মোবাইলে কথা বলার শুল্ক কমানোর প্রস্তাব
Published: 20th, March 2025 GMT
মোবাইল ফোন সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক ও সারচার্জ প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (অ্যামটব)। এ সেবার ওপর ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ১ শতাংশ সারচার্জ রয়েছে। এ ছাড়া সিম সরবরাহের ওপর ৩০০ টাকা মূল্য সংযোজন কর প্রত্যাহার চেয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল আগারগাঁওয়ের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ প্রস্তাব দেওয়া হয়।
সভায় অ্যামটব মহাসচিব মোহাম্মদ জুলফিকার বলেন, বৈশ্বিক বিবেচনায় বাংলাদেশে মোবাইল সেবা খাতে সবচেয়ে বেশি কর। প্রায় প্রতিবছর এটা বাড়ছে। এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে গ্রাহকের ওপর। গত বছরের মাঝামাঝি থেকে দেশে উল্লেখযোগ্যভাবে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট গ্রাহক কমছে।
করপোরেট কর কমানোর দাবি করে অ্যামটব মহাসচিব বলেন, বর্তমান করের হার স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত মোবাইল অপারেটরদের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ ও তালিকাবিহীন কোম্পানির জন্য ৪৫ শতাংশ। সাধারণ করপোরেট কর পুঁজিবাজারে তালিকাবিহীন কোম্পানির জন্য সাড়ে ২৭ শতাংশ এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ২০ শতাংশ। মোবাইল অপারেটরদের পৃথক শ্রেণিভুক্ত না করে অন্য কোম্পানির সারিতে পুনর্বিন্যস্ত করা দরকার।
বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি কাস্টমস আইনের সংশোধন চেয়েছে। সভায় সমিতির বাজেট কমিটির চেয়ারম্যান আলী নেওয়াজ বলেন, আমদানি করা পণ্যের এইচএস কোড নির্ধারণে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমদানিকারকদের ২০০-৪০০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করা হয়। বিনা জরিমানায় এইচএস কোড নির্ধারণে কাস্টমস আইনের সংশোধন দরকার।
তিনি বলেন, কেমিস্টদের বিক্রি করা টাকা দিন শেষে কোনো ব্যাংকিং ও নগদ অর্থের নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় তা কোম্পানিগুলোকে নগদে গ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়। তাই ঔষধ শিল্পের ব্যবসায়ের প্রকৃতি বিবেচনা নিয়ে প্রতিটি আয়বর্ষে সব প্রকার আয় ও প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ গ্রহণের সুযোগ দেওয়া দরকার।
বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ) ক্লিংকারের ওপর আমদানি শুল্ক কমিয়ে প্রতি টনে ২০০ টাকা করার সুপারিশ করেছে। সংগঠনটি বলেছে, কোনো শিল্পের প্রধান কাঁচামালের ওপর শুল্ক সাধারণত আমদানি মূল্যের ওপর প্রায় ৫ শতাংশ হয়। কিন্তু ক্লিংকারে টনপ্রতি ৭০০ টাকা আদায় করার ফলে শুল্ক দাঁড়ায় আমদানি মূল্যের প্রায় ১৫ শতাংশ।
বর্তমানে কার্বোনেটেড বেভারেজের ওপর ৩ শতাংশ ন্যূনতম কর আরোপিত আছে। এটি কমিয়ে দশমিক ৬ শতাংশ করার আহ্বান খাতসংশ্লিষ্টদের। এ ছাড়া এ খাতে সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ ও মিনারেল ওয়াটারে সম্পূর্ণ শুল্ক অব্যাহতির দাবি জানানো হয়।
ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, কর ব্যবস্থা হবে ব্যবসাবান্ধব। ব্যবসায় বাধা তৈরি করে ও খরচ বাড়ায় এমন বিধান সংশোধন করা হবে। কমিয়ে আনা হবে অযৌক্তিক উৎসে করের চাপ। এবারের বাজেটে আপনারা এর একটি প্রতিফলন দেখতে পাবেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য আমদ ন ব যবস র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
অবৈধ অভিবাসীদের প্রতি নরম হওয়ার দিন শেষ: ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ডালাসে সম্প্রতি প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে মাথা কেটে হত্যা করা হয় এক ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে। এ ঘটনায় অবশেষে মুখ খুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “ভারতীয় নাগরিক চন্দ্র নাগামল্লাইয়ার নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্তকে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হবে। অবৈধ অভিবাসী, অপরাধীদের প্রতি নরম হওয়ার দিন শেষ।”
