এক দেশে ছিল এক সুইট-কিউট রাজা। আর তার ছিল এক ফেসবুক আইডি। নাম ‘কিং দ্য রাজা’। রাজা সারা দিনই ফেসবুকে পড়ে থাকেন। দরবারের ছবি শেয়ার করেন। শিকারে যাওয়ার ছবি শেয়ার করেন। ‘মি অ্যান্ড কুইন’ ক্যাপশনে রানির সঙ্গে ছবি শেয়ার করেন। প্রজাদের ‘nyc lagca dugonka’ কমেন্টের পর কমেন্ট পড়তে থাকে। রাজার একটু মন খারাপ হলেই ‘অদ্য মোর চিত্ত প্রফুল্ল নহে’ লিখে, দুঃখের ইমো দিয়ে স্ট্যাটাস দেন। হাজার হাজার হার্ট, কেয়ার পড়ে সেসবে।
কিন্তু ইদানীং ফেসবুকে ঢুকলেই রাজার অস্থির লাগতে থাকে। বুক ধড়ফড় করে। মাথা ঝিমঝিম করে। রাজা উজিরকে নক দিয়ে বলেন, ‘কল দ্য বৈদ্য।’
উজির রিপ্লাই দেন, ‘সহমত জাহাঁপনা।’
বৈদ্য আসেন। ফেসবুক নিয়ে রাজার অস্থিরতার কথা শোনেন। নিজেও একটুখানি রাজার ফেসবুকের হোমপেজ স্ক্রল করে দেখেন। মিম, ট্রল, রিল, এই মত, ওই মত, উদ্ভট ভিডিও, ছবি, খুন, মারামারি, কাটাকাটি, এ বাটপার, ও জোচ্চোর, সে ফেইক.
উজির জানান, সেটা সম্ভব না। রাজ্যের অনেক কাজ মেসেঞ্জার গ্রুপে করতে হয়। সব দপ্তরের অফিশিয়াল পেজ আছে। রাজা সব কটির অ্যাডমিন।
রাজা দমে যান। বলেন, ‘কোনো কি পথ নেই?’
বৈদ্য ভেবে বলেন, ‘আছে। কিন্তু সেটা বড়ই কঠিন।’
উজির হাতে কিল দিয়ে বলেন, ‘আমাদের রাজার কাছে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। বলুন কী করতে হবে।’
বৈদ্য জানান, রাজার ফ্রেন্ডলিস্টে সুখী মানুষ অ্যাড করতে হবে। সুখী মানুষের টাইমলাইনই পারবে রাজাকে বাঁচাতে।
উজির হেসে বলেন, ‘এ আর এমন কী। এখনই করছি।’
উজির সঙ্গে সঙ্গে ‘সুখী মানুষ’, ‘হ্যাপি ম্যান’ লিখে সার্চ করতে শুরু করলেন। কিন্তু দেখা গেল বেশির ভাগ অ্যাকাউন্টই ভুয়া। যে কটা অ্যাকাউন্ট আসল, সেগুলোতেও হতাশার ছড়াছড়ি।
রাজা এবার তাঁর নিজের ফেক আইডি থেকে ডেসপারেটলি সিকিং গ্রুপে পোস্ট দেন, ‘কেউ সুখী মানুষ কোথায় পাওয়া যায় বলতে পারেন?’ একজন লিখল, পাগলাগারদে দেখতে পারেন। একজন বলল, আমার বউয়ের নাম হ্যাপি। আপনি চাইলে তাকে দেখে যেতে পারেন। রাজার বুক ধড়ফড়ানি বেড়ে যায়।
উজির বললেন, বুঝেছি। ভার্চ্যুয়ালি সুখী কাউকে পাওয়া যাবে না। রাজ্যের অলিগলিতে খুঁজতে হবে সুখী মানুষ।
যে–ই কথা সে–ই কাজ। উজির-নাজির, সিপাহসালার, পাইক-পেয়াদা সবাই ছড়িয়ে পড়ল দিগ্বিদিক। কিন্তু কোথাও সুখী মানুষের খোঁজ নাই। দিন যায়, মাস যায়। রাজার ফেসবুকাসাইটিস বাড়ে। বুক ধড়ফড় বাড়ে। অস্থিরতা বাড়ে। রাজা এখন সারা দিনই হতাশায় থাকেন। বৈদ্য বলেন, ‘ক্রনিক অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার। এখনই বিহিত করতে হবে।’ রাজা আরও মুষড়ে পড়েন।
অবশেষে একদিন, খুঁজতে খুঁজতে খুঁজতে খুঁজতে সন্ধান মেলে এক সুখী মানুষের। তাঁর কোনো দুঃখ নাই। অস্থিরতা নাই। ডিপ্রেশন নাই। উজির আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘এত দিন কোথায় ছিলে! কত ডেসপারেটলি তোমাকে খুঁজছিলাম!’
