প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্যকে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান। খবর বাসসের। বৈঠকে উভয় পক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

ব্যারোনেস উইন্টারটন বলেন, আমাদের মধ্যে দীর্ঘ ও বিশ্বাসযোগ্য সম্পর্ক রয়েছে এবং সংস্কারের যে ধারা দেখা যাচ্ছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট।

ড.

ইউনূস বলেন, এটি আমাদের জন্য একটি রূপান্তরমূলক সময়। আমরা প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন এবং অগ্রাধিকার পুননির্ধারণে মনোনিবেশ করছি।

বাংলাদেশে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর ঘাটতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের বর্তমানে নার্সের সংকট রয়েছে। তবে নার্সিং শুধু জাতীয় সমস্যা নয়—এটি একটি বৈশ্বিক প্রয়োজন। আমরা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্য আরও নার্স প্রশিক্ষণ দিতে চাই।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের পর্যাপ্ত সম্পদ না থাকা স্বাস্থ্যখাত শক্তিশালী করতে যুক্তরাজ্যের সহায়তার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্য কার্যক্রম প্রায় অকার্যকর। এখানে যুক্তরাজ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আরেকটি সম্ভাবনাময় খাত হলো ওষুধশিল্প। আমরা অনুরোধ করছি, পেটেন্ট সুরক্ষা তুলে নেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিন যাতে প্রতিটি দেশ সাশ্রয়ীভাবে সামাজিক ব্যবসা মডেলে টিকা উৎপাদন করতে পারে।

উভয় পক্ষ শিক্ষা, টেক্সটাইল শিল্প, প্রতিরক্ষা এবং বিমান চলাচলসহ কৌশলগত সহযোগিতার আরও বিস্তৃত ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেন।

ড. ইউনূস বলেন, আমরা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, টেক্সটাইল খাত আধুনিকীকরণ এবং প্রতিরক্ষা ও বিমান চলাচলে নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্র অনুসন্ধানে যুক্তরাজ্যের সহায়তাকে স্বাগত জানাই।

উভয় নেতা এই খাতে প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি বিনিময় এবং দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

জেন্ডার সমতার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা সব খাতে নারীর অংশগ্রহণকে অগ্রাধিকার দেই। নারীর ক্ষমতায়ন আমাদের উন্নয়ন কৌশলের কেন্দ্রে রয়েছে।

ব্যারোনেস উইন্টারটন বর্তমান সংস্কার এজেন্ডার প্রতি যুক্তরাজ্য সরকারের সমর্থন জানান। তিনি বাংলাদেশের সাংবিধানিক সংস্কার কর্মসূচির প্রধান আলী রিয়াজের সঙ্গেও বৈঠক করেন।

পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো স্বল্প সংস্কার প্রক্রিয়ায় একমত হয়, তবে ডিসেম্বরেই নির্বাচন হতে পারে। তবে যদি বৃহত্তর সংস্কার পথ বেছে নেওয়া হয়, তাহলে নির্বাচন জুনে অনুষ্ঠিত হতে পারে।

বৈঠকে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড ইউন স সহয গ ত আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটারজুটে যানজট

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমশার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান উল্টে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এ যানজট দেখা দেয়। 

হাইওয়ে পুলিশ  জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ফেনী থেকে রেকার এনে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ। 

সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে। 

ঢাকাগামী রয়েল পরিবহনের চালক রমিজ উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করে বুড়িচংয়ের নিমশার বাজারে যানজটে এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। ৫ মিনিট গাড়ি চললে ২০ মিনিট বসে থাকতে হয়। এভাবে ১০টা ৪০ মিনিটে চান্দিনায় পৌঁছেছি। এ সময়ে ঢাকার কাছাকাছি থাকার কথা ছিল। 

নিমশার বাজারে আটকে থাকা প্রাইভেট কারের যাত্রী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে যানজট অথচ সড়কে হাইওয়ে পুলিশ দেখছি না। 

ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন বলেন, মহাসড়কের নূরীতলা এলাকায় উল্টে কাভার্ড ভ্যানটি আড়াআড়িভাবে পড়ে ছিল। পরে ঢাকামুখী লেনের বেশ কিছু গাড়ি উল্টো পথে ঢোকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফেনী থেকে ক্রেন এনে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। 

হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণেই যানজট দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