সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা: অবিমৃষ্যকারী সিদ্ধান্ত
Published: 24th, March 2025 GMT
প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কবি ফয়েজ আহ্মদ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে জাতীয় প্রেস ক্লাব ভবনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কামানের গোলায় আহত হয়ে প্রথমে তাঁর গ্রামের বাড়ি বিক্রমপুরে, পরে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আগরতলায় চলে যান। সেখান থেকে কলকাতায় গিয়ে চেষ্টা করেন মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে। কিন্তু তাঁর ‘চীনপন্থি’ তকমা এ ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তিনি চলে যান জলপাইগুড়ি। পরে প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের আহ্বানে কলকাতায় এলে তাঁকে বলা হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দিতে। ফয়েজ আহ্মদ প্রধানমন্ত্রীকে জানান, তিনি সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা হতে চান। তাজউদ্দীন তখন তাঁকে বলেছিলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের যে ফ্রন্টেই আপনি অংশ নেন, আপনার পরিচয় হবে মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কাজ করলেও আপনি সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের সমান সম্মানই পাবেন।’ ফয়েজ আহ্মদ তাঁর স্মৃতিকথা ‘মধ্যরাতের অশ্বারোহী’তে এসব কথা তুলে ধরেছেন।
কথাটি মনে পড়ল গত ২১ মার্চ সমকালের একটি প্রতিবেদন পড়ে। সেখানে বলা হয়েছে, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল-জামুকার সাম্প্রতিক এক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদসহ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী চার শতাধিক এমএনএ ও এমপিএর বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় থাকছে না। তাদের পরিচয় হবে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’। একই পরিচয় পাবেন ইতোমধ্যে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়া স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী-কলাকুশলী, ফুটবল দলের খেলোয়াড়, বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সংগঠকরা। জামুকার সিদ্ধান্তটি উপদেষ্টা পরিষদ পাস করলেই তারা সবাই ‘মুক্তিযোদ্ধা’ থেকে হয়ে যাবেন ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, এতে নাকি কারও মর্যাদা বা সুনাম ক্ষুণ্ন হবে না। মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁকে সহায়তাকারীর মধ্যে পার্থক্য কী– উপদেষ্টার হয়তো তা বোধে আসছে না। যদি আসত, তাহলে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তিনি অন্তত দশবার ভাবতেন।
দেশে অতীতে অনেকে রাষ্ট্রপতি-মন্ত্রী-এমপি হয়েছেন, ভবিষ্যতেও হবেন। তবে মুক্তিযোদ্ধার সম্মান তারাই পেয়েছেন, যারা একাত্তরে জীবনের মায়া ত্যাগ করে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক জনযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। আজ দেখা যাচ্ছে, তাদের অনেকের স্বীকৃত মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। যে মানুষটি ছিলেন আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রাণপুরুষ, যাঁকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ, সেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও নাকি এখন থেকে আখ্যায়িত হবেন ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে! আমি কখনও আওয়ামী লীগ করিনি। শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক আদর্শেও বিশ্বাসী নই। তবে একটি কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্বীকার করতে দ্বিধা করি না যে, বঙ্গবন্ধু না হলে আমরা হয়তো এই স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের নাগরিক হতে পারতাম না। তা ছাড়া একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে যারা সফল করে তুলেছিলেন, সেই মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রী-কর্মকর্তা, সাংবাদিক, সেক্টর কমান্ডারসহ যারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রেখেছেন, তারা সবাই ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে সম্মানীয়। সে সম্মানের আসন থেকে তাদের নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
১৯৭১-এ প্রবাসী বাঙালিরাও অবদান রেখেছেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী তাঁর ‘প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি’ গ্রন্থে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের শান্তি সম্মেলনে অংশ নিতে যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভাইস চ্যান্সেলর আবু সাঈদ চৌধুরী দেশে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার খবর পেয়ে লন্ডনে এসে আত্মনিয়োগ করেছিলেন স্বদেশের স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধে। বিবিসিতে সে সময় কর্মরত প্রখ্যাত সাংবাদিক সিরাজুর রহমান তাঁর বই ‘ইতিহাস কথা কয় ও নির্বাচিত প্রবন্ধ’ গ্রন্থে তুলে ধরেছেন মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদের অবদানের কথা। বিএনপি নেতা ড.
