সবচেয়ে বেশি মেডেন ওভার, এমনকি সুপার ওভারেও মেডেন নেওয়ার কীর্তি, কমপক্ষে ১০০ ইনিংসে বল করা বোলারদের মধ্যে তৃতীয় সর্বনিম্ন ইকোনমি রেট—স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে সুনীল নারাইনের একেকটি পরিসংখ্যান দেখলে যে কেউ বলবেন, এই সংস্করণে তিনি অন্যতম সেরা। কারও কারও চোখে হয়তো সর্বকালের সেরাও।
নারাইন আরেকটি বিশ্ব রেকর্ড গড়ার পথে। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে এক দলের হয়ে ২০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন তিনি, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে এই কীর্তি গড়েছেন ক্যারিবীয় স্পিনার। সবচেয়ে বেশি ২০৮ উইকেট নিয়েছেন সামিত প্যাটেল, ইংলিশ কাউন্টি ক্লাব নটিংহামশায়ারের হয়ে।
কলকাতার জার্সিতে ২০০ উইকেট নিতে নারাইনকে ১৮৭ ইনিংসে বল করতে হয়েছে। ২০০ উইকেটের মধ্যে ১৮২টি নিয়েছেন আইপিএলে, ১৮টি বিলুপ্ত চ্যাম্পিয়নস লিগ টি-টোয়েন্টিতে।
দলটির হয়ে ১৯৯ উইকেট নিয়ে আইপিএলে কাল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন নারাইন। ইডেন গার্ডেনে হায়দরাবাদ ইনিংসের দশম ওভারে অভিষিক্ত কামিন্দু মেন্ডিসকে বদলি ফিল্ডার অনুকূল রায়ের ক্যাচ বানিয়ে ২০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন।
হায়দরাবাদকে কাল ৮০ রানে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার পাঁচে উঠে এসেছে কলকাতা। চার ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের পয়েন্ট ৪। এই মৌসুমে প্লে-অফের আগে আরও ১০টি ম্যাচ খেলবে কলকাতা। সেই ১০ ম্যাচে ৯ উইকেট পেলেই সামিত প্যাটেলকে ছাড়িয়ে টি-টোয়েন্টিতে এক দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার বিশ্ব রেকর্ড গড়বেন নারাইন।
আরও পড়ুনব্যাট দিয়ে স্টাম্প ভেঙেও কেন হিট আউট হলেন না নারাইন২৩ মার্চ ২০২৫ইংল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার সামিত প্যাটেল ২০০৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নটিংহামশায়ারের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। গত বছর তিনি নটিংহাম ছেড়ে নাম লিখিয়েছেন ডার্বিশায়ারে। এই কাউন্টি ক্লাবের সঙ্গে ২০২৫ সাল পর্যন্ত চুক্তি আছে তাঁর।
বয়স ৪০ পেরিয়ে যাওয়া সামিত ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে আছেন, তা বলাই যায়। নটিংহাম তাঁকে আর ফেরাবে বলেও মনে হয় না। ফলে সামিতকে নটিংহামের হয়ে ২০৮ উইকেটেই আটকে থাকতে হতে পারে। ৩৬ বছর বয়সী নারাইন এ সুযোগে তাঁকে অনায়াসেই ছাড়িয়ে যেতে পারেন।
নটিংহামশায়ারের হয়ে টি–টোয়েন্টিতে ২০৮ উইকেট নিয়েছেন সামিত প্যাটেল.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উইক ট ন ন র ইন কলক ত
এছাড়াও পড়ুন:
হাজার কোটি টাকা নিট মুনাফার মাইলফলকে সিটি ব্যাংক
২০২৪ সালে এক অনন্য মাইলফলক স্থাপন করেছে দেশীয় মালিকানাধীন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সিটি ব্যাংক। গত বছর ব্যাংকটি সমন্বিতভাবে ১,০১৪ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে যা এখন পর্যন্ত ব্যাংকের ৪২ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। সিটি ব্যাংক এককভাবে ১,০৮৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা অর্জন করলেও সহযোগী দুটি প্রতিষ্ঠানের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বাজারমূল্য হ্রাস পাওয়ায় প্রভিশন ব্যয় হওয়ার কারণে ব্যাংকের সমন্বিত নিট মুনাফা ১,০১৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সিটি ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
২০২৩ সালে ব্যাংকটির সমন্বিত নিট মুনাফা ছিল ৬৩৮ কোটি টাকা। সে তুলনায় ২০২৪ সালে সমন্বিত মুনাফা বেড়েছে ৩৭৬ কোটি টাকা বা ৫৯ শতাংশ- যা সিটি ব্যাংকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় ২০২৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করে ব্যাংকটি। সেই সঙ্গে ঘোষণা করা হয় ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ, যার মধ্যে ১২.৫ শতাংশ নগদ এবং ১২.৫ শতাংশ বোনাস। গত বছরও একই হারে লভ্যাংশ দিয়েছিল সিটি ব্যাংক। শেয়ারধারীদের অনুমোদনের পর এই লভ্যাংশ বার্ষিক সাধারণ সভায় বিতরণ করা হবে। ঘোষিত নগদ লভ্যাংশে ব্যয় হবে প্রায় ১৭০ কোটি টাকারও বেশি। পাশাপাশি বোনাস হিসেবে প্রতি ১০০ শেয়ারের বিপরীতে ১২.৫টি নতুন শেয়ার দেওয়া হবে।
রেকর্ড মুনাফার প্রভাব পড়েছে ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয়েও। ২০২৩ সালের ৪.৭৪ টাকার তুলনায় ২০২৪ সালে ইপিএস বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৫৩ টাকায়, অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি ৫৮.৯ শতাংশ। একইভাবে শেয়ারপ্রতি প্রকৃত সম্পদমূল্য বেড়ে হয়েছে ৩৪.৩৯ টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৫.৩৮ টাকা বা ২০.৪১ শতাংশ বেশি।
রেকর্ড মুনাফার কারণ জানতে চাইলে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘মানুষ আমাদের ওপর আস্থা রেখে আমানত রেখেছে। আয়-ব্যয়ের অনুপাত ৬০ শতাংশ থেকে কমে ৪২ শতাংশে নেমে এসেছে। ফলে মুনাফায় বড় উল্লম্ফন ঘটেছে। আমরা কর্মীদের বেতন বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করেছি, যা কর্মীদের উৎসাহিত করেছে। আমাদের পরিচালনা পর্ষদ সৎ ও মেধাবী। ব্যাংকে ঈর্ষণীয় পর্যায়ের সুশাসন বিদ্যমান। এসবই রেকর্ড মুনাফার পেছনের মূল কারণ।’
২০২৪ সালে ব্যাংকের আমানত বেড়েছে ৩১ শতাংশ বা ১২,১৭৭ কোটি টাকা, যেখানে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১২ শতাংশ বা ৪,৮৩১ কোটি টাকা। এই উদ্বৃত্ত তহবিলের বড় একটি অংশ সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা হয়েছে, যা আগের বিনিয়োগ থেকে ৬,১৫০ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২,৪৮৮ কোটি টাকায়।