ঈদের কেনাকাটায় ৮টি জরুরি সতর্কতা
Published: 19th, March 2025 GMT
১. পকেটমার ও ছিনতাইকারী থেকে সাবধান
ঈদের সময় শপিং মল বা বিপণিবিতানে পকেটমার ও ছিনতাইকারীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। তাই প্রয়োজনের বেশি নগদ টাকা না নেওয়াই ভালো। ব্যাগ, মুঠোফোন বা মূল্যবান জিনিসপত্র নিরাপদ জায়গায় রাখুন। নারীরা ব্যাগ কাঁধে রাখার পরিবর্তে শক্তভাবে ধরে রাখুন, আর পুরুষেরা সামনের পকেটে মানিব্যাগ রাখার চেষ্টা করুন।
২.অনলাইনে কেনাকাটা করুন, কিন্তু সাবধানে
ভিড় এড়িয়ে স্বস্তিতে কেনাকাটা করতে চাইলে অনলাইন হতে পারে ভালো বিকল্প। তবে শুধু বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট ও পরিচিত পেজ থেকে অর্ডার করুন। বিক্রেতার রিভিউ দেখে নিন এবং ক্যাশ অন ডেলিভারি বা নিরাপদ পেমেন্টের ওপর আস্থা রাখুন।
৩. জাল নোট থেকে সাবধানঈদের বাজারে জাল টাকার সংখ্যা বেড়ে যায়। টাকা লেনদেনে সতর্ক থাকুন। জাল নোট শনাক্ত করার উপায়গুলো জেনে রাখা ভালো। সম্ভব হলে নোট যাচাই করার জন্য কাউন্টারফিট মানি ডিটেক্টর কলম সঙ্গে রাখুন। বিশেষ করে ফুটপাত বা সন্দেহজনক দোকানে লেনদেন করার সময় ভালোভাবে যাচাই করুন।
আরও পড়ুনআড়ংয়ের নতুন বিক্রয়কেন্দ্রে এত ভিড় কেন১১ মার্চ ২০২৫৪. শিশুদের কখনো হাতছাড়া করবেন নালোকজনের ভিড়ে শিশু হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। তাই ছোটদের হাত শক্ত করে ধরে রাখুন। প্রয়োজনে তাদের পকেটে আপনার ফোন নম্বর ও ঠিকানা লেখা কাগজ দিয়ে রাখুন। প্রয়োজনে তাদের কাছে আপনার আইডি কার্ডের ফটোকপি দিয়ে রাখতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয়, অপ্রয়োজনে শিশুদের বাজারে না নিয়ে যাওয়া।
৫. টানা কেনাকাটা এড়িয়ে চলুনগরম পড়েছে। অনেকে রোজা রেখে দীর্ঘক্ষণ কেনাকাটা করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই কেনাকাটায় বের হলে হালকা পোশাক পরুন, সানগ্লাস ব্যবহার করুন। বিশ্রামের প্রয়োজন হলে বিশ্রাম নিন। সন্ধ্যার পর কেনাকাটা করা তুলনামূলক আরামদায়ক হলেও ছিনতাইকারীদের উপদ্রব তো আছেই। তাই রাতে বাইরে একা না থেকে দলবেঁধে থাকুন, নিরাপদ বাহনে চলাফেরা করুন।
আরও পড়ুনসাধ ও সাধ্যের মধ্যে ঈদের কেনাকাটা করতে রাজধানীর যেসব বাজারে যেতে পারেন, জেনে রাখুন দরদাম১১ মার্চ ২০২৫৬. সঠিক দাম যাচাই করুনঈদের বাজারে অনেক দোকানি অতিরিক্ত দাম হাঁকেন। তাই দরদাম করে পছন্দের জিনিসটি কিনুন। তার আগে বিভিন্ন দোকান ঘুরে দাম যাচাই করে নিতে পারেন। তাহলে ঠকার আশঙ্কা কম থাকে।
৭. অপ্রয়োজনীয় নগদ টাকা বহন করবেন নাডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা এখন বেশ সহজ। তাই প্রয়োজনে মোবাইল ব্যাংকিং, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করুন। যদি নগদ টাকা নিতেই হয়, তবে দিনের বেলায় এবং যথেষ্ট নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।
৮. চটকদার অফারের ফাঁদে পড়বেন না‘বাই ওয়ান গেট থ্রি’ বা ‘৭০% ছাড়’—এ ধরনের অফার দেখে হুট করে কেনাকাটা করে ফেলবেন না। এসব অনেক সময় শুধুই প্রচারণার কৌশল হয় এবং পণ্যের দাম আদতে কম থাকে না। তাই কেনার আগে দাম যাচাই করে দেখুন এবং প্রয়োজন ছাড়া অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে টাকা নষ্ট করবেন না।
সবশেষেঈদ উপলক্ষে প্রিয়জন ও নিজের জন্য কেনাকাটায় আনন্দ আছে নিঃসন্দেহে। তবে ভিড়ে সাবধান থাকুন, হিসাব করে খরচ করুন, আর সবকিছুর মধ্যে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তাকে সবার আগে রাখুন।
আরও পড়ুনপাবলিক ওয়াই–ফাই ব্যবহার করে কেনাকাটা করার আগে যা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন১৮ মার্চ ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য চ ই কর
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই
ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।
এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি