প্রথম আসরের স্মৃতি ফিরিয়ে শুরুতেই কলকাতা-বেঙ্গালুরু ম্যাচ
Published: 22nd, March 2025 GMT
২০০৮ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ম্যাচ দিয়ে আলোর মুখ দেখেছিল আইপিএল। ১৭ বছর পরে আবারও এই দুদলে মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে আজ (২২ মার্চ) মাঠে গড়াচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় টি-টোয়েন্টি লিগের ১৮তম আসর।
কালের পরিক্রমায় আইপিএল এখন মহা প্রভাবশালী। বিশ্বের সকল টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলো এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ চলার সময় তাদের খেলা বন্ধ রাখার চেষ্টা করে। প্রায় দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা আইপিএলের ১৮তম আসর। ১৩টি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ৭৪টি ম্যাচ।
বলা হয় আইপিএলের ভাগ্য গড়ে দিয়েছিল প্রথম ম্যাচেই করা ব্র্যান্ডন ম্যাককালামের ১৫৮ রানের ইনিংসটি। সে ম্যাচটি বেঙ্গালুরের চিন্নাস্বওমী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হলেও, আজকের খেলা হবে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে। তারা যে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। ম্যাচ শুরুর আগে থাকবে চোখ ধাঁধানো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
আরো পড়ুন:
রাম নবমীর জন্য নিরাপত্তাহীনতায় আইপিএলের ম্যাচ!
ম্যাচ খেললেও নিয়মিত অধিনায়ক স্যামসন নেতৃত্বে নেই!
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কিছুরই ভরসা নেই। এই কথাটা আবারও সত্য প্রমাণ করল নাইট রাইডার্স। দশ মৌসুম পরে তাদেরকে শিরোপা জেতানো শ্রেয়াস আইয়ারকেই তারা ধরে রাখেনি। কলকাতা শিবিরকে এবার নেতৃত্ব দিবেন আজিঙ্কা রাহানে। বেঙ্গালুরুর দায়িত্বে থাকবেন রজত পাতিদার। সবমিলিয়ে মোট পাঁচটি দল পরিবর্তিত অধিনায়ক নিয়ে খেলতে নামবে। পাঞ্জাব কিংসে থাকবেন শ্রেয়াশ আইয়ার, দিল্লির ক্যাপিটালসে অক্ষর প্যাটেল ও লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টের কাপ্তান ঋষভ পন্থ।
পিচগুলো হবে বরাবরের মতো ফ্ল্যাট। তাই দর্শকরা এবারও দেখবে রান বন্যা। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা তো বলছেন এবার ১২০ বলের খেলায় ৩০০ রানও দেখা যেতে পারে।
এবার আগের যে কোন আসরের চেয়ে বেশি ভ্রমণ করতে হবে দলগুলোকে। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের সবচেয়ে কম শারীরিক ধকল যাবে, এরপরও তাদের সাড়ে আট হাজার কিলিমিটার পথ ভ্রমণ করতে হবে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি সতের হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিতে হবে বেঙ্গালুরুকে, যা হায়দ্রাবাদের দ্বিগুণ। বাকি সব দলকেই পোহাতে হবে দশ হাজারের কিলোমিটারের বেশি ভ্রমণের ঝাক্কি।
বরাবরই আইসিসিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখানো আইপিএল এবারের আসরে এনেছে বেশ কিছু পরিবর্তন। বলে লালা মাখানোতে আর কোন বাঁধা নেই। এমনকি থাকছে না স্লো ওভাররেটের কারণে অধিনায়কের নিষিদ্ধের নিয়মও। এমনকি প্রতিটি ওয়াইড এবং নো বলের সিধান্ত নেওয়া হবে ‘হক আই’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এমনকি ক্রিকেটারদের অসন্তষের মাঝেও বহাল থাকবে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার পদ্ধতি।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কাজাকিস্তানের যাযাবর জাতির করুণ ইতিহাস
বিংশ শতাব্দীর আগে পৃথিবীর মানচিত্রে কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান নামের এই পাঁচটি দেশ ছিলো না। মূলত ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এই রাষ্ট্রগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা লাভ করে। পরে চীনের সহায়তায় ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলগুলো বাণিজ্যিক কেন্দ্রস্থল হিসেবে পুনরুত্থান হয়েছে। এখন প্রশ্ন করা যেতে পারে, চীন কেন আবারও এই অঞ্চলগুলোকে শক্তিশালী করে তুলছে?
