Samakal:
2025-05-01@00:19:54 GMT

ঈদ ফ্যাশনে শাড়ি

Published: 18th, March 2025 GMT

ঈদ ফ্যাশনে শাড়ি

ঈদ-উৎসবে নারীর পোশাকের কথা এলে অপরিহার্যভাবে উঠে আসে শাড়ির কথা। শাড়ি শুধু পোশাক নয়, এটি সময়ের গায়ে লেখা এক গল্প– যেখানে ঐতিহ্য, ভালোবাসা আর আধুনিকতার ধ্রুপদি ছোঁয়া একসঙ্গে জড়ানো থাকে। 
সুতোয় বোনা আবেগ, আঁচলে জড়ানো ইতিহাস: একটা সময় ছিল, যখন ঈদের সকালে নতুন শাড়ি পরে আয়নার সামনে দাঁড়ানো মানেই ছিল নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করা। নানি-দাদিদের আলমারিতে তুলে রাখা মসলিন শাড়ির গল্প এখনও সময়ের স্রোতে ভাসে, কিন্তু আজকের ঈদ ফ্যাশনে সেই গল্পে নতুন নতুন অধ্যায় যোগ হয়েছে। সময় বদলেছে, ফ্যাশনও বদলেছে, তবু শাড়ির আবেদন ঠিক আগের মতোই থেকে গেছে।
চলতি ধারায় ঈদের শাড়িতে এসেছে কোমল পরিবর্তন। কাতান আর বেনারসির গর্জন ঠেলে উঠে এসেছে মসলিনের মায়া, সুতি-সিল্কের নরম ছোঁয়া। হাতের কাজ করা শাড়ির আবেদন নতুন করে ছুঁয়ে গেছে ট্রেন্ডের পাতা। 
রঙের খেলায় সময়ের প্রতিচ্ছবি: ঈদের সকালে প্যাস্টেল রঙের শাড়ি যেন শিশিরভেজা ফুলের পাপড়ি, সন্ধ্যার আয়োজনে মেটালিক বা গাঢ় রঙের শাড়ি মনে করিয়ে দেয় ধ্রুপদি গানের সুরেলা বাঁধন। এবার ঈদের ফ্যাশনে রঙের ক্যানভাসও বেশ বৈচিত্র্যময়। যেমন– হালকা ল্যাভেন্ডার, মিন্ট গ্রিন কিংবা সূর্যাস্তের কমলা, আরও রয়েছে মেহেদির সবুজ, গাঢ় নীল রং।
ড্রেপিংয়ে নতুন ভাষা, ব্লাউজে সাহসী সৃজনশীলতা: ফ্যাশন ডিজাইনারদের মতে, শাড়ি এক অনবদ্য শিল্প, যার ভাষা বদলেছে ড্রেপিংয়ের বৈচিত্র্যে। কেউ কোমরে বেল্ট জড়িয়ে শাড়িকে দিয়েছে আধুনিক শার্পনেস, কেউবা লম্বা জ্যাকেটের সঙ্গে মিশিয়ে তুলেছে এক ভিন্নতর অভিব্যক্তি। আর ব্লাউজ? সেটিও তো এখন শুধু ‘পরিধান’ নয়, বরং এক স্টাইল স্টেটমেন্ট! অফ-শোল্ডার, ব্যাকলেস, বাটারফ্লাই স্লিভ কিংবা মখমলের জমিনে সূক্ষ্ম সূচিকর্ম। কেউ কেউ আবার ক্রপ টপ, শার্ট, ফতুয়ার সঙ্গেও শাড়ি জড়িয়ে ফ্যাশনে এনেছে অনন্যতা। 
ঈদের শাড়িতে আত্মার ছোঁয়া: কেউ চাইছেন সাবেকি, কেউ চাইছেন একদম ইউনিক কিছু। তাই তো কাস্টম ডিজাইনের শাড়ি এখন নতুন ঢেউ তুলেছে। আঁচলে হাতে লেখা প্রিয় কবিতার লাইন, আঁকা মেঘ-বৃষ্টির জলছবি কিংবা রঙিন কাঁথার ছোঁয়া– এ যেন শাড়ির গায়ে লেখা একেকটি আত্মার গল্প। 
কোথায় পাবেন এবং কেমন দাম: আপনার পছন্দের শাড়ি কিনতে যেতে পারেন মিরপুর বেনারসিপল্লি, ধানমন্ডি হকার্স, আজিজ সুপারমার্কেট, নিউমার্কেট, চাঁদনী চক, উত্তরার রাজলক্ষ্মীসহ দেশের যে কোনো মার্কেটে। তাছাড়া বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্কসহ অন্যান্য শপিংমল তো আছেই। 
