বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ইজেডে নিয়ে যাবে বিডা
Published: 23rd, March 2025 GMT
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো (ইজেডে) ঘুরে দেখাবে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। এতে চট্টগ্রাম, মিরসরাই ও কোরিয়ান ইপিজেডের বিনিয়োগ অবকাঠামো ও পরিবেশের বিভিন্ন দিক বিশেষভাবে তুলে ধরা হবে। আগামী এপ্রিলে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটে অংশ নিতে যেসব বিদেশি বিনিয়োগকারী ঢাকায় আসবেন, তাদের জন্য থাকছে এই আয়োজন।
বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট উপলক্ষে রোববার রাজধানীর ইস্কাটনে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
আশিক চৌধুরী জানান, আগামী ৭ থেকে ১০ এপ্রিল রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২৫ অনুষ্ঠিত হবে। ৯ এপ্রিল সামিটের মূল পর্বের উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.
আশিক চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ মেয়াদে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এই বিনিয়োগ সম্মেলন করতে যাচ্ছে বিডা। এর মাধ্যমে দেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনা, জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী অর্থনৈতিক সংস্কারের বিষয়গুলো তুলে ধরার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ সংযোগ তৈরির চেষ্টা করা হবে। এতে চীন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, জাপান, ভারতসহ ৫০টি দেশ থেকে ৫৫০ জনের বেশি প্রতিনিধি অংশ নেবেন।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান জানান, ৯ এপ্রিল সম্মেলনস্থলে ইলন মাস্কের স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হবে। অংশগ্রহণকারীরা সেটি ব্যবহার করতে পারবেন। ওই দিন স্টারলিংকের ইন্টারনেট ব্যবহার করে সম্মেলনের সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
আশিক চৌধুরী বলেন, এ সম্মেলনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের এ দেশের সম্ভাবনা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগবান্ধব নীতি এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে জানানো হবে। সবচেয়ে বেশি সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণ করা যাবে– এমন পাঁচটি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিকল্পনা করা হয়েছে। খাতগুলো হচ্ছে– নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ডিজিটাল ইকোনমি, তৈরি পোশাক ও বস্ত্র, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও হেলথকেয়ার।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সামিটে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পরস্পরের মধ্যে যোগাযাগের পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা ও গুরুত্বপূর্ণ তিনটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠকের সুযোগ পাবেন। রাজনৈতিক দল তিনটি হলো– বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সম্মেলনে এসব দলের জন্য আলাদা কক্ষ থাকবে। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ পরিস্থিতি বিষয়ে আশ্বস্ত করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার জন্য আলাদা কক্ষ রাখা হচ্ছে। যেখানে বিনিয়োগকারীরা তাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সভা করতে পারবেন।
এই বিনিয়োগ সম্মেলনে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় করপোরেট ব্যক্তিত্বরা অংশ নেবেন। থাকবেন জারা গ্রুপের সিইও অস্কার গার্সিয়া মেসেইরাস, ডিপি ওয়ার্ল্ডের চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ বিন সুলাইয়েম, ব্রিটিশ ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন, স্যামসাং সি অ্যান্ড টির ভাইস প্রেসিডেন্ট কিয়ংসু লি, গিওর্দানোর সিইও জুনসিওক হান, এক্সেলারেট এনার্জির প্রেসিডেন্ট স্টিভেন কোবোস, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের উবারের পাবলিক পলিসি প্রধান মাইক অর্গিল এবং মেটার পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর সারিম আজিজ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা
রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।
উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।
সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।
তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।
মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।