এ প্রসঙ্গে অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। সমকালকে তিনি বলেছেন, “আমরা ইতিহাসের সত্যটা জানি। কোনো আইন বদল করে কারও অবদান বদলে দেওয়া যাবে না। এটি করার প্রয়োজন নেই। এগুলো ‘অপ্রয়োজনীয় কাজ’।” তিনি বলেছেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত, তাদের পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা ঠিক হবে না।’ জাতির এই বিবেকের বক্তব্যের সঙ্গে এতটুকু দ্বিমত প্রকাশের অবকাশ নেই।
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্বাধীনতার ইতিহাস ইচ্ছামতো সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ফল ভালো হয়নি। তারা মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক জিয়াউর রহমানকে ‘পাকিস্তানের চর’ আখ্যা দিয়ে হেয় প্রতিপন্ন করতে চেয়েছে। সে অপপ্রচার সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে জিয়ার অবস্থান অম্লান হয়ে আছে। তেমনি বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি, তাঁর শাসনামলের শত সমালোচনা থাকলেও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর অবদান কখনোই মুছে ফেলা যাবে না।
একটি কথা বলতেই হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সাম্প্রতিক কিছু কাজকর্ম ‘নেই কাজ, তো খই ভাজ’ প্রবাদকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। তারা আসল কাজ বাদ দিয়ে এমন সব কাজে হাত দিচ্ছে, যেগুলো তাদের করার কথা নয়। তাদের প্রধান দায়িত্ব সংবিধান ও নির্বাচন ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। কিন্তু তা না করে তারা নানা বিষয়ে এমন সব উদ্ভট সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা নতুন নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করছে। মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্তটিও তেমনি একটি অবিমৃষ্যকারী সিদ্ধান্ত। সরকারের উচিত দ্রুত এই হঠকারী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা।
মহিউদ্দিন খান মোহন: সাংবাদিক
ও রাজনীতি বিশ্লেষক
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সমক ল ন প রসঙ গ র স ব ধ নত র রহম ন সরক র র প রব স মন ত র অবদ ন সহয গ
এছাড়াও পড়ুন:
সকালের সবচেয়ে বরকতময় সময় ব্যবহারের ৭ কৌশল
সকাল মানুষের জীবনের একটি মূল্যবান সময়, যা দিনের বাকি অংশের জন্য সুর নির্ধারণ করে। সকাল আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার, শরীর ও মনকে প্রস্তুত করার এবং দিনের লক্ষ্য অর্জনের একটি সুবর্ণ সুযোগ।
সামাজিক মাধ্যম, কাজের চাপ এবং পারিবারিক দায়িত্ব আমাদের অনেক সময় কেড়ে নেয়, তাই সকালকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে আমরা জীবনকে আরও উৎপাদনশীল করতে পারি।
১. আল্লাহর সঙ্গে দিনের শুরুফজরের নামাজের ১৫-২০ মিনিট আগে উঠে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া এবং দোয়া করা জীবনকে আমূল বদলে দিতে পারে। এই সময়টি শান্ত ও পবিত্র, যখন আল্লাহর সঙ্গে কোনো বাধা থাকে না।
