মোবাইল ফোন সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক ও সারচার্জ প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (অ্যামটব)। এ সেবার ওপর ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ১ শতাংশ সারচার্জ রয়েছে। এ ছাড়া সিম সরবরাহের ওপর ৩০০ টাকা মূল্য সংযোজন কর প্রত্যাহার চেয়েছে সংগঠনটি।

গতকাল আগারগাঁওয়ের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ প্রস্তাব দেওয়া হয়।

সভায় অ্যামটব মহাসচিব মোহাম্মদ জুলফিকার বলেন, বৈশ্বিক বিবেচনায় বাংলাদেশে মোবাইল সেবা খাতে সবচেয়ে বেশি কর। প্রায় প্রতিবছর এটা বাড়ছে। এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে গ্রাহকের ওপর। গত বছরের মাঝামাঝি থেকে দেশে উল্লেখযোগ্যভাবে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট গ্রাহক কমছে।

করপোরেট কর কমানোর দাবি করে অ্যামটব মহাসচিব বলেন, বর্তমান করের হার স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত মোবাইল অপারেটরদের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ ও তালিকাবিহীন কোম্পানির জন্য ৪৫ শতাংশ। সাধারণ করপোরেট কর পুঁজিবাজারে তালিকাবিহীন কোম্পানির জন্য সাড়ে ২৭ শতাংশ এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ২০ শতাংশ। মোবাইল অপারেটরদের পৃথক শ্রেণিভুক্ত না করে অন্য কোম্পানির সারিতে পুনর্বিন্যস্ত করা দরকার।

বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি কাস্টমস আইনের সংশোধন চেয়েছে। সভায় সমিতির বাজেট কমিটির চেয়ারম্যান আলী নেওয়াজ বলেন, আমদানি করা পণ্যের এইচএস কোড নির্ধারণে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমদানিকারকদের ২০০-৪০০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করা হয়। বিনা জরিমানায় এইচএস কোড নির্ধারণে কাস্টমস আইনের সংশোধন দরকার।

তিনি বলেন, কেমিস্টদের বিক্রি করা টাকা দিন শেষে কোনো ব্যাংকিং ও নগদ অর্থের নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় তা কোম্পানিগুলোকে নগদে গ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়। তাই ঔষধ শিল্পের ব্যবসায়ের প্রকৃতি বিবেচনা নিয়ে প্রতিটি আয়বর্ষে সব প্রকার আয় ও প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ গ্রহণের সুযোগ দেওয়া দরকার।

বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ) ক্লিংকারের ওপর আমদানি শুল্ক কমিয়ে প্রতি টনে ২০০ টাকা করার সুপারিশ করেছে। সংগঠনটি বলেছে, কোনো শিল্পের প্রধান কাঁচামালের ওপর শুল্ক সাধারণত আমদানি মূল্যের ওপর প্রায় ৫ শতাংশ হয়। কিন্তু ক্লিংকারে টনপ্রতি ৭০০ টাকা আদায় করার ফলে শুল্ক দাঁড়ায় আমদানি মূল্যের প্রায় ১৫ শতাংশ।

বর্তমানে কার্বোনেটেড বেভারেজের ওপর ৩ শতাংশ ন্যূনতম কর আরোপিত আছে। এটি কমিয়ে দশমিক ৬ শতাংশ করার আহ্বান খাতসংশ্লিষ্টদের। এ ছাড়া এ খাতে সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ ও মিনারেল ওয়াটারে সম্পূর্ণ শুল্ক অব্যাহতির দাবি জানানো হয়।

ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, কর ব্যবস্থা হবে ব্যবসাবান্ধব। ব্যবসায় বাধা তৈরি করে ও খরচ বাড়ায় এমন বিধান সংশোধন করা হবে। কমিয়ে আনা হবে অযৌক্তিক উৎসে করের চাপ। এবারের বাজেটে আপনারা এর একটি প্রতিফলন দেখতে পাবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য আমদ ন ব যবস র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

৩০ হাজার টাকার শুল্কের জন্য ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়: শওকত আজিজ

ব্যবসা-বাণিজ্যে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বস্ত্রমালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ। তিনি বলেন, একসময় বিটিএমএ যন্ত্রাংশ আমদানি করত। যথাযথ হারে শুল্কও দেওয়া হতো। এ নিয়ে বিতর্ক হয়নি। ছাড়পত্র বিটিএমএর পক্ষ থেকেই দেওয়া হতো।

কিন্তু এনবিআর পুরো বিষয়টি নিজের হাতে নেওয়ার পর জটিলতা বেড়েছে। প্রতিটি ধাপে ছাড়পত্র নিতে হয়। সেই সঙ্গে দেখা যায়, ৩০ হাজার টাকা শুল্ক কর জমা দিতে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। এ বাস্তবতায় তাঁর পরামর্শ, এনবিআর নিজের সম্পদ গঠনমূলক কাজে ব্যবহার করুক।

আজ বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের আয়োজনে আগামী অর্থবছরের বাজেট–সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির ৪৫তম সভায় এসব কথা বলেন শওকত আজিজ।
এক পণ্যের একাধিক এইচএস কোড আছে বলে মন্তব্য করেন শওকত আজিজ। এ সমস্যা দূর করে এক পণ্য এক এইচএস কোডের অধীন নিয়ে আসা উচিত বলে মত দেন তিনি।

করপোরেট কর প্রসঙ্গে বিটিএমএর প্রস্তাব, দেশের তৈরি পোশাক খাতে যে ১২ শতাংশ করারোপ করা হয়েছে, তাদের জন্যও সেই একই হারে করারোপ করা হোক। বস্ত্র ও পোশাক খাত পরস্পরের পরিপূরক। ফলে তাদের এ প্রস্তাব অযৌক্তিক নয় বলেই মনে করেন শওকত আজিজ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩০ হাজার টাকার শুল্কের জন্য ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়: শওকত আজিজ