দেশি ফ্যাশন হাউসের পাশাপাশি অনলাইন শপগুলোতেও চলছে বাহারি শাড়ির মেলা। এগুলোর মধ্যে অন্যতম পটের বিবি, খাঁচা, খুঁত, ভার্সাটাইল লেডিস, শিথিলতা, একতাল, হরীতকী, স্বচ্ছক্রয়, কইন্যা ইত্যাদি। এ ছাড়াও আড়ং, কিউরিয়াস, অঞ্জন’স, দেশাল, বিবিয়ানা, দেশীদশ, মনেরেখ শাড়িজ, টাঙ্গাইল শাড়ি কুটিরসহ সারাদেশের বিভিন্ন শোরুমে মিলবে শাড়ির আধিপত্য। 
এবারের ঈদ উৎসব গরমের মধ্যে হবে বলে ফ্যাশন ডিজাইনাররা আবহাওয়া এবং শাড়িপ্রিয় নারীর আরামের কথা বিবেচনা করে সুতির শাড়িকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন। দিনের বেলায় সুতি শাড়ি পরা যাবে আর সন্ধ্যার পরের প্রোগ্রামে দেখা মিলবে সিল্ক, জর্জেটের বাহার। সুতির ক্ষেত্রে সবার আগে প্রাধান্য পায় তাঁতের শাড়ির বৈচিত্র্য। যেমন হাতের কাজ, মেশিনের কাজ, কখনও স্ক্রিন বা ব্লক প্রিন্ট, কখনও হ্যান্ড পেইন্ট। এ ছাড়া ফ্লোরাল ও জিওমেট্রিক প্যাটার্নও দেখা যাবে শাড়ির জমিনে। 
ফ্যাশন ব্র‍্যান্ড ‘বিশ্বরঙ’-এর স্বত্বাধিকারী বিপ্লব সাহা জানান, এবার রোজার ঈদে দেশীয় ঐতিহ্য ও আভিজাত্যের ছোঁয়ায় আন্তর্জাতিক সংমিশ্রণে শাড়ির জমিনে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নান্দনিক সব নকশা। 
তিনি বলেন, ‘দেশের আবহাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে শাড়ি তৈরিতে আরামদায়ক কাপড় যেমন সুতি, ধুপিয়ান সিল্ক, তসর সিল্ক, লিনেন, কাতান, জ্যাকার্ড কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে। রঙের ব্যবহারেও কনট্রাস্ট কালারের পাশাপাশি ম্যাচিউরড টোনের পরিমিত ব্যবহার রয়েছে। শাড়িতে কাজের মাধ্যম হিসেবে চলছে– স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, ডিজিটাল প্রিন্ট, মেশিন এমব্রয়ডারি, কম্পিউটার এমব্রয়ডারি, হ্যান্ড এমব্রয়ডারি, কারচুপি, নকশিকাঁথা, জারদৌসিসহ মিশ্র মাধ্যমের বিভিন্ন কৌশল।’
দামের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ক্রেতার সাধ ও সাধ্যের কথা চিন্তা করে বিশ্বরঙের শাড়ির দাম ১ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়েছে।’
‘কে ক্র্যাফট’-এর কর্ণধার খালিদ মাহমুদ খান বলেন, ঈদকে সামনে রেখে এবারও কটন, সিল্ক, হাফ সিল্ক, অরগাঞ্জা, টাঙ্গাইল কটন, টাঙ্গাইল হাফ সিল্ক, কোটা কটন ফেব্রিকের প্রাধান্য থাকছে। শাড়ির আঁচল, পাড় ও জমিনে স্ক্রিন প্রিন্টের সঙ্গে এমব্রয়ডারি ও কারচুপির কাজ বেশ চলছে। আবার ভারী আঁচল এবং পাড়ে প্রিন্ট ও এমব্রয়ডারির কাজ করা শাড়িও দেবে পার্টি লুক। 
মোটিফের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘মোগল আর্ট, ফ্লোরাল, জামদানি, কাঁথা স্টিচ, ট্র্যাডিশনাল, ট্রাইবাল, ইক্কত, পেইসলে, জিওমেট্রিক, ইজিপশিয়ান, টার্কিশসহ মিক্সড মোটিফের উপস্থাপনা ও নানা মিডিয়ার ব্যবহারে থাকবে নিপুণতা। রঙের বাহারিতে মেরুন, ম্যাজেন্টা, পার্পেল, রিগ্যাল পার্পেল, ল্যাভেন্ডার, নেভি, স্কাই, হোয়াইট, পার্ল হোয়াইট, কফি, বার্গান্ডি, কোরা, জাভা গ্রিন, টারকুইশ ছাড়াও আরও অন্যান্য শেড নিয়ে ডিজাইন করা বর্ণিল শাড়ি রয়েছে।’
তিনি জানান, তাদের তাঁতের শাড়ি পাওয়া যাবে ১ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে আর অন্যান্য শাড়ির দাম রাখা হয়েছে ২ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা।
অনলাইন পেজ ‘শিথিলতা’র স্বত্বাধিকারী দেওয়ান মণি বলেন, ‘এবার ঈদে এমব্রয়ডারির কাজে মসলিন শাড়িতে বেশ সাড়া পাচ্ছি। এক রঙা মসলিন শাড়িতে ফুলেল নকশার পাশাপাশি ডিজিটাল প্রিন্টের নকশাও চলছে বেশ। আমাদের দেশীয় ফ্যাশনে টাঙ্গাইল তাঁতিদের বুননে সুতি শাড়ি আর ব্লকের নকশার শাড়ি বরাবরই জনপ্রিয়। গত বছর থেকে মসলিন এবং অরগাঞ্জা ফেব্রিকের চাহিদা বেড়েছে। মসলিন আর অরগাঞ্জায় ফুলেল নকশা দারুণ ফুটে উঠে বলে ক্রেতারা এই শাড়িতে আকৃষ্ট হচ্ছেন বেশি। 
শাড়ির দামের ব্যাপারে মণি জানান, ‘শিথিলতায় সবসময় স্টুডেন্ট বাজেটের শাড়ি থাকে। 
এ ছাড়াও অন্যান্য শাড়ির দাম ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে রাখা হয় ।’
‘ভার্সাটাইল লেডিস’ নামের অনলাইন পেজের কর্ণধার প্রমি চাকমা জানান, ‘ঈদে তুলনামূলক সিল্ক কিংবা গর্জিয়াস শাড়ির চেয়ে সুতির চাহিদা বেশি। ক্রেতার কাছ থেকে দেশীয় মণিপুরি, জামদানি আর মিডবাজেটের কটন হ্যান্ডলুম বেগমপুরি, ধনেখালী, সম্বলপুরি শাড়ির বেশ সাড়া পাচ্ছেন। 
তিনি আরও জানান, শপিংয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতা মিডবাজেটকে প্রাধান্য দিচ্ছেন খুব আর কালারের ক্ষেত্রে মভ লাইট টাইপ সুদিং কালারের সঙ্গে হলুদ, কমলার ডিমান্ড বেশি।
‘একতাল’ পেজের স্বত্বাধিকারী তনুশ্রী দেবের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়– ঈদে দেশি, ইন্ডিয়ান, এক্সক্লুসিভ সিল্ক, সুতি শাড়িসহ সব ধরনের শাড়িই চলছে। তবে ক্রেতার কাছে সুতি শাড়ির চাহিদা বরাবরই বেশি। ঈদ যেহেতু উৎসবমুখর একটা আমেজ নিয়ে আসে, তাই শাড়ির কালারের ক্ষেত্রেও কালারফুল শাড়িই বেশির ভাগ মানুষের পছন্দে থাকছে। ‘একতাল’ পেজে শাড়ির দাম ৬০০ থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে। v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অন য ন য শ ব যবহ র ড জ ইন মসল ন

