আইপিএল ২০২৪ আসর যেভাবে শেষ করেছিল, ২০২৫ আসরও ঠিক সেভাবেই শুরু করলো সানরাইজার্স হয়দরাবাদ। আজ রোববার (২৩ মার্চ) নিজেদের প্রথম ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে ৪৪ রানের দারুণ এক জয় পেয়েছে।

গেল আসরে হায়দরাবাদ দুর্দান্ত ব্যাটিং পারফরম্যান্স দেখিয়েছিল। এবার দলে ঈশান কিশানের সংযোজন সেই শক্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ঈশান মাত্র ৪৭ বলে অপরাজিত ১০৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, কেন তাকে দলে আনা হয়েছে।

অনেকেই আজ ভেবেছিলেন, তারা কি প্রথম দল হিসেবে আইপিএলে ৩০০ রান করতে পারবে? হায়দরাবাদের হয়ে অভিষেক ম্যাচে ঈশান মাত্র ৪৫ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ঝড় তোলেন। ট্র্যাভিস হেড ও অভিষেক শর্মার বিধ্বংসী শুরুর পর ঈশানের অতিমানবীয় ইনিংসে তারা ৩০০’র ঘর ছোঁয়ার খুব কাছাকাছি পৌঁছে যায়। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে হায়দরাবাদ থামে ২৮৬ রানে, যা গত আসরের তাদেরই করা সর্বোচ্চ রেকর্ডের মাত্র ১ রান কম। তবে এতেই বোঝা গেল, এবারও তারা বিধ্বংসী ব্যাটিং স্টাইলে রাজত্ব করতে প্রস্তুত।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশের কোচ-অধিনায়ক চূড়ান্ত হবে সোমবার

পাকিস্তানকে বিধ্বস্ত করে সিরিজ জিতল নিউ জিল্যান্ড

ম্যাচের শুরুতে হেড ও অভিষেক পাওয়ার প্লেতে মাত্র ছয় ওভারেই ৯৪ রান তুলে চমক দেখান, যা আইপিএলের ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ পাওয়ার প্লে স্কোর। এরপর ঈশান যেন আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। ইশানের ১১ চার ও ৬ ছক্কায় করা ১০৬*, হেডের ৯ চার ও ৩ ছক্কায় করা ৬৭, হেনরিখ ক্লাসেনের ১৪ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় করা ৩৪ ও নিতিশ কুমার রেড্ডির করা ১৫ বলের ৩০ রানে ভর করে ২৮৬ পর্যন্ত যায় হায়দরাবাদ।

বল হাতে রাজস্থানের তুষার দেশপান্ডে ৪ ওভারে ৪৪ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। মাহিশ থিকশানা ৪ ওভারে ৫২ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট। আর জোফরা আর্চার ৪ ওভারে ৭৬ রান দিয়ে থাকেন উইকেটশূন্য।

রাজস্থান রয়্যালস চ্যালেঞ্জটা ভালোভাবেই নিয়েছিল। অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন ও ধ্রুব জুরেল হাফ-সেঞ্চুরি করে লড়াই জমিয়ে দেন। একমাত্র বিদেশি ব্যাটার শিমরন হেটমায়ারের শেষ মুহূর্তের ঝড়েও ম্যাচের উত্তেজনা বাড়ে। পুরো ম্যাচে মোট ৫২৮ রান হয়, যা আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। তবে বিশাল লক্ষ্য তাড়া করাটা শেষ পর্যন্ত অসম্ভবই ছিল।

শেষ পর্যন্ত রাজস্থান ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৪২ রানে গিয়ে থামে। হার মানে ৪৪ রানে। রাজস্থানের ধ্রুব ৫টি চার ও ৬ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৭০ রান করেন। স্যামসন ৭ চার ও ৪ ছক্কায় করেন ৬৬ রান। এছাড়া হেটমায়ার ১ চার ও ৪ ছক্কায় ৪২ ও শুভম দুবে ১১ বলে ১ চার ও ৪ ছক্কায় অপরাজিত ৩৪ রান করেন।

বল হাতে হায়দরাবাদের হার্শাল প্যাটেল ৪ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন। শিমারজিত সিং ৩ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে নেন আরও ২টি উইকেট।

ম্যাচসেরা হন হায়দরাবাদের সেঞ্চুরিয়ান ইশান কিশান।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ য়দর ব দ র উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