ভারতে ঝড়-বজ্র ও ভারী বৃষ্টিতে ৮১ জনের মৃত্যু
Published: 11th, April 2025 GMT
ভারতে ভারী বৃষ্টিসহ ঝড়ের তাণ্ডব ও বজ্রপাতে বিহার, উত্তর প্রদেশে এবং পশ্চিমবঙ্গে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে; সেই সঙ্গে ঘরবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
গত ৪৮ ঘণ্টায় বিহারে অন্তত ৫৮, উত্তরপ্রদেশে ২২ এবং পশ্চিমবঙ্গে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বিহার ও উত্তর প্রদেশে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করছে রাজ্য দুটির প্রশাসন।
বিহারের রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নালন্দা জেলাতেই অন্তত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভোজপুরে পাঁচজন এবং গয়া জেলায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া পটনা, গোপালগঞ্জ, মুঙ্গের, সমস্তীপুর, জেহানাবাদ, মুজাফফরপুর, আরারিয়া ও বেগুসরাইয়ে মৃত্যুর খবর রয়েছে।
বজ্রপাতে নিহতদের পরিবারকে ৪ লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা বলেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার।
বিহারের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়েছে। বিহার প্রশাসন বলছে, শুক্রবার (১১ এপ্রিল) পর্যন্ত বিহারের বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এই কারণে নালন্দা, মধুবনী, পূর্ব এবং পশ্চিম চম্পারণসহ বিভিন্ন জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে ।এর আগে বুধবার বিহারের চারটি জেলায় বজ্রপাতে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
সরকারি কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিহারে এর আগে বজ্রাপাতে এত মানুষের মৃত্যুর নজির নেই। গোটা রাজ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস বিহার রাজ্যের মানুষকে খোলা আকাশের নিচে না থাকার পরামর্শ দিয়েছে। বজ্রপাতের সময় সবাইকে প্রশাসনের দেওয়া সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নিতিশ কুমার।
অন্যদিকে বিহারের প্রতিবেশী রাজ্য উত্তর প্রদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় বজ্র-বৃষ্টিতে কমপক্ষে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ত্রাণ কমিশনারের কার্যালয়ের তথ্য অনুসারে, প্রবল বাতাসের কারণে দেওয়াল অথবা ছাদ ধসে এবং বজ্রপাতে ১৩ জন মারা গেছেন। অনেকে আহত হয়েছেন।
বৃষ্টিজনিত অন্যান্য কারণে কানপুর, দেহাত, ফতেহপুর, ফিরোজাবাদ, কনৌজ, সন্ত কবির নগর, সীতাপুর, সিদ্ধার্থনগর, আজমগড়, আমেঠি, বারাবাঁকি ও বালিয়াসহ রাজ্যের ৩৬টি জেলার মধ্যে ১১টিতেই হতাহতের খবর রয়েছে।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মৃতদের পরিবারকে ৪ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ভারী বৃষ্টিপাত এবং বজ্রপাতের কারণে জীবন ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য একটি সমীক্ষা পরিচালনা করার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গে বজ্রপাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের এক জওয়ান মারা গেছেন। ভারত-বাংলাদেশের শিলিগুড়ি ফাঁসিদেওয়া সীমান্তের কাছে কর্তব্যরত অবস্থায় মারা যান তিনি।
ঢাকা/সুচরিতা/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জন র ম ত য
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।