এছাড়াও পড়ুন:

মিরাজে দুর্দান্ত জয় বাংলাদেশের

এমন পারফরম্যান্সই তো চাওয়ার থাকে ভালো দলের কাছে। মেহেদী হাসান মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্য, সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরি, তাইজুল ইসলামের ৯ উইকেট শিকারে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল জয় এনে দেয় বাংলাদেশকে। প্রথম টেস্ট হারের পর যে সমালোচনা হয়েছিল, তার জবাবটা বোধ হয় দ্বিতীয় টেস্ট তিন দিনে জিতে দিয়ে দিলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। ‘বাউন্স ব্যাক’ করে সিরিজ ড্র ১-১-এ।

চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে বীরোচিত পারফরম্যান্স ছিল টাইগারদের। এটি সম্ভব হয়েছে পছন্দের উইকেটে খেলা হওয়ায়। স্পিন ভুবনে উইকেট উৎসব করেছেন তাইজুল, মিরাজ গাঁটছড়া বেঁধে। সিরিজ নির্ধারণী টেস্টে দুটি সেঞ্চুরি দারুণ অর্জন অধারাবাহিক ব্যাটিং লাইনআপের। এই টেস্টে ওপেনিং জুটি ভালো করেছে। লম্বা সময় পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া এনামুল হক বিজয় ভালোই সঙ্গ দেন সাদমানকে। লোয়ার মিডলঅর্ডারে মিরাজের লড়াই ছিল দেখার মতো।

টেলএন্ডারদের নিয়ে রীতিমতো বাজিমাত করেছেন তিনি। শেষ ৩ উইকেটে তৃতীয় দিন ১৫৩ রান যোগ করেন। বাংলাদেশকে পৌঁছে দেন ৪৪৪ রানে। ২১৭ রানের লিড থাকায় ইনিংস ব্যবধানে জয়ের স্বপ্ন দেখায়। মিরাজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে সে স্বপ্ন পূরণ হয়। সাকিব আল হাসান ও সোহাগ গাজীর পর তৃতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার তাঁর। 

গত বছর দেশের মাটিতে টেস্টে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার পর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। ২০২৫ সালের শুরুটাও ভালো ছিল না। সিলেটে জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছে। সিরিজ বাঁচাতে চট্টগ্রামে জিততেই হতো। লক্ষ্যে পৌঁছাতে কন্ডিশনেও পরিবর্তন আনা হয়। চট্টগ্রামের উইকেটে খেলা হয় দ্বিতীয় টেস্ট। যেখানে শাসন ছিল স্পিনারদের। পছন্দের উইকেট পাওয়ায় তিন স্পিনার নিয়ে খেলে বাংলাদেশ। তিনজনই দারুণ বোলিং করেন প্রথম থেকে।

দীর্ঘ বিরতির পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া অফস্পিনার নাঈম হাসান চ্যালেঞ্জ নিয়ে বোলিং করে গেছেন। বেশি উইকেট না পেলেও এক প্রান্তে ব্যাটারদের চাপে ফেলেছেন। যার সুফল তাইজুল ও মিরাজ পেয়েছেন অন্য প্রান্তে। প্রথম দিন শেষ সেশনে ব্রেক থ্রু দেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনার পরে পিক করে ৬ উইকেট শিকার করেন। জিম্বাবুয়ে ৯ উইকেটে ২২৭ রানে প্রথম দিন শেষ করে। পরের দিন এক বল খেলে ওই রানেই অলআউট হয়। বাংলাদেশ ব্যাটিং শুরু করে বড় লক্ষ্য নিয়ে। সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয় ১১৮ রানের ওপেনিং জুটি করায় প্রতিপক্ষকে ছাড়িয়ে যাওয়া সহজ হয়। সাদমানের সেঞ্চুরি ও মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম কিছু রান করায় ৭ উইকেটে ২৯১ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করে বাংলাদেশ।

