গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রতিবাদী কর্মসূচি চলাকালে হামলার শিকার হয়েছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। আহত সানি সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের উদ্যোগে গঠিত গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কর্মী।

হামলায় মাথার পেছনে, পিঠে ও বাঁ কাঁধে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন বলে আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে জানিয়েছেন সানি সরকার। গতকাল হামলার শিকার হওয়ার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। এ ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন তিনি।

লিখিত অভিযোগে গতকালের পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন সানি সরকার। তিনি লিখেছেন, ‘সকাল থেকেই ফিলিস্তিনের প্রোগ্রাম নিয়ে ব্যস্ততা ছিল। বিভিন্ন ভাইকে ফোন দিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছিল—কীভাবে কী করা যায় আজকের প্রোগ্রাম নিয়ে। বেলা ১১টার পর থেকেই ভাইদের সঙ্গে বটতলায় বসা হয়, এরপর মলে (মল চত্বর) গিয়ে প্রোগ্রামের পরিকল্পনা শুরু করি। পরে টিএসসিতে গিয়ে বেলা একটার দিকে ফিলিস্তিনের পতাকা আনতে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি, সিটি কলেজ ও অন্যান্য কলেজের ছাত্ররা সম্ভবত ফিলিস্তিন ইস্যুতে প্রোগ্রাম করছে। সেখানে গিয়ে দেখি, নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীরের পতাকা ব্যবহৃত হচ্ছে।’

সানি সরকার লিখেছেন, ‘আমি তাদের দু–একজনকে বুঝিয়ে বলি—ভাই, আপনারা একটি ভালো প্রোগ্রাম করছেন, এটিকে আমরা পরে চালিয়ে নেব। আমিও একজন মুসলমান, তবে অনুরোধ করব এই নিষিদ্ধ পতাকাটি নামিয়ে ফেলুন। রাজু ভাস্কর্যের সামনে যেকোনো আন্দোলন বা প্রোগ্রাম অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। এসবের ছবি বা ভিডিও যদি আন্তর্জাতিকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, তবে তা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। তাই আপনারা এই পতাকাটি বাদ দিয়ে প্রোগ্রাম চালান।

‘আমার অনুরোধের পর দু–একজন পতাকা নামিয়ে পকেটে রেখে দেন। এরপর কাদের ভাই, খালেদ ভাই ও তানভীর ভাইয়েরাও বাকিদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু কিছু (নিষিদ্ধ সংগঠন) হিযবুত তাহ্‌রীরপন্থী বিষয়টি বুঝতেই চায়নি। তারা আমাদেরকে “ইসলামবিদ্বেষী” আখ্যা দিয়ে মারতে আসে। আমি তখন বলি, ভাই, আপনারা একটি ভালো প্রোগ্রামে এসেছেন, এখন আমাদের ক্যাম্পাসে মারামারি করবেন? আমি তখন দু–একজনকে পেছনে পাঠিয়ে দিই, ফলে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যাচ্ছিল।’

এর মধ্যে জিয়াউর রহমান হলের এক শিক্ষার্থী তাঁদের উসকে দেন উল্লেখ করে সানি সরকার লিখেছেন, ‘ফলে তারা আরেকবার মব তৈরি করে। এরপর প্রায় ৫০-৬০ জন মিলে আমার দিকে মারমুখী হয়ে আসে। অথচ আমি কেবল তাদের বোঝাতে চাচ্ছিলাম—আপনারা জানতেই পারছেন না যে আসলে কী করছেন। আমি তখন কোনোভাবে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করি, কিন্তু সম্ভব হয়নি। ভিড়ের মধ্যে আমাকে ইচ্ছেমতো মারধর করা হয়। অথচ যারা মারল, তারা আদৌ বুঝেছে কি কেন মারছে বা কাকে মারছে? আর আমাকে “ইসলামবিদ্বেষী” ট্যাগ লাগিয়ে দিল! আমি তাদের শুধু একটাই কথা বলব—আমার স্টোরির আর্কাইভগুলো দেখুন বা আমার ব্যাকগ্রাউন্ড খুঁজে দেখুন, প্রমাণের অভাব হবে না।’

