ট্রাম্পের শুল্কনীতিতে কি শেষ আফ্রিকার মুক্ত বাণিজ্যের যুগ
Published: 5th, April 2025 GMT
দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি আফ্রিকার অর্থনীতিকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শুল্কনীতি কার্যত আফ্রিকান গ্রোথ অ্যান্ড অপরচুনিটি অ্যাক্টকে (এজিওএ) নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে আফ্রিকান দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের সুবিধা দিয়ে আসছিল।
আফ্রিকার সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে ২০০০ সালে এজিওএ চালু হয়। এর ফলে আফ্রিকার বহু দেশে শিল্প ও রপ্তানি বাড়ার সুযোগ তৈরি হয়। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্কনীতির ফলে এই সুবিধা হুমকির মুখে পড়েছে। ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হওয়া সব পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। পাশাপাশি ‘বাণিজ্যের ক্ষেত্রে খারাপ আচরণকারী’ দেশগুলোর ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এই শাস্তিমূলক শুল্কের তালিকায় আছে আফ্রিকার সবচেয়ে বড় অর্থনীতি নাইজেরিয়া (১৪%) এবং দক্ষিণ আফ্রিকা (৩১%)।
এতে বিশেষভাবে ক্ষতির মুখে পড়বে দক্ষিণ আফ্রিকার গাড়ি রপ্তানি খাত। কেননা, দেশটি এজিওএর আওতায় বছরে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের গাড়ি ও খুচরা যন্ত্রাংশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করত। এ ছাড়া বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আফ্রিকার ছোট দেশগুলো।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা এই শুল্ককে ‘শাস্তিমূলক’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এটি বাণিজ্যিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে বাধা সৃষ্টি করবে। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, দক্ষিণ আফ্রিকা মার্কিন পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যা অযৌক্তিকভাবে উচ্চ। লেসোথো ৯৯ শতাংশ এবং মাদাগাস্কার ৯৩ শতাংশ হারে মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বসায় বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
এদিকে ২০১৫ সালে ১০ বছর বাড়ানোর পর এজিওএর মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে। এর পর ট্রাম্প প্রশাসন এটি পুনরায় নবায়ন করবে কিনা, তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এজিওএর আওতায় ৩২টি আফ্রিকান দেশ যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন পণ্য শুল্কমুক্ত রপ্তানি করত। তবে ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি কার্যকর থাকলে এই সুবিধা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আফ্রিকার দেশগুলো এখন চীনের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হবে। কারণ, চীন গত ২০ বছরে আফ্রিকার শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদার হয়ে উঠেছে। তারা ইতোমধ্যেই আফ্রিকার প্রধান তেল, লোহা এবং কৃষিজাত পণ্য আমদানিকারক এবং দেশটি বড় অঙ্কের ঋণও দিয়েছে আফ্রিকাকে।
নতুন শুল্কনীতিতে কেনিয়া, ঘানা এবং ইথিওপিয়ার মতো দেশগুলোর ওপর সরাসরি অতিরিক্ত শুল্ক না বসলেও, তারা ১০ শতাংশ সাধারণ শুল্কের আওতায় পড়বে, যাতে রপ্তানি ব্যয় বাড়বে। এর ফলে আফ্রিকান পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক বাজার সংকুচিত হবে এবং বহু মানুষের চাকরি হারানোর ঝুঁকি তৈরি হবে। আফ্রিকার দেশগুলো এই সংকট মোকাবিলায় বিভিন্ন কৌশল নিতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকা আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বেশির ভাগ দেশ চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর দিকে ঝুঁকবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের
ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।