সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ চার দিনের রিমান্ডে
Published: 8th, April 2025 GMT
রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের করা আবদুল জব্বার হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।
আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আবদুল জব্বার হত্যাচেষ্টা মামলায় তুরিন আফরোজকে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে আবদুল জব্বার গুলিবিদ্ধ হন।
পিপি ওমর ফারুক ফারুকী আদালতে বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পক্ষে কথা বলতেন তুরিন আফরোজ। সুপ্রিম কোর্টের যে কয়েকজন আইনজীবী ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের অন্যতম তুরিন আফরোজ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে তাঁকে নিয়োগ দেন হাসিনা।
অপরদিকে আসামিপক্ষ থেকে তুরিন আফরোজকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করে তাঁর জামিনের আবেদন করা হয়।
শুনানিতে তুরিন আফরোজ আদালতে বলেন, যে মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, সেই ঘটনা গত বছরের ৪ আগস্টের। এই ঘটনার আরও আগে থেকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। রাষ্ট্রপক্ষ বলছেন, তিনি ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী। কিন্তু তাঁকে তো ৬ বছর আগে প্রসিকিউটর পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি যে কার লোক, তা তিনি নিজেই জানেন না।
উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত তুরিন আফরোজের চার দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর উত্তরার পশ্চিম থানা এলাকার বাসা থেকে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলাকালে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রসিকিউটরের দায়িত্বে ছিলেন তুরিন আফরোজ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র ন আফর জ অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।