প্রতিবারের মতো এবারও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মার্চের শেষ এবং এপ্রিল মাসের গোড়ায় ঈদ এবং রামনবমী উদ্‌যাপিত হতে যাচ্ছে। এ নিয়ে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা করছে পুলিশ। মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের গোড়ায় রামনবমী পর্যন্ত বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে বলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

অন্যদিকে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) ধর্মীয় শাখা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বিজেপির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ৬ এপ্রিল রামনবমীর দিন এবং তার আগে শোভাযাত্রা ও মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিধানসভায় বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, নানা প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে গিয়ে তাঁরা রামনবমী পালন করবেন।

আগামী বছর এই সময় পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে মাঠপর্যায়ে নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শনের একটা বড় সুযোগ রামের জন্মদিন বা রামনবমী উদ্‌যাপন। প্রতিবারই এই দিনটা আসে ঈদের পরেই এবং পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় রামনবমীর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় রমজান চলাকালে। ফলে সব সময়ই গন্ডগোলের একটা আশঙ্কা থাকে। এবারও আছে।

পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি প্রশাসনের মাথায় থাকে। নতুন করে কিছু করার বা বলার নেই। প্রতিবারই যে নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকে, এবারও তা থাকবে। প্রশাসনের তরফে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ ও রামনবমী উদ্‌যাপনের আবেদন জানানো হয়, এবারও হবে। নির্বাচন দেরি আছে। ফলে এর সঙ্গে বিষয়টিকে জুড়ে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে না।

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে একাধিক মিছিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে বেরোবে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, তাঁরা তাঁদের মতো মিছিল করবেন এবং কোনো রকম বাধা বরদাশত করা হবে না।

গত রোববার এক অনুষ্ঠানে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, রামনবমী মিছিল নিয়ে কেউ বাধা দিতে এলে শান্তিপূর্ণভাবে তার মোকাবিলা এবং প্রতিরোধ করা হবে। যেকোনো ধরনের বাধার মোকাবিলা করতে হবে। এমনকি প্রশাসনও বাধা দিলে তার বিরোধিতা করতে হবে। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত সহ্য করা হবে না।

এর আগে শুভেন্দু অধিকারীও বলেছিলেন, রাজ্যের রামনবমী উদ্‌যাপনে বাধা দেওয়া হচ্ছে, যা মেনে নেওয়া হবে না। রামনবমী উপলক্ষে সারা রাজ্যে ১ কোটি মানুষকে পথে নামার আহ্বান জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।

রামনবমীতে নানা ধরনের অস্ত্র হাতে মিছিল করা হয়। অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন অঞ্চলে মিউজিক বক্স বাজিয়ে গান চালানো, স্লোগান বা ছোটখাটো বাদানুবাদ থেকে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এর থেকে মার্চের শেষ ও এপ্রিলের গোড়ায় মাঝারি ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটে।

পুলিশের কর্মকর্তা বলেন, ‘সবকিছু মাথায় রেখে এই সময়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা অনেকটাই জোরদার করা হয়। তবে আগামী বছরে নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে বলে আমার মনে হয় না। কারণ, নির্বাচনের অনেক দেরি আছে। নির্বাচনের সঙ্গে এই সময়ের উৎসব-অনুষ্ঠানকে মিলিয়ে দেখা হয় না।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অতিরিক্ত মোটা হওয়ায় যাত্রীকে তুলতে অস্বীকৃতি উবার চালকের

চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য সম্প্রতি রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান উবারের একটি গাড়ি ডেকেছিলেন মাইকেল। গাড়িটি আসার পর দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতে যেতেই বাধল বিপত্তি। ‘অতিরিক্ত মোটা’ হওয়ায় চালক তাঁকে গাড়িতে তুলতে অস্বীকৃতি জানান। যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

গেমিং প্ল্যাটফর্ম টুইচের জনপ্রিয় স্ট্রিমার মাইকেল। ওই প্ল্যাটফর্মে তাঁর ৬০ হাজারের বেশি সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। তিনি তাঁর কল অব ডিউটি গেমপ্লের জন্য পরিচিত।

মাইকেল সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। ভিডিওর শিরোনামে তিনি লিখেছেন, ‘আমি মজা করছি না। আমার উবার চালক বলেছেন, আমি নাকি অনেক বেশি মোটা। তাই তাঁর গাড়িতে আমাকে নেওয়া সম্ভব নয়। এমনকি তিনি আমার দিকে বন্দুক তাক করার হুমকিও দিয়েছেন।’ মাইকেলের ওই ভিডিও পাঁচ কোটিবারের বেশি দেখা হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, মাইকেল উবারের গাড়িচালককে বলছেন, ‘আপনি এইমাত্র বললেন, আমি নাকি অনেক বেশি মোটা। আমি কিন্তু আপনার ভিডিও করছি।’ উত্তরে উবার চালক নারী বলেন, ‘এটা যুক্তি আর বাস্তবতার ব্যাপার। আর আমি এটা বলার অধিকার রাখি।’ কিন্তু বাক্যটি শেষ করার আগেই মাইকেল তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘না, আপনি এটা বলতে পারেন না।’ তখন ওই নারী হাত উঁচিয়ে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি পারি। এটা আমার গাড়ি। আপনি এখান থেকে চলে যান।’

বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে ওই উবার চালক বলেন, ‘আপনি কি চান, আমি আমার বন্দুকটা বের করি?’ এ কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে মাইকেল গাড়ির দরজা বন্ধ করে সেখান থেকে চলে যান। এক্সে দেওয়া অন্য একটি পোস্টে মাইকেল বলেন, এ ঘটনার কারণে তিনি সেদিন চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেননি।

উবারের নীতি অনুযায়ী, চালকেরা বৈধ কারণ ছাড়া কোনো যাত্রীকে গাড়িতে তুলতে অস্বীকৃতি জানাতে পারবেন না। ওজন, লিঙ্গ, বর্ণ কিংবা ধর্মের ভিত্তিতে কোনো যাত্রীর সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা সম্পূর্ণ নিষেধ।

এই ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর উবার চালকের আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন অনেকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