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্র-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়ার মহড়া নিয়ে উত্তর কোরিয়ার কড়া বার্তা
নৌযান দখল: ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ভেনেজুয়েলা
প্রতিবেদনে বলা হয়, চন্দ্র নাগামাল্লাইয়ার হত্যার ঘটনা নিয়ে আজ সোমবার ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে লিখেছেন, “আমি চন্দ্র নাগামল্লাইয়ার হত্যাকাণ্ডের খবর সম্পর্কে অবগত। তিনি ডালাসের একজন সম্মানিত বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু তাকে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানের সামনে নৃশংসভাবে শিরশ্ছেদ করে হত্যা করেছে এক অবৈধ কিউবান অভিবাসী। যার আমার দেশে থাকার কথা ছিল না।”
উল্লেখ্য, গত ১০ সেপ্টেম্বর ডালাসের স্যামুয়েল বুলেভার্ডের ডাউনটাউন সুইটস নামের একটি মোটেলে ভারতীয় ওই নাগরিককে হত্যা করা হয়। নিহত চন্দ্র নাগামল্লাইয়ার বয়স ছিল ৪১ বছর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ওই হত্যাকাণ্ডের বীভৎস ভিডিও ফুটেজ।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, কিছু একটা নিয়ে বিরোধের জেরে নাগামল্লাইয়াকে মোটেলের পার্কিং লটে একটি মাচেটি (ধারালো অস্ত্র) দিয়ে কোপাতে শুরু করে হত্যাকারী। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল নাগামাল্লাইয়ার স্ত্রী ও সন্তানও। তাদের সামনেই কুপিয়ে তার মাথা কেটে ফেলে অভিযুক্ত ওই কিউবান ব্যক্তি।
ফুটেজে আরো দেখা যায়, প্রথমে নাগামল্লাইয়ার কাটা মাথা, মোটেলের পার্কিং লটে ফেলে দেওয়া হয়। পরে, সেটি আবার তুলে একটি ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলা হয়।
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্ত ওই কিউবান ব্যক্তির নাম ইয়োরডানিস কোবোস মার্টিনেজ। তার বয়স ৩৭ বছর। তাকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জানা গেছে, মার্টিনেজ ওই মোটেলের পরিচ্ছন্নতাকর্মী। তাকে ভাঙা ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করতে নিষেধ করেছিলেন নাগামল্লাইয়ার। তিনি এক নারী কর্মীকে দিয়ে অনুবাদ করিয়ে মার্টিনেজকে বিষয়টি বলার জন্য নির্দেশ দেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা মতে, নাগামল্লাইয়ার কথার ভঙ্গিমা পছন্দ হয়নি মার্টিনেজের। তার জেরেই এই হত্যাকাণ্ড।
ট্রাম্পের অভিযোগ, বাইডেন প্রশাসনের অবহেলার কারণেই মার্টিনেজের মতো অপরাধীরা যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তিনি বলেন, “এই ব্যক্তি অতীতে শিশু যৌন নির্যাতন, গাড়ি চুরি, মিথ্যা কারাবন্দী করার মতো ভয়ংকর অপরাধ করেছে। কিন্তু কিউবা তাকে ফেরত নিতে অস্বীকার করায় বাইডেন প্রশাসন তাকে মুক্তি দিয়েছে। এমন অবৈধ অভিবাসী অপরাধীদের জন্য নরম মনোভাবের সময় এখন শেষ।”
ঘটনার পর মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (ডিএইচএস) জানায়, অভিযুক্ত মার্টিনেজকে দেশ থেকে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ডিএইচএসের সহকারী সচিব ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন বলেন, “এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড সম্পূর্ণ প্রতিরোধযোগ্য ছিল, যদি এই অপরাধী অনিবন্ধিত অভিবাসীকে বাইডেন প্রশাসন মুক্তি না দিত।”
ডিএইচএসের তথ্যানুযায়ী, মার্টিনেজ চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ডালাসের ব্লুবনেট ডিটেনশন সেন্টারে আটক ছিলেন। কিন্তু বাইডেন প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, তার প্রশাসন অবৈধ অভিবাসী অপরাধীদের প্রতি নমনীয় হবে না।
ঢাকা/ফিরোজ