ঈদের লম্বা ছুটি শেষে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে ঢাকামুখী মানুষের ঢল নেমেছে। আজ শনিবার সকাল থেকে লঞ্চ এবং ফেরিঘাটে ভিড় পড়ে। বিশেষ করে কর্মজীবী মানুষ ছুটে চলেছে বেশি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দৌলতদিয়া লঞ্চ এবং ফেরিঘাট ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।

যাত্রী পারাপার নির্বিঘ্ন রাখতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ এবং আনসার বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।

মেহেরপুর থেকে আসা সাজ্জাদ হোসেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লঞ্চে নদী পাড়ি দিতে দৌলতদিয়া ঘাটে আসেন। তিনি গাজীপুরে ব্যবসা করেন। তিনি বলেন, ঈদের তিন দিন আগে স্ত্রী আর দুই সন্তান নিয়ে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি আসেন। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করে এখন ফিরে যাচ্ছেন নিজ কর্মস্থলে। আগামীকাল রোববার থেকে ব্যবসার কাজ শুরু করবেন। নির্বিঘ্ন যাত্রার জন্য সকাল সকাল বাড়ি থেকে গাজীপুরে রওয়ানা হয়েছেন। কিন্তু ঘাটে এসে তাঁকে ভিড়ের মধ্যে পড়তেই হলো।

লঞ্চে যাতে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা না হয় এ জন্য আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক হ্যান্ড মাইক দিয়ে যাত্রীদের সতর্ক করা হচ্ছে।

দৌলতদিয়া ঘাটে ঈদের বিশেষ দায়িত্ব নিয়ে কাজের তদারকি করছেন বিআইডব্লিউটিএ–এর সহকারী পরিচালক (বন্দর) মো.

ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঈদের লম্বা ছুটি শেষে কর্মজীবী মানুষ পুরোদমে ছুটছেন। বিশেষ করে আজ সকাল থেকে মানুষের চাপ পড়ছে ঘাটে। তাই ছোট-বড় ৩২টি লঞ্চের মধ্যে দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া নৌপথে বর্তমানে ২২টি লঞ্চ চলাচল করছে। প্রয়োজনে আরও লঞ্চ বাড়ানো হবে।

এদিকে যাত্রীদের নিরাপদে পারাপার নিশ্চিত করতে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন। গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশনমাস্টার মো. আবদুর রহমান বলেন, ঈদের আগে গত ২৭ মার্চ থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা আট সদস্যের একটি দল কাজ করে যাচ্ছেন।

এদিকে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটেও যানবাহনের পাশাপাশি যাত্রীদেরও চাপ দেখা গেছে। সকাল থেকেই ঘাট ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি ফেরিতে মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

ফরিদপুরের মধুখালী থেকে নিজে মোটরসাইকেল চালিয়ে মানিকগঞ্জ যাচ্ছিলেন শাকিল মোল্লা। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। শাকিল মোল্লা বলেন, ঈদের আগে স্ত্রী-সন্তানদের আগেই গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেন। ঈদ শেষে পরিবহনে গাদাগাদি করে যাওয়ার চেয়ে নিজের মোটরসাইকেল নিয়ে তিনি আজ একাই রওনা করেছেন। পরিবারের সদস্যদের পরে আসতে বলেছেন। প্রখর রৌদ আর গরমের মধ্যে যেতে কষ্ট হলেও জীবিকার প্রয়োজনে কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে তাঁকে।

বিআইডব্লিটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, ঈদে যানবাহন এবং যাত্রী পারাপারের সুবিদার্থে ছোট বড় ১৭টি ফেরি চলছে। যানবাহনের খুব চাপ না থাকায় ১৭টি ফেরিই যথেষ্ট বলে তিনি মনে করেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ লতদ য় র সদস সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট

ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট। আজ শুক্রবার সকাল থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা—রাজবাড়ী, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ থেকে আসা কর্মজীবীরা বিভিন্ন যানবাহনে ঘাটে পৌঁছে লঞ্চে নদী পার হচ্ছেন। মাত্র তিন থেকে চার মিনিটে প্রতিটি লঞ্চ যাত্রী বোঝাই করে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে।

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থেকে আসা পোশাকশ্রমিক মো. সাব্বির হোসেন হাত ধরে নববধূর সঙ্গে লঞ্চে উঠছিলেন। তিনি জানান, ঢাকার হেমায়েতপুরের একটি পোশাক কারখানায় দুজনেই কাজ করেন। ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর এটাই তাঁদের একসঙ্গে কর্মস্থলে ফেরার প্রথম যাত্রা।

সাব্বির বলেন, বালিয়াকান্দি থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় রাজবাড়ী হয়ে দৌলতদিয়ায় এসেছেন। রাস্তায় তেমন ভোগান্তি না থাকলেও লঞ্চঘাটে এসে ভিড়ে পড়েছেন। শনিবার থেকে তাঁদের কারখানা খুলছে, তাই আজই রওনা হয়েছেন। ভিড়ের মধ্যে যাতে কেউ হারিয়ে না যায়, সে জন্য এক হাতে লাগেজ ও আরেক হাতে নববধূর হাত শক্ত করে ধরে রেখেছেন।

রাজবাড়ীর কালুখালী থেকে আসা আরেক পোশাকশ্রমিক মিম আক্তার বলেন, তিনি সাভারের একটি কারখানায় কাজ করেন। ছুটিতে বাড়ি এসে ঈদ করেছেন। শনিবার কারখানা খুলবে—জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভাগনেকে সঙ্গে নিয়ে আজই রওনা হয়েছি। দেরি করলে ঝামেলা হতে পারে।’

সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে সরেজমিনে দেখা যায়, কাঠের সেতু পেরিয়ে সারিবদ্ধভাবে যাত্রীরা পন্টুনে দাঁড়াচ্ছেন। টিকিটকর্মীরা সেতুতে উঠে টিকিট দিচ্ছেন। প্রতিটি লঞ্চ কয়েক মিনিটেই যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে। ঘাটে আনসার, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএর সদস্যদের সহায়তায় ভিড় সামলানো হচ্ছে।

দৌলতদিয়া নৌ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্য মাসুদ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার ভিড় কম ছিল, তবে আজ শুক্রবার সকাল থেকে চাপ বাড়ছে। শনিবার থেকে অফিস ও কারখানা খোলার কারণে অনেকে আজই ফিরছেন।

ঘাট ইজারাদারের প্রতিনিধি আবদুল আউয়াল জানান, বৃহস্পতিবার থেকে যাত্রী চলাচল শুরু হলেও আজ সকাল থেকে ঘাটে ভিড় বেড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে যাত্রীর সংখ্যা আরও বাড়ছে। এই চাপ শনিবার পর্যন্ত থাকতে পারে।

বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ের টার্মিনাল সুপারভাইজার মো. শিমুল হোসেন বলেন, যাত্রীদের নির্বিঘ্ন পারাপারের জন্য দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ২০টি লঞ্চের মধ্যে ১৮টি চলাচল করছে। অতিরিক্ত চাপ পড়লে বাকি দুটি লঞ্চও চালু করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যমুনা সেতুর যানজট এড়াতে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে যানবাহনের চাপ
  • দ্বিতীয় ট্রিপেই মেঘনায় ডুবল বালুবাহী বাল্কহেড
  • নৌযানের অভাবে নদী তীরে ঢাকামুখী যাত্রীদের অপেক্ষা
  • ভোলা লঞ্চঘাটে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়ে বৈধ নৌযান–সংকট, ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল মেঘনা পাড়ি
  • রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট