আবাসিক হল খোলা রাখার দাবিতে কাঁথা-বালিশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের অবস্থান
Published: 27th, March 2025 GMT
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খোলা রাখার দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে প্রশাসন ভবনের সামনে তাঁরা এই কর্মসূচি শুরু করেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে ছিল আবাসিক হল থেকে আনা কাঁথা ও বালিশ।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলছেন, কয়েক বছর ধরে ঈদের সময়েও আবাসিক হল খোলা ছিল। তখন আবাসিক হলে ছাত্রলীগের ভয়ের সংস্কৃতি ছিল। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর সেটা নেই। এখন নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে হল বন্ধ রাখা যাবে না। যদি হল খুলে না দেওয়া হয়, তবে তাঁরা প্রশাসন ভবনের সামনে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার ও গতকাল বুধবার শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনের সামনে বিকেল থেকে একই দাবিতে অবস্থান করেন।
সম্প্রতি প্রাধ্যক্ষ পরিষদ নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে এবারের ঈদে আবাসিক হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে আবাসিক হলে অবস্থানরত সব শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে হবে। ২৮ মার্চ থেকে আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত হল বন্ধ থাকবে। ৪ এপ্রিল সকাল ১০টায় আবাসিক হল খুলে দেওয়া হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ১৭টি আবাসিক হল রয়েছে। ২০২২ সাল থেকে ঈদের ছুটিতে আবাসিক হলগুলো খোলা ছিল।
আজ আজ সকালে প্রশাসন ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন শিক্ষার্থী কাঁথা–বিছানাপত্র বিছিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁদের সামনে রাখা হয়েছে বালিশ, মশারি, ব্যাগ। কয়েকজন শিক্ষার্থী আবাসিক হল বন্ধ করা যাবে না–বিষয়ক প্ল্যাকার্ড নিয়ে বসেছেন।
আরও পড়ুনঈদের ছুটিতে আবাসিক হল খোলা রাখার দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান১৫ ঘণ্টা আগেঅবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া পটুয়াখালীর বাসিন্দা ও নবাব আবদুল লতিফ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ইমরান হোসাইন বলেন, রাজশাহী থেকে পটুয়াখালী যেতেই শুধু বাসভাড়া সাড়ে ৯০০ টাকা। ১০ ঘণ্টার মতো শুধু যেতেই সময় লাগে। আর ঈদের পর ৯ মার্চ থেকে তাঁর পরীক্ষা। এখন পড়াশোনার ব্যাপার আছে, পরীক্ষার ব্যাপারও আছে। আবার আর্থিক সমস্যাও আছে। এ অবস্থায় বাড়ি যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
নেত্রকোনার বাসিন্দা ও শহীদ ড.
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক শিক্ষর্থী ও বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর রাবি শাখার সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, তাঁরা তিন দিন ধরে অবস্থান করছেন। কিন্তু প্রশাসন কোনো কথা শুনছে না। আগের প্রশাসনের সঙ্গে এই প্রশাসনের মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই। দাবি না মানা হলে তাঁরা প্রশাসন ভবন আটকে দেবেন। হল বন্ধ করে দিলে তাঁরা প্রশাসন ভবনের সামনেই রাত্রিযাপন করবেন।
প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক বায়তুল মোকাদ্দেছুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর বাইরে আর অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নেই। আবাসিক হল বন্ধই থাকবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন বল ন
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।
এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।
শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।
সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