সেদিন সংবাদ সম্মেলনে সাদমান আশা প্রকাশ করেন, মিরাজ ও তাইজুল জুটি করবেন। অষ্টম উইকেটে ৬৪ রানের জুটি দু’জনের। বেশি ভালো করেছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। মিরাজের সঙ্গে ১৫৬ বলে ৯৬ রানের জুটি। অভিষেক টেস্টে সাকিবের ব্যাটিং দারুণ লেগেছে অধিনায়ক শান্তর কাছে। ৮০ বলে ৪১ রান করেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা, মাথায় বল লাগার পরও বিচলিত হননি তিনি। মিরাজ ছাড়া চট্টগ্রাম টেস্টের প্রাপ্তি হিসেবে ওপেনিং জুটির ভালো খেলা, সাদমানের সেঞ্চুরি, তাইজুলের ৫ উইকেট শিকার ও সাকিবের রান করাকে মনে করেন শান্ত। 

শেষের তিন উইকেটে তৃতীয় দিন প্রায় দুই সেশন ব্যাট করে বাংলাদেশ। তাইজুল, সাকিব ও হাসানকে নিয়ে ১৫৩ রান যোগ করে। মিরাজ ১০৪ রান করে ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে উইকেট দেন। নার্ভাস নাইটির ঘরে প্রবেশ করে কিছুটা ঝুঁকির মুখে ছিলেন মিরাজ। ৯৮ রানে পৌঁছানোর পর সেঞ্চুরি ছুঁতে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ফিল্ডারের কাছে বল চলে যাওয়ায় এক রানে থামতে হয়। তখন স্ট্রাইকে হাসান থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল সবাই। ড্রেসিংরুমে খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফের সবাই দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। কখন হাসান আউট হয়ে যায়, সে ভয় কাজ করছিল হয়তো। কিন্তু হাসান ছিলেন দৃঢ়চেতা। মাসাকাদজাকে ডিফেন্স করে স্বস্তি দেন।

মিরাজ স্ট্রাইকে এসে মেদেভেরের প্রথম দুই বলে ঝুঁকি নেননি। তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ নেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ ও দ্বিতীয় টেস্টের সেরা খেলোয়াড় মিরাজ। প্রথম ম্যাচের উভয় ইনিংসে ৫ উইকেট করে ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে অতীতের সব পারফরম্যান্স ছাড়িয়ে গেছেন। সেঞ্চুরির সঙ্গে ৫ উইকেটপ্রাপ্তি, দুই হাজার রানের মাইলফলক পেয়েছেন। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ২১৭ রানে পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ১১১ রানে। ফ্লাডলাইটের আলো জ্বেলে নির্ধারিত সময়ের বেশি খেলান আম্পায়াররা। প্রায় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খেলা হয়। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটাররা তাতে আপত্তি করেননি। তাইজুল ৩, নাঈম ১ ও মিরাজ ৫ উইকেট নিলে ম্যাচ শেষ হয়।  

সিলেটে প্রথম টেস্ট হারের পর চট্টগ্রামে প্রভাব বিস্তার করে খেলে ম্যাচ জেতার পরও খুশি নন অধিনায়ক শান্ত, ‘আমি টেস্ট সিরিজ ড্র করে খুশি না। কারণ, প্রথম টেস্টে আমরা একেবারেই ভালো খেলিনি। এই টেস্টে একপেশে খেলে জিতলেও সিরিজে আরও ভালো খেলা উচিত ছিল। সিরিজটি জিততে হতো।’ টাইগার দলপতি জানান, এই পারফরম্যান্স শ্রীলঙ্কা সফরে কাজে দেবে। দেশের মাটিতে স্পোর্টিং উইকেট বানিয়ে বিদেশে খেলার পরিবেশ তৈরি করছিল বিসিবি। ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হচ্ছে। কিউইদের বিপক্ষে সিলেটে ঐতিহাসিক জয় পেলেও মিরপুর থেকে হারতে শুরু করে। দেশের মাটিতে টানা ছয় হারের পর জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