিনা জানতে চাইলে সেটি বলতে পারেননি রেজিস্ট্রার শামসউদ্দীন লিটন।
আজ তালিকা জানাজানি হওয়ার পর প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীদের একটি দল। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বাংলা বিভাগের ছাত্র মোসাদ্দেক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, হামলাকারীর যেসব স্পষ্ট ভিডিও ফুটেজ রয়েছে, সেগুলো বিশ্লেষণ করলে অন্তত চিহ্নিতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে যাবে। শিক্ষার্থীরা তথ্যপ্রমাণ নিয়ে তালিকাও করেছে। তবে এগুলোর প্রতিফলন দেখা যায়নি। পাশাপাশি হামলায় ইন্ধনদাতা শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রশিদুল ইসলাম রিফাত বলেন, ছাত্রলীগের চিহ্নিত মাথাগুলোকে বাদ দিয়ে ১৯-২০, ২০-২১, ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ১২৮ জনের তালিকা করেছে তদন্ত কমিটি। তানভীর হাসান সৈকত, আবু ইউনুস, আল-আমিন রহমান, আকিব ফুয়াদ, কামাল উদ্দিন রানাসহ ছাত্রলীগের বড় বড় সন্ত্রাসীদের নাম নেই। ছাত্রলীগের একজন নারীরও নাম নেই। বিজ্ঞান অনুষদের তিন হল থেকে মাত্র একজনের নাম এসেছে।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র শফিকুল ইসলাম ফেসবুকে একটি পোস্টে উল্লেখ করেন, ১৫ জুলাই ঢাকা মেডিকেলে ঢুকে যারা আহত শিক্ষার্থীদের মেরেছে তাদের নাম গণশুনানিতে বলেছিলাম। আমার হাতে থাকা কিছু ডকুমেন্টস আইন অনুষদের ডিনকে (কমিটির সদস্য) মেইল করেছিলাম। বহিষ্কারের তালিকায় তারদের নাম নেই। তদন্ত তালিকা দেখে চুপ থাকতে পারলাম না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সত্যানুসন্ধান কমিটি কর্তৃক চিহ্নিত ১২৮ জনের তালিকাটি পূর্ণাঙ্গ নয়। ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত বেআইনি ও সহিংস ঘটনার অধিকতর তদন্তের জন্য সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড.
এতে আরও বলা হয়, এই কমিটি ১২৮ জনের বিষয়টি আমলে নিয়ে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে সহিংস ঘটনায় জড়িতদের তথ্য চেয়ে চিঠি দেবে। প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে খুব শিগগিরি তদন্ত কমিটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করবে। পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ল ই গণহত য ১৫ জ ল ই উল ল খ তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি খুন
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় পারিবারিক কলহের জেরে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন একজন। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ফজিলা খাতুন (৪৫) উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামের বাসিন্দা মৃত জালাল উদ্দিনের স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনির মিয়া (৩০) উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে। ঘটনার রাতে স্ত্রী রুমা আক্তারের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান মনির। পরে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন এবং চার বছরের ছেলে রোহানকে নিয়ে চলে যেতে চান। এতে স্ত্রীর সঙ্গে তার আবারও বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মনির হাতে থাকা ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে আঘাত করতে গেলে শাশুড়ি ফজিলা খাতুন বাধা দেন। তখন মনির শাশুড়িকে ছুরিকাঘাত করেন। পাশাপাশি স্ত্রীকেও আঘাত করেন তিনি। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ফজিলা খাতুনের মৃত্যু হয়।
মুক্তাগাছা থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো। তবে অভিযুক্ত পালিয়েছে। তাকে ধরার চেষ্টা চলছে।