প্রতি মাসে চীনা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা
Published: 8th, April 2025 GMT
চীনা বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সমস্যা জানতে ও তার দ্রুত সমাধানে প্রতি মাসের ১০ তারিখ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ২৬ সদস্যের চীনা বিনিয়োগকারীদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।
২০২৫ সালে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চীন-বাংলাদেশ অংশীদারত্ব প্ল্যাটফর্মের এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বৈঠকে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন মেইনল্যান্ড হেডওয়্যার হোল্ডিংস লিমিটেডের ডেপুটি চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর পলিন নান। এ সময় অধ্যাপক ইউনূস প্রত্যেকের মতামত শোনেন। চীনা প্রকল্প ও বাংলাদেশে কর্মরত চীনা কোম্পানিগুলোর খোঁজ-খবর নেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘‘এদেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতির জটিলতার সমাধান করে এখন বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালা ও অবকাঠামোর জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো নিরলসভাবে কাজ করছে।’’ বর্তমান বিনিয়োগকারীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগে অন্যদের আহ্বান জানাতে বলেন তিনি।
চীন ও বাংলাদেশ অংশীদারত্ব এই প্ল্যাটফর্মের লক্ষ্য হলো, কৌশলগত অংশীদারত্বকে আরো জোরদার করা এবং জনগণের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বিনিময়কে উৎসাহিত করা। অর্থনীতি, সংস্কৃতি, শিক্ষা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার মাধ্যমে এই প্ল্যাটফর্ম উভয় দেশের পারস্পরিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করতে চায়।
চীন ও বাংলাদেশের ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করে এই উদ্যোগটি সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে এবং উভয় জাতির কল্যাণে দীর্ঘস্থায়ী ও অর্থবহ সহযোগিতা গড়ে তুলতে কাজ করে যাবে।
এ সময় বাংলাদেশে চীনা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, বিনিয়োগকারী, বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার তথ্য সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।