কে আছে আমাকে ডাকার, আমি সাড়া দেব? কে আছে আমার কাছে চাওয়ার, আমি দান করব? কে আছে ক্ষমা প্রার্থনা করার, আমি ক্ষমা করব?সহিহ বুখারি, হাদিস: ১,১৪৫নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘প্রতি রাতে, যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ বাকি থাকে, তখন আমাদের রব নিকটতম আসমানে নেমে আসেন এবং বলেন, ‘কে আছে আমাকে ডাকার, আমি সাড়া দেব? কে আছে আমার কাছে চাওয়ার, আমি দান করব? কে আছে ক্ষমা প্রার্থনা করার, আমি ক্ষমা করব?”’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১,১৪৫)।
তাহাজ্জুদের সময় আপনার হৃদয়ের কথা আল্লাহর কাছে প্রকাশ করুন। এতে মানসিক শান্তি বাড়বে এবং দিনের জন্য ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। যদি আপনি নতুন হন, সপ্তাহে এক দিন থেকে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে এটি অভ্যাসে পরিণত করুন।
ফজরের আগে অবশিষ্ট সময়ে কোরআন তিলাওয়াত করুন, কারণ কোরআনে বলা হয়েছে, ‘ভোরে কোরআন পড়া (ফেরেশতাদের) দ্বারা প্রত্যক্ষ করা হয়।’ (সুরা ইসরা. আয়াত: ৭৮)।
আরও পড়ুনইশরাকের নামাজ: সকালের আলোয় আল্লাহর নৈকট্য ০৪ জুলাই ২০২৫২. ফজরের পর ঘুম থেকে দূরে থাকুনফজরের নামাজের পর ঘুমিয়ে পড়া অনেকের অভ্যাস, কিন্তু এটি সকালের বরকতময় সময় নষ্ট করে। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ আমার উম্মতের জন্য সকালের সময়কে বরকতময় করেছেন।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৬,৪৮১)।
এই সময়ে বড় বড় কাজ সহজে সম্পন্ন করা যায়, কারণ এতে আল্লাহর বিশেষ বরকত রয়েছে।
আল্লাহ আমার উম্মতের জন্য সকালের সময়কে বরকতময় করেছেন। মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৬,৪৮১ফজরের পর ঘুমের প্রলোভন এড়াতে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। এই সময়ে পড়াশোনা, কোরআন মুখস্থ করা বা কোনো ব্যক্তিগত প্রকল্পে কাজ করা যায়। এটি দিনের বাকি সময়ে অবসরের জন্য সময় বাঁচায় এবং আগামী দিনে আরও তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তৈরি করে।
বিশ্বের সফল ব্যক্তিরাও ভোর চারটা বা পাঁচটায় উঠে কাজ শুরু করার কথা বলেন, যা তাদের সাফল্যের একটি রহস্য।
৩. করণীয় তালিকা তৈরি করুনএকটি করণীয় তালিকা তৈরি করা দিনের পরিকল্পনাকে সুসংগঠিত করে। আমরা প্রায়ই মনে মনে কাজের পরিকল্পনা করি, কিন্তু মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা সীমিত। একটি ডায়েরি বা ফোনের নোট অ্যাপে কাজের তালিকা লিখে রাখলে সময় ও শক্তি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়। সম্পন্ন হওয়া কাজগুলো তালিকা থেকে কেটে দেওয়ার একটা আলাদা আনন্দ আছে।
এই তালিকায় দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যও অন্তর্ভুক্ত করুন। যেমন কোরআনের একটি নির্দিষ্ট অংশ মুখস্থ করা বা একটি নতুন দক্ষতা শেখার পরিকল্পনা। এটি আপনাকে দিনের শুরুতে ফোকাসড রাখবে এবং উৎপাদনশীলতা বাড়াবে।
আরও পড়ুনযে ৪টি পরীক্ষা নবীজি (সা.)–এর জীবনকে দৃঢ়তা দিয়েছে২২ জুলাই ২০২৫বিশ্বের সফল ব্যক্তিরাও ভোর চারটা বা পাঁচটায় উঠে কাজ শুরু করার কথা বলেন, যা তাদের সাফল্যের একটি রহস্য।৪. সকালে স্ক্রিন থেকে দূরে থাকুনসকালের মূল্যবান সময় সামাজিক মাধ্যমে বা ফোনে অযথা স্ক্রল করে নষ্ট করা উচিত নয়। অনেকে সকালে ফোন হাতে নিয়ে ‘শুধু একটু দেখে নিই’ ভেবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হারিয়ে ফেলেন। এটি মানসিক চাপ বাড়ায় এবং সকালের শান্তি নষ্ট করে।