‘কেন?’
উজির বলেন, ‘রাজার কঠিন ব্যামো। বৈদ্য বলেছেন সুখী মানুষ রাজার ফেসবুক ফ্রেন্ড হলেই ব্যামো কাটবে। তুমি এখনই রাজাকে অ্যাড রিকোয়েস্ট দাও।’
মানুষটি নির্মল হাসি হেসে বলেন, ‘কিন্তু আমার তো কোনো ফেসবুক আইডি-ই নাই।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৫০ পেরোনো নারীর খাদ্যাভ্যাস যেমন হতে হবে
জীবনের পাঁচটি দশক পেরিয়ে আসা একজন নারীর সামনে জীবনটা দেখা দেয় এক ভিন্ন রূপে। শারীরিক পরিবর্তন তো ঘটেই, মনের জগতেও ঘটে অদলবদল। অনেকের ধারণা, এই বয়সে এসে খাবারদাবারের প্রতি তেমন গুরুত্ব না দিলেও চলে। বাস্তবতা হলো, এই বয়সে দেহের চাই আরও বেশি যত্ন, আরও বেশি মনোযোগ। সুস্থ থাকতে বিশেষ কিছু পুষ্টি উপাদান যেমন প্রয়োজন, তেমনি নির্দিষ্ট ধরনের খাবার বাদ দেওয়াও জরুরি। পরিবারের ৫০ পেরোনো নারীর সুস্থতা নিশ্চিত করতে সেসব দেখভালের দায়িত্ব নিতে হবে বাকিদেরও।
এই বয়সে ক্যালসিয়ামের ঘাটতির ঝুঁকিতে থাকেন একজন নারী। ক্যালসিয়ামের অভাবে হাড় ক্ষয়ে যায়, ভেঙে যায় সহজেই। পড়ে গেলে তো ভাঙেই, জোরে টান লাগলেও হাড় ভেঙে যেতে পারে কারও কারও। টাঙ্গাইলের সরকারি কুমুদিনী কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান বলেন, ‘৫০ পেরোনোর পর একজন নারীর ক্যালসিয়ামের চাহিদা বাড়ে। হাড়ক্ষয়ের ঝুঁকি এড়াতে এই বয়সেও ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে রোজ। পরিবারের খুদে সদস্যটির জন্য যেমন, তেমনি বয়োজ্যেষ্ঠ নারীর জন্যও রোজ এক গ্লাস দুধ বরাদ্দ রাখতে হবে। এই ক্যালসিয়ামকে পুরোপুরিভাবে দেহের কাজে লাগাতে প্রয়োজন ভিটামিন ডি। সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে।’
ক্যালসিয়ামের বিকল্প নেই
এক গ্লাস দুধ কিংবা তা দিয়ে তৈরি খাবার খেতে পারেন রোজ। দই বা লাচ্ছি খেতে পারেন। কাঁটাসহ ছোট মাছ খেতে পারলে তা থেকেও ক্যালসিয়াম মিলবে। গাঢ় সবুজ রঙের শাকসবজি, যেমন পালংশাক, ব্রকলি ও কাঠবাদামেও পাবেন কিছুটা ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়ামের উপকার পেতে অবশ্যই ভিটামিন ডি চাই। এর জন্য রোজ রোদে সময় কাটানোর অভ্যাস করুন। দেহের বেশ খানিকটা অংশে প্রতিদিন রোদ লাগান, অন্তত ২০ মিনিট ধরে।
রোজ দুধ খেলে শরীর ভালো থাকবে