এ প্রসঙ্গে সানি সরকার আরও লিখেছেন, ‘কিন্তু আবেগপ্রবণ লোকদের কে বোঝাবে এসব কথা? সব ইসলাম মানেই নবীর প্রকৃত ইসলাম নয়। ইসলামের মধ্যেও কত ভণ্ড পীর ও বিভক্তি আছে, তা এদের কে বোঝাবে? (নিষিদ্ধ সংগঠন) হিযবুত তাহ্‌রীর আর তথাকথিত “তৌহিদি জনতা”—তাদের মধ্যে পার্থক্য কে বোঝাবে? দিন শেষে ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে আজ নিজের দেশের ভাইয়ের হাতে মার খেতে হলো। আর কিছুক্ষণ থাকলে হয়তো বেঁচে থাকতাম কি না সন্দেহ। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া যে এখনো বেঁচে আছি।’

ওই ঘটনার সূত্র ধরে তাঁর ওপর তিন দফায় আক্রমণ করা হয় উল্লেখ করে সানি সরকার লিখেছেন, ‘এমনকি রিকশায় তুলে দেওয়ার সময়ও আক্রমণ অব্যাহত ছিল। এ সময়কাল প্রায় ২০-২৫ মিনিট। তবু প্রশ্ন থেকে যায়—প্রক্টরিয়াল বডি এত সময়েও মব আটকাতে আসেনি কেন? এমনকি পরে এসেও কোনো ধরনের বাধা দেয়নি কেন?’

স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি নিষিদ্ধ সংগঠন কীভাবে প্রোগ্রাম করতে পারে, সেই প্রশ্ন তুলে সানি সরকার লিখেছেন, ‘যেখানে বহিরাগতদের কোনো কর্মসূচি করার অধিকার নেই, সেখানে আমরা এতটাই অনিরাপদ হয়ে পড়েছি যে বাইরের কেউ এসে প্রোগ্রাম বা তাদের প্রোপাগান্ডা চালিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়? এর বিরুদ্ধে বাধা দিলে আমাদেরকেই এ ধরনের হামলার শিকার হতে হয়? এ বিষয়ে কি প্রশাসনের কোনো দায়বদ্ধতা নেই?’

এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে যারা ‘মব’ উসকে দিয়েছে, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সানি সরকার।

সানি সরকারের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীরের কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধের দাবিতে আগামীকাল বুধবার বেলা ১১টায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধনের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বিবৃতি

গতকালের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে আজ একটি বিবৃতি দিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। গতকালের কর্মসূচিগুলোতে বিভিন্ন সময় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের পতাকা উড়তে দেখা গেছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে তারা।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গতকাল নানা রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে। কিন্তু গতকালের কর্মসূচিগুলোতে বিভিন্ন সময় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের পতাকা উড়তে দেখা গেছে। এর আগেও ফিলিস্তিনের পক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে এ ধরনের পতাকা উত্তোলন আন্দোলনের ভাবমূর্তিকে আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল।’

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ বলেছে, এ ধরনের পতাকা ব্যবহার না করার অনুরোধ জানালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সানি সরকারের ওপর বর্বর হামলা চালানো হয়। ঘটনাস্থলে (নিষিদ্ধ সংগঠন) হিযবুত তাহ্‌রীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বিগত সময়ে গ্রেপ্তার হওয়া কয়েকজনকে প্রত্যক্ষ করা গেছে, যাঁরা ‘নাস্তিক’ ট্যাগ দিয়ে বহিরাগত ‘মব’ দিয়ে সানির ওপর তিন দফায় ২০ থেকে ৩০ মিনিট ধরে শারীরিক নির্যাতন চালান। তাঁকে রক্ষা করতে গিয়ে আহত হয়েছেন আরও একাধিক শিক্ষার্থী।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ঘটনার পরপরই প্রক্টরিয়াল টিমকে জানানো হলেও তারা দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেয় এবং আহত শিক্ষার্থীকে উদ্ধারে কোনো কার্যকর ভূমিকা নেয়নি। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা মনে করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের উপস্থিতি ও কার্যক্রম প্রতিহত করতে দেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষার্থী হামলায় উসকানি দিয়েছেন এবং অংশ নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ স গঠন সরক র ল খ ছ ন গতক ল র আম দ র র ওপর ধরন র আপন র ইসল ম ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হই হই অবস্থা, প্রস্তুতি না নেওয়া আত্মঘাতী