ঐতিহাসিকভাবে মধ্য এশিয়া অঞ্চল সিল্করোডের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলো। যা চীনকে মধ্যপ্রাচ্য এবং রোমান সভ্যতার সাথে যুক্ত করেছিলো। বীজ গণিতের জনক আল খারিজমি, আবু সিনার মতো বিজ্ঞানীদের জন্ম হয়েছে এখানে। যাদের লেখা বই ইউরোপে শত শত বছর ধরে চিকিৎসা ও নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। চেঙ্গিস খানও এই অঞ্চলে তার সম্রাজ্যের নিদর্শন রেখে গেছেন। পাশাপাশি ঘোড়ার পিঠে আদিম যাযাবর জীবনের ঐতিহ্যও টিকে আছে এখানে।
আরো পড়ুন:
রাশিয়ার বিরুদ্ধে এবার রোমানিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ
রাশিয়ায় ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প, সুনামির সতর্কতা
রাজনৈতিক প্রভাব ও সামরিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তার করেছিলো রুশরা। উপনিবেশিক শাসন এমনভাবে চালু করেছিলো, যা অনেকটা ব্রিটিশ বা ফরাসি সম্রাজ্যের মতো দেখতে।
রাজ্যগুলোকে শিল্পায়ন ও আধুনিকায়নের ফলে বিশাল পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এমনকি যাযাবর জাতিকে যুদ্ধ যেতে বাধ্য করা হয়েছিলো। আর যাযাবর জাতিকে বসতি স্থাপনে বাধ্য করা হয়েছিলো। এরপর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ফলে কাজাখ জনগোষ্ঠীর চল্লিশ শতাংশ অর্থাৎ ২৫ শতাংশ মানুষ অনাহারে মারা যায়। এবং যাযাবর জনগোষ্ঠীর যে অর্থনীতি, তা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। কারণ সোভিয়েত আমলে কাজাখ যাযাবররা যে পশুপালন করতো তার নব্বই শতাংশই মারা যায়। ফলে বাধ্য হয়ে কাজাখদের যাযাবর জীবনযাত্রা ছেড়ে দিতে হয়। বলতে গেলে সোভিয়েত আমলে কাজাখ সভ্যতা ও সংস্কৃতির বেদনাদায়ক পুনর্গঠনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।
১৯৯১ সালে সোভিয়েন ইউনিয়নের পতন হয়, সৃষ্টি হয় এই পাঁচটি স্বাধীন দেশের। এই দেশগুলো স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন পরবর্তী বিশ্বে খাপ খাইয়ে নিতে তাদের ব্যাপক সংগ্রাম করতে হয়। তবে বিগত কয়েক দশক ধরে মধ্য এশিয়ার যাযাবর জাতিগুলো নিজস্ব সীমানার মধ্যে এক অনন্য পরিচয় গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। যদিও তাদের ওপর বাইরের প্রভাবও রয়েছে। তুরস্ক এই অঞ্চলে নিজেদের উপস্থিতি আরও বেশি জানান দিচ্ছে। সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক, ধর্মীয় এবং ভাষাগত মিল আছে। এমনকি শিক্ষাগত কাঠামোতেও মিল রয়েছে। তুরস্ক মধ্য এশিয়ায় রাশিয়ার পণ্য রফতানির একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হিসেবেও বিবেচিত।
জিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় এক কোটি উইঘুর বাস করেন। যাদের বেশিরভাগই মুসলিম। এদের নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া উইঘুর পরিচয় মুছে ফেলতে তাদের পুনঃশিক্ষা শিবিরে আটকে রাখার অভিযোগও আছে। যদিও চীন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
বৈশ্বিক অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এর চীন মধ্য এশিয়ায় ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন করছে। এই অঞ্চলটিকে বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করতে চাইছে, যা অনেকটা সিল্করুটের মতোই।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ উদ্যোগের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় প্রাচীন সিল্ক রোড পুনরুজ্জীবিত করার একটি সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। এই রোড পুনরুজ্জীবিত হলে রাশিয়া আর চীনের প্রভাব বলয়ে থাকা এই অঞ্চলের ভূ রাজনৈতিক গুরুত্ব কতটা বাড়বে-সেটাও সময় বলে দেবে।
ঢাকা/লিপি