নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়ে এক যুগ পর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছে ভারত। সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে তারা অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়। চ্যাম্পিয়নের স্বীকৃতি হিসেবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) আজ বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ, ২০২৫) রোহিত শর্মাদের জন্য বিশাল অঙ্কের বোনাস ঘোষণা করেছে।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির এবারের আসরে প্রাইজমানি হিসেবে বরাদ্দ ছিল ৬.

৯ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে ভারত পেয়েছে প্রায় ২৭ কোটি ৬ লাখ টাকা। এছাড়া গ্রুপপর্বে তিনটি জয়, সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে এবং ফাইনালে নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়ে ভারত মোট ২.৪৬৭ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় ২৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা পেয়েছে।

চ্যাম্পিয়ন ভারত দলের জন্য বিসিসিআই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতে পাওয়া মোট প্রাইজমানির দ্বিগুণেরও বেশি বোনাস ঘোষণা করেছে। আজ বিসিসিআই এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে রেকর্ড তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জেতার স্বীকৃতি হিসেবে ভারতীয় দলকে ৫৮ কোটি রুপি বোনাস দেওয়া হবে। শুধু ১৫ জন ক্রিকেটারই নয়, কোচ গৌতম গম্ভীর, তার কোচিং স্টাফ ও সাপোর্ট স্টাফরাও এই পুরস্কারের আওতায় থাকবেন। এমনকি নির্বাচক কমিটির প্রধান অজিত আগারকারসহ পুরো নির্বাচক প্যানেলও এই বোনাসের অংশীদার হবেন। যদিও কার জন্য কত বরাদ্দ, তা বোর্ডের বিবৃতিতে স্পষ্ট করা হয়নি।

আরো পড়ুন:

খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছেন ব্যাটসম্যানরা!

রাম নবমীর জন্য নিরাপত্তাহীনতায় আইপিএলের ম্যাচ!

তবে গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার পর বিসিসিআই রোহিত শর্মাদের জন্য ১২৫ কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। বিশ্বকাপ স্কোয়াডের মোট ৪২ জন সদস্যের মধ্যে ১৫ জন মূল দলের ক্রিকেটার ও প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড় পেয়েছিলেন ৫ কোটি টাকা করে। কোচিং স্টাফের অন্যান্য সদস্য পেয়েছিলেন ২.৫ কোটি টাকা করে, আর নির্বাচক কমিটির সদস্যরা পেয়েছিলেন ১ কোটি টাকা করে।

এছাড়া, ফিজিওথেরাপিস্ট, থ্রোডাউন বিশেষজ্ঞ, ম্যাসিওর ও কন্ডিশনিং কোচদেরও ২ কোটি টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি রিজার্ভ দলের ক্রিকেটাররাও পেয়েছিলেন আর্থিক পুরস্কার। ক্রিকেট মহলের ধারণা, এবারও পুরস্কারের অর্থ একই অনুপাতে বণ্টন করা হবে।

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব স স আই র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

কাজাকিস্তানের যাযাবর জাতির করুণ ইতিহাস 

বিংশ শতাব্দীর আগে পৃথিবীর মানচিত্রে কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান নামের এই পাঁচটি দেশ ছিলো না।  মূলত ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এই রাষ্ট্রগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা লাভ করে। পরে চীনের সহায়তায় ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলগুলো বাণিজ্যিক কেন্দ্রস্থল হিসেবে পুনরুত্থান হয়েছে। এখন প্রশ্ন  করা যেতে পারে, চীন কেন আবারও  এই অঞ্চলগুলোকে শক্তিশালী করে তুলছে?

ঐতিহাসিকভাবে মধ্য এশিয়া অঞ্চল সিল্করোডের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলো। যা চীনকে মধ্যপ্রাচ্য এবং রোমান সভ্যতার সাথে যুক্ত করেছিলো।  বীজ গণিতের জনক আল খারিজমি, আবু সিনার মতো বিজ্ঞানীদের জন্ম হয়েছে এখানে। যাদের লেখা বই ইউরোপে শত শত বছর ধরে চিকিৎসা ও নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। চেঙ্গিস খানও এই অঞ্চলে তার সম্রাজ্যের নিদর্শন রেখে গেছেন। পাশাপাশি ঘোড়ার পিঠে আদিম যাযাবর জীবনের ঐতিহ্যও টিকে আছে এখানে। 

আরো পড়ুন:

রাশিয়ার ‍বিরুদ্ধে এবার রোমানিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ

রাশিয়ায় ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প, সুনামির সতর্কতা 

রাজনৈতিক প্রভাব ও সামরিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তার করেছিলো রুশরা। উপনিবেশিক শাসন এমনভাবে চালু করেছিলো, যা অনেকটা ব্রিটিশ বা ফরাসি সম্রাজ্যের মতো দেখতে। 
রাজ্যগুলোকে শিল্পায়ন ও আধুনিকায়নের ফলে বিশাল পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এমনকি যাযাবর জাতিকে যুদ্ধ যেতে বাধ্য করা হয়েছিলো। আর যাযাবর জাতিকে বসতি স্থাপনে বাধ্য করা হয়েছিলো। এরপর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ফলে কাজাখ জনগোষ্ঠীর চল্লিশ শতাংশ অর্থাৎ ২৫ শতাংশ মানুষ অনাহারে মারা যায়। এবং যাযাবর জনগোষ্ঠীর যে অর্থনীতি, তা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। কারণ সোভিয়েত আমলে কাজাখ যাযাবররা যে পশুপালন করতো তার নব্বই শতাংশই মারা যায়। ফলে বাধ্য হয়ে কাজাখদের যাযাবর জীবনযাত্রা ছেড়ে দিতে হয়। বলতে গেলে সোভিয়েত আমলে কাজাখ সভ্যতা ও সংস্কৃতির বেদনাদায়ক পুনর্গঠনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। 

১৯৯১ সালে সোভিয়েন ইউনিয়নের পতন হয়, সৃষ্টি হয় এই পাঁচটি স্বাধীন দেশের। এই দেশগুলো স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন পরবর্তী বিশ্বে খাপ খাইয়ে নিতে তাদের ব্যাপক সংগ্রাম করতে হয়। তবে বিগত কয়েক দশক ধরে মধ্য এশিয়ার যাযাবর জাতিগুলো নিজস্ব সীমানার মধ্যে এক অনন্য পরিচয় গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। যদিও তাদের ওপর বাইরের প্রভাবও রয়েছে। তুরস্ক এই অঞ্চলে নিজেদের উপস্থিতি আরও বেশি জানান দিচ্ছে। সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক, ধর্মীয় এবং ভাষাগত মিল আছে। এমনকি শিক্ষাগত কাঠামোতেও মিল রয়েছে। তুরস্ক মধ্য এশিয়ায় রাশিয়ার পণ্য রফতানির একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হিসেবেও বিবেচিত। 

জিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় এক কোটি উইঘুর বাস করেন। যাদের বেশিরভাগই মুসলিম। এদের নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া উইঘুর পরিচয় মুছে ফেলতে তাদের পুনঃশিক্ষা শিবিরে আটকে রাখার অভিযোগও আছে। যদিও চীন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। 

বৈশ্বিক অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এর চীন মধ্য এশিয়ায় ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন করছে। এই অঞ্চলটিকে বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করতে চাইছে, যা অনেকটা সিল্করুটের মতোই। 

চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ উদ্যোগের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় প্রাচীন সিল্ক রোড পুনরুজ্জীবিত করার একটি সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। এই রোড পুনরুজ্জীবিত হলে রাশিয়া আর চীনের প্রভাব বলয়ে থাকা এই অঞ্চলের ভূ রাজনৈতিক গুরুত্ব কতটা বাড়বে-সেটাও সময় বলে দেবে।  

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরদের কাজ কি শুধু ভাইভা নেওয়া
  • কাজাকিস্তানের যাযাবর জাতির করুণ ইতিহাস 
  • চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী-গ্রামবাসীতে বিদ্বেষ কেন
  • চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ড: ট্রাম্প কি দাঙ্গা–ফ্যাসাদকেই নীতি হিসেবে নিয়েছেন