দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি আফ্রিকার অর্থনীতিকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শুল্কনীতি কার্যত আফ্রিকান গ্রোথ অ্যান্ড অপরচুনিটি অ্যাক্টকে (এজিওএ) নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে আফ্রিকান দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের সুবিধা দিয়ে আসছিল।

আফ্রিকার সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে ২০০০ সালে এজিওএ চালু হয়। এর ফলে আফ্রিকার বহু দেশে শিল্প ও রপ্তানি বাড়ার সুযোগ তৈরি হয়। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্কনীতির ফলে এই সুবিধা হুমকির মুখে পড়েছে। ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হওয়া সব পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। পাশাপাশি ‘বাণিজ্যের ক্ষেত্রে খারাপ আচরণকারী’ দেশগুলোর ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এই শাস্তিমূলক শুল্কের তালিকায় আছে আফ্রিকার সবচেয়ে বড় অর্থনীতি নাইজেরিয়া (১৪%) এবং দক্ষিণ আফ্রিকা (৩১%)।

এতে বিশেষভাবে ক্ষতির মুখে পড়বে দক্ষিণ আফ্রিকার গাড়ি রপ্তানি খাত। কেননা, দেশটি এজিওএর আওতায় বছরে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের গাড়ি ও খুচরা যন্ত্রাংশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করত। এ ছাড়া বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আফ্রিকার ছোট দেশগুলো। 

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা এই শুল্ককে ‘শাস্তিমূলক’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এটি বাণিজ্যিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে বাধা সৃষ্টি করবে। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, দক্ষিণ আফ্রিকা মার্কিন পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যা অযৌক্তিকভাবে উচ্চ। লেসোথো ৯৯ শতাংশ এবং মাদাগাস্কার ৯৩ শতাংশ হারে মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বসায় বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।

এদিকে ২০১৫ সালে ১০ বছর বাড়ানোর পর এজিওএর মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে। এর পর ট্রাম্প প্রশাসন এটি পুনরায় নবায়ন করবে কিনা, তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এজিওএর আওতায় ৩২টি আফ্রিকান দেশ যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন পণ্য শুল্কমুক্ত রপ্তানি করত। তবে ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি কার্যকর থাকলে এই সুবিধা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আফ্রিকার দেশগুলো এখন চীনের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হবে। কারণ, চীন গত ২০ বছরে আফ্রিকার শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদার হয়ে উঠেছে। তারা ইতোমধ্যেই আফ্রিকার প্রধান তেল, লোহা এবং কৃষিজাত পণ্য আমদানিকারক এবং দেশটি বড় অঙ্কের ঋণও দিয়েছে আফ্রিকাকে।

নতুন শুল্কনীতিতে কেনিয়া, ঘানা এবং ইথিওপিয়ার মতো দেশগুলোর ওপর সরাসরি অতিরিক্ত শুল্ক না বসলেও, তারা ১০ শতাংশ সাধারণ শুল্কের আওতায় পড়বে, যাতে রপ্তানি ব্যয় বাড়বে। এর ফলে আফ্রিকান পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক বাজার সংকুচিত হবে এবং বহু মানুষের চাকরি হারানোর ঝুঁকি তৈরি হবে। আফ্রিকার দেশগুলো এই সংকট মোকাবিলায় বিভিন্ন কৌশল নিতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকা আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বেশির ভাগ দেশ চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর দিকে ঝুঁকবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া’

ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীনন্দা শঙ্কর। সৃজিত মুখার্জির ‘এক যে ছিল রাজা’, সুমন ঘোষের ‘বসুপরিবার’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই তারকা। বলা যায়, টলিউডের প্রথম সারির সব নির্মাতার সঙ্গেই কাজ করেছেন এই নৃত্যশিল্পী। 

গত কয়েক বছর ধরে কলকাতা ছেড়ে মুম্বাইয়ে বসবাস করছেন শ্রীনন্দা। সেখানে সংসার, কাজ নিয়ে সময় কাটছে তার। তবে অভিনয়ে নেই। অভিনয় থেকে দূরে থাকার কারণ কী? ফের কী অভিনয়ে ফিরবেন না শ্রীনন্দা?  

ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে আলাপকালে এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শ্রীনন্দা। এ অভিনেত্রী বলেন, “টলিউডে যাদের সঙ্গেই কাজ করেছি, তাদের সঙ্গে এখনো আমার খুব ভালো সম্পর্ক। ভীষণ ভালো অভিজ্ঞতাও বলা চলে। মুশকিল হলো, বাংলা সিনেমায় তেমন বাজেট থাকে না। সত্যিই যদি খুব ভালো সিনেমা হয় বা এমন কোনো পরিচালক আমাকে অফার দেন যেখানে কোনো ভাবেই ‘না’ করব না। আমি নিশ্চয়ই আবার অভিনয়ে ফিরব।”

আরো পড়ুন:

কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী

পরিচালকের আপত্তিকর মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন শোলাঙ্কি

কিছু কিছু লোকের সঙ্গে কাজ করতে গিয়েও মাঝপথে থেমে গিয়েছেন শ্রীনন্দা। কারণ, তাদের সঙ্গে মানসিকভাবে মেলেনি। তার ভাষায়—“মুম্বাই, কলকাতা বা সাউথ ইন্ডাস্ট্রি যেখানেই হোক না কেন, আমি ভালো মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। কেউ এমন চরিত্রে সুযোগ দেন, যেখানে প্রয়োজনে টাকাটা ভুলে গিয়ে শুধু পরিচালকের নাম দেখেই কাজটা করব।”

কিছুটা ইঙ্গিপূর্ণভাবে শ্রীনন্দা বলেন, “কাজের পাশাপাশি আমার সংসারও রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবশ্যই পেতে হবে, যার জন্য সংসারটা ইগনোর করার কথা ভাবব। অর্থাৎ মনে হবে সংসার ফেলে এই সিনেমাটা আমাকে করতেই হবে। এই বয়েসে একটু কফি খেতে যাবেন? কাজ দেবেন? এগুলো করতে পারব না। সবাই তো চেনেই আমাকে। কাজ দিতে হলে দেবেন।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব শ্রীনন্দা। অনেকে ভেবেছিলেন, এ মাধ্যমে কাজ করে টাকা আয় করে থাকেন। তাদের উদ্দেশে শ্রীনন্দা বলেন, “অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা এটাও আমার পেশা। এখান থেকে অনেক টাকা উপার্জন করা যায়। আমি নিজেও আগে বিষয়টা জানতাম না। পোস্ট করতে করতে বুঝেছি। আমি এখন মুম্বাইয়ে মায়ের সঙ্গে পুরোদমে নাচের স্কুল চালাচ্ছি। এখন মোট ছয়টা ব্রাঞ্চ এবং ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। সব মিলিয়ে ভালো আছি।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রলের শিকার হন শ্রীনন্দা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া হয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন আগে আমাকে একজন বলেছিলেন, ‘রিল মামনি’। আমি আর মা এটা শুনে হেসে গড়িয়ে পড়েছি। মাঝেমধ্যে এসব বেশ মজাও লাগে। তবে যে পরিমাণ ভালোবাসা পাচ্ছি, সেটা খুব মন থেকেই ভক্তরা দিচ্ছেন বলে আমার বিশ্বাস। আমি মনে করি, এটা আমার জীবনে আশীর্বাদ।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