বাংলাদেশের মঙ্গল ভারত যতটা কামনা করে, আর কোনো দেশ ততটা করে না। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে এ মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই মঙ্গল কামনা ভারতের ডিএনএতে রয়েছে। তাই এত খোলামেলা আমরা আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারি।’

ভারতীয় গণমাধ্যম সিএনএন নিউজ১৮ আয়োজিত ‘উত্থিত ভারত’ সম্মেলনে অংশ নিয়ে গতকাল বুধবার এ মন্তব্য করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। দুই প্রতিবেশী দেশের অনন্য ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত আশা করে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের পর সেখানকার পরিস্থিতি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর বলেন, ‘দুই দেশের মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কটাই মুখ্য। ওটাই সম্পর্কের মৌলিক আধার। এই অনন্য সম্পর্ক অন্য কোনো দেশের সঙ্গে নেই। এই সত্য আমাদের স্বীকার করতে হবে। দুই নেতার বৈঠকে ওই বার্তাই ছিল প্রধান।’

ব্যাংককে মোদি–ইউনূস বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে মোটামুটি চারটি বার্তা দেওয়া হয়। উত্তেজক মন্তব্য পরিহার, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা–সম্পর্কিত উদ্বেগ, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল বাংলাদেশকে সমর্থন এবং গঠনমূলক আলোচনা।

অন্যদিকে বৈঠকে মোদির কাছে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ প্রসঙ্গ তুলেছেন অধ্যাপক ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছিলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট যতগুলো ইস্যু আছে, তার সব কটি নিয়ে কথা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব কটি বিষয় আলোচনায় তুলেছেন। আলোচনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ, ভারতে বসে তিনি যেসব উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন, সে প্রসঙ্গ; সীমান্ত হত্যা বন্ধ, গঙ্গার পানি চুক্তির নবায়ন এবং তিস্তা চুক্তির প্রসঙ্গ এসেছে।’

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন, বাংলাদেশের কোনো কোনো মহল থেকে উত্তেজক মন্তব্য করা হচ্ছে। এতে ভারত উদ্বিগ্ন। মৌলবাদী প্রবণতাও উদ্বেগের আরেকটি বিষয়। সংখ্যালঘুদের প্রতি আক্রমণও চিন্তার বিষয়। এসব উদ্বেগ প্রকাশের ক্ষেত্রে ভারত খুবই খোলামেলা।

পরিস্থিতি সম্পর্কে উদ্বেগের ওপর জোর দিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, ‘বাংলাদেশের মঙ্গল ভারতের চেয়ে বেশি আর কেউ চায় না। এটা আমাদের ডিএনএর অঙ্গ। একজন হিতাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধু হিসেবে আমরা চাই, দেশটা ঠিক কাজ করুক, ঠিক দিকে এগিয়ে যাক।’

বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর বলেন, ‘আশা করি, নির্বাচন শিগগিরই অনুষ্ঠিত হবে। দেশ হিসেবে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য আছে। আর গণতন্ত্রে নির্বাচন জরুরি। নির্বাচনই অধিকার অর্পণ করে। আশা করি, বাংলাদেশও সেই পথেই এগোবে।’

বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক বার্তায় ‘শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক, গণতান্ত্রিক’ বাংলাদেশকে ভারতের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স থ ত প রসঙ গ র বল ন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

শূন্যের দুনিয়ায় পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ওপরে কেউ নেই

পাকিস্তান দলে সাইম আইয়ুবের ভূমিকাটা কী? এটা নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্ত হতে পারেন। কারণ, এই ওপেনার এশিয়া কাপে তিন ম্যাচ খেলে এখনো রানের দেখা পাননি। টানা তিন ম্যাচেই আউট হয়েছেন শূন্য রানে। অথচ এই সাইমই বল হাতে নিয়েছেন ৬ উইকেট—পাকিস্তান দলে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি!

পাকিস্তান দলের কোনো ক্রিকেটারের টানা তিন ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। পাকিস্তানের আরেক টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান আবদুল্লাহ শফিক আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে টানা চারবার শূন্য রানে আউট হয়েছেন।

সাবেক অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজও একবার টানা তিন শূন্যের তিতা স্বাদ পেয়েছেন। সেটি সাইমের মতোই ওপেনিংয়ে নেমে। এ দুজন ছাড়া আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে ফ্লেচার ওপেনার হিসেবে টানা তিন ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়েছেন।

চলতি বছর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সাইম শূন্য রানে আউট হয়েছেন পাঁচবার। চলতি বছর যা যৌথভাবে সর্বোচ্চ এবং এই তালিকায় পাকিস্তান ওপেনারকে সঙ্গ দিচ্ছেন আরেক পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান—হাসান নেওয়াজ। তিনিও চলতি বছর পাঁচবার শূন্য রানে আউট হয়েছেন। হাসান (২২) যদিও সাইমের (১৭) চেয়ে ৫ ইনিংস বেশি খেলেছেন।

৫চলতি বছরে পাঁচবার শূন্যতে আউট হয়েছেন সাইম।

সাইম সব মিলিয়ে পাকিস্তানের হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে আটবার শূন্য রানে আউট হয়েছেন, যা যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ ১০বার পাকিস্তানের হয়ে শূন্য রানে আউট হয়েছেন উমর আকমল। আটবার শূন্য রানে আউট হয়ে সাইমের পাশে শহীদ আফ্রিদি। তবে আফ্রিদি খেলেছেন ৯০ ইনিংস, সাইম ৪৪।

আরও পড়ুনপাকিস্তানি খেলোয়াড়ের থ্রো লাগল আম্পায়ারের মাথায়, এরপর যা হলো২ ঘণ্টা আগে

আইসিসির পূর্ণ সদস্যদেশগুলোর মধ্যে ২০২৫ সালে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি শূন্য রানে আউট হয়েছেন পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। ২১ বার শূন্য রানে আউট হয়েছেন তাঁরা। পাকিস্তানের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানেরা ১১ বার শূন্য রানে আউট হয়েছেন। চলতি বছর বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ চারবার শূন্য রানে আউট হয়েছেন ওপেনার পারভেজ হোসেন।

পারভেজ হোসেন চলতি বছর চারবার শূন্যতে আউট হয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