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশেরও প্রস্তুতি নিয়ে রাখা দরকার বলে মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘এমন বিশ্বে আমরা বাস করি, প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি আমাদের ঘিরে থাকে। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হই হই অবস্থার মধ্যে রয়ে গেছে। সকালের খবরে দেখলাম, হয়তো গুজব, যে আজকেই শুরু হয়ে যাবে যুদ্ধ। প্রস্তুতি না নেওয়াটা আত্মঘাতী। আধাআধি প্রস্তুতির কোনো জায়গা নাই।’

গতকাল বুধবার রাজধানীর বীরউত্তম এ কে খন্দকার ঘাঁটিতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণ অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা। খবর বিবিসি বাংলা ও বাসসের।

নিজেকে ‘যুদ্ধবিরোধী মানুষ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে যুদ্ধ হোক– এটা আমরা কামনা করি না।’ যুদ্ধের প্রস্তুতি অনেক সময় যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়– এ রকম ধারণার বিষয়ে ঘোরতর আপত্তির কথা জানান ড. ইউনূস।

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার প্রতি যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত আধুনিক বিমানবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

দেশপ্রেম ও পেশাদারিত্ব আগামী দিনের নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার মূল ভিত্তি উল্লেখ করে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বিমানবাহিনীর সব সদস্যের প্রতি যুগোপযোগী ক্ষমতা ও দক্ষতা অর্জন এবং পেশাগত ও কারিগরি সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রতি অব্যাহত মনোযোগ বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আমরা একটা নিরাপদ, উন্নত ও শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’

তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ার, রাডার সংযোজনের জন্য বিমানবাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবে সরকার।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বের দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের গুরুত্ব অপরিসীম। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সদস্যরা নিয়মিতভাবে বহুমাত্রিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ও অনুশীলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জ্ঞান-দক্ষতাকে যুগোপযোগী করতে সদা সচেষ্ট রয়েছেন।’

তিনি দেশের বিমানবন্দরগুলোর সুষ্ঠু পরিচালনা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত বিমানবাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।

মহড়া কেবল একটি সাময়িক অনুশীলনই নয় উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এটি আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিমানবাহিনীর পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার পরিচয় বহন করে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনী সময়োপযোগী পরিকল্পনা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং কার্যকর আকাশ প্রতিরক্ষার পাশাপাশি বিস্তীর্ণ সমুদ্র এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। 

এর আগে বিমানঘাঁটিতে এসে পৌঁছলে প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান। অনুষ্ঠানস্থলে বিমানবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল তাঁকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর বিতরণ প্রধান উপদেষ্টার

গত বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পে নির্মিত ঘর বিতরণ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। গতকাল সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি গত বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি জেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে এসব ঘর বিতরণ করেন।

ওই বন্যায় অনেক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম। অসংখ্য বাড়িঘর সম্পূর্ণরূপে ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নির্মাণের সামর্থ্য নেই, এ রকম তিনশ পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ঘর পুনর্নির্মাণ করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ফেনীতে ১১০টি, নোয়াখালীতে ৯০টি, কুমিল্লায় ৭০টি ও চট্টগ্রামে ৩০টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। দুটি কক্ষ, কমন স্পেস, শৌচাগার, রান্নাঘরসহ বারান্দা রয়েছে। ৪৯২ বর্গফুট আয়তনের ঘরে ৭ লাখ ২৫ হাজার ৬৯৪ টাকা এবং ৫০০ বর্গফুটের ঘরে প্রাক্কলিত ব্যয় ৭ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৮ টাকা বরাদ্দ করা হয়। সেনাবাহিনী ঘরগুলো নির্মাণ করেছে।

অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান বক্তব্য দেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত করার নির্দেশ

চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত ও বিশ্বমানের সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এ নির্দেশ দেন তিনি। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক হয়।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বন্দর ব্যবস্থাপনায় এমন অপারেটরদের সম্পৃক্ত করতে হবে, যাতে এগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা অর্জন করতে পারে।

বৈঠকে বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, ‘দেশের নৌবন্দরগুলোর বর্তমান হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি বছরে ১ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন ইউনিট, যা সঠিক পরিকল্পনা ও কর্মপন্থার মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরে ৭ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন ইউনিটে উন্নীত করা সম্ভব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