ঈদের টানা ৯ দিনের ছুটিতে পুরো দেশ। বন্ধ ব্যাংকের শাখা। এ অবস্থায় সব এটিএম বুথে সার্বক্ষণিক অর্থ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি সব ধরনের অনলাইন লেনদেন ব্যবস্থা সক্রিয় রাখতে গত বৃহস্পতিবার আগাম নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গ্রাহক কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে অভিযোগ জানাতে বা সমাধান পেতে ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সার্বক্ষণিক হেল্প লাইন চালু রাখার নির্দেশনা রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে। এসব নির্দেশনা সত্ত্বেও ঢাকাসহ দেশের নানা অঞ্চলে বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএমে টাকা না থাকা এবং লেনদেন বন্ধ থাকার ঘটনা রয়েছে।
দেশে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি মিলে ৬১ ব্যাংকের প্রায় ১৩ হাজার এটিএম বুথ সক্রিয়। এর মধ্যে সর্বাধিক বুথ পরিচালনা করছে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক। ব্যাংকটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মোহাম্মদ সহিদ উল্লাহ গতকাল শনিবার সমকালকে জানান, দেশব্যাপী তাদের সব বুথ সচল আছে। 
ওই সময় পর্যন্ত কোনো অভিযোগ ছিল না। তিনি বলেন, প্রতিটি বুথেই তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে পর্যাপ্ত টাকা রাখার ব্যবস্থা করা আছে। ঈদের আগের দিন ও পরের দিন টাকা রাখা হবে। শুধু ঈদের দিন ছুটি থাকবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ থেকে জারি করা ওই সার্কুলারে বলা হয়, ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা সার্বক্ষণিকভাবে খোলা রাখতে 
হবে। এটিএম বুথ, অনলাইন ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু থাকবে। গ্রাহকের সুবিধার্থে এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত টাকা রাখারও নির্দেশনা দেওয়া হয়। 
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের প্রতি নির্দেশনাসহ সার্কুলারটি জারি করা হয়। একই সঙ্গে সব মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস প্রোভাইডার, পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার ও পেমেন্ট সার্ভিস অপারেটরদের প্রতিও সার্কুলারে তাদের নিরবচ্ছিন্ন সেবা চালু রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে এটিএম সেবা প্রদানকারী ব্যাংকগুলোকে বলা হয়, সার্বক্ষণিক এটিএম সেবা নিশ্চিত করতে হবে। কোথাও কোনো কারিগরি ত্রুটি দেখা দিলে তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিরসন করতে হবে। এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তাদের এটিএম বুথ পরিদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।
মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রদানকারী ব্যাংক এবং তা তাদের সহযোগী কোম্পানির প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিও সার্বক্ষণিক লেনদেন ব্যবস্থা চালু রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয় এবং এজেন্ট পয়েন্টে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ রাখতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের সাইবার নিরাপত্তা এবং সব ধরনের জালিয়াতি প্রতিরোধে সব ধরনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে কোনো সাইবার হামলার বার্তা পেলে সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহককে সতর্ক করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সার্কুলারে ছুটি চলাকালে যে কোনো অঙ্কের লেনদেনের তথ্য গ্রাহকের মোবাইলে এসএমএস অ্যালার্ট সার্ভিসের মাধ্যমে অবহিত করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে সব ধরনের পেমেন্ট সেবার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বনের জন্য গণমাধ্যমে প্রচার চালাতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সব ধরন র পর য প ত ব যবস থ ল নদ ন ত করত

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