নিয়ম করুন, সকালের নাশতা বা কিছু কাজ শুরু না করা পর্যন্ত ফোন বা সামাজিক মাধ্যমে যাবেন না। সকালে খবর পড়া এড়িয়ে চলুন। কারণ, এটি নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে পারে। যখন ফোন ব্যবহার করবেন, তখন ইতিবাচক ও প্রেরণাদায়ক কনটেন্ট দেখুন, যা আপনার দিনকে উজ্জ্বল করবে।
৫. শরীরচর্চা করুনশরীরচর্চার উপকারিতা আমরা সবাই জানি। বিশেষ করে এই সময়ে, যখন অনেকে বাড়ি থেকে কাজ করছেন, শরীরচর্চা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। বাড়িতে কাজ করার ফলে ঘাড়ে ও পিঠে ব্যথা, পেশির সমস্যা বাড়ছে।
সকালে মাত্র ৩০ মিনিট শরীরচর্চা, যেমন যোগ, পাইলেটস, হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং বা ব্রিস্ক ওয়াক, আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াবে এবং মনকে সতেজ করবে।
ইউটিউবে হাজারো ধরনের ব্যায়ামের ভিডিও পাওয়া যায়, যা বাড়িতে সামান্য জায়গায় করা যায়। যদি বাইরে যাওয়ার সুযোগ থাকে, তবে সকালে ৩০ মিনিট হাঁটুন। লক্ষ্য হলো শরীরকে সচল রাখা এবং শক্তি বৃদ্ধি করা।
আরও পড়ুনসুস্থ জীবন যাপনে মহানবী (সা.)-এর ৯ অভ্যাস২৪ জুলাই ২০২৫সকালে মাত্র ৩০ মিনিট শরীরচর্চা, যেমন যোগ, পাইলেটস, হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং বা ব্রিস্ক ওয়াক, আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াবে এবং মনকে সতেজ করবে।৬. পুষ্টিকর নাশতা গ্রহণব্যস্ততার কারণে অনেকে সকালের নাশতা বাদ দেন, কিন্তু গবেষণা বলছে, পুষ্টিকর নাশতা দিনভর মনোযোগ বাড়ায়, অপ্রয়োজনীয় চিনির লোভ কমায় এবং শক্তি জোগায়। নাশতায় উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার, যেমন ওটস বা মাল্টিগ্রেইন রুটি, স্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন অ্যাভোকাডো বা বাদাম, গ্রিক ইয়োগার্ট এবং ফল অন্তর্ভুক্ত করুন।
সময় কম থাকলে একটি স্মুদি তৈরি করুন—পালংশাক, আপেল এবং হিমায়িত কলা ব্লেন্ড করে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর নাশতা তৈরি করা যায়। এটি দিনের শুরুতে সবুজ শাকসবজি গ্রহণের একটি সহজ উপায়।
৭. নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনবাড়ি থেকে কাজ করার সময় অনেকে ক্যাজুয়াল পোশাকে থাকেন। বরং সকালে সুন্দর পোশাক পরুন, যা আপনার মেজাজ উজ্জ্বল করবে। একটু পছন্দের সুগন্ধি ব্যবহার করলে আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
আল্লাহ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১নবীজি (সা) বলেছেন, ‘আল্লাহ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১)। নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা শুধু বাহ্যিক নয়, বরং এটি আপনার মানসিক প্রস্তুতি ও দিনের জন্য উৎসাহ বাড়ায়।
সকাল আমাদের দিনের ভিত্তি। ইসলাম আমাদের শেখায় যে সকাল আল্লাহর বরকত নিয়ে আসে। তাহাজ্জুদ, ফজরের পর জাগ্রত থাকা, করণীয় তালিকা তৈরি, স্ক্রিন থেকে দূরে থাকা, শরীরচর্চা, পুষ্টিকর নাশতা এবং নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন—এই সাতটি অভ্যাস আমাদের সকালকে উৎপাদনশীল করবে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
সূত্র: দ্য মুসলিম ভাইব ডট কম
আরও পড়ুনরহমতের দুয়ারে হাজিরা১৫ জুন ২০২৪